এয়ার সার্বিয়া (Air Serbia) সার্বিয়ার জাতীয় বিমান পরিবহন সংস্থা এবং এটি দেশটির সবচেয়ে বড় এবং প্রধান বিমান সংস্থা হিসেবে পরিচিত। ২০১৩ সালে এয়ার সার্বিয়া তার যাত্রা শুরু করে এবং বর্তমান সময়ে এটি ইউরোপ, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, এবং আফ্রিকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে বিমান পরিষেবা প্রদান করছে। এয়ার সার্বিয়া প্রধানত বেলগ্রেড নিকোলা টেসলা এয়ারপোর্ট থেকে উড্ডয়ন করে এবং বিশ্বের বিভিন্ন শহরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে।
এয়ার সার্বিয়া একটি শক্তিশালী ও আধুনিক বিমান সংস্থা হিসেবে পরিচিত, যা সার্বিয়ার অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক আকাশপথে যাত্রী পরিবহন সেবা প্রদান করে। এর শিরোনাম ইতিহাস, মানসম্পন্ন সেবা, আধুনিক বিমানবহর এবং বিশ্বব্যাপী সংযোগের কারণে এটি সার্বিয়ার একটি গর্বিত প্রতিষ্ঠান।
এয়ার সার্বিয়ার জন্ম ২০১৩ সালে হয়, যখন সার্বিয়া সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয় এবং এয়ার সার্বিয়ার সাবেক বিমান সংস্থা “Yugoslav Airlines” এর উত্তরসূরি হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয়। এটি প্রথমে “Air Serbia” নামে পরিচিত ছিল, যখন তার মালিকানা পরিবর্তিত হয়। এই সংস্থা প্রথমে এয়ার সার্বিয়া নামে আত্মপ্রকাশ করলেও, এটি আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা হিসেবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসে।
এয়ার সার্বিয়া এয়ার লিবানন এবং এতিহাদ এয়ারওয়েজ এর সাথে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে, যার ফলে এটি আরো আন্তর্জাতিক গন্তব্যে সেবা প্রদান শুরু করেছে।
এয়ার সার্বিয়ার প্রধান বিমানবন্দর হচ্ছে বেলগ্রেড নিকোলা টেসলা এয়ারপোর্ট (Belgrade Nikola Tesla Airport)। এটি সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড শহরের কেন্দ্র থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই বিমানবন্দরটি সার্বিয়ার সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর এবং এয়ার সার্বিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উড্ডয়ন ও অবতরণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
এয়ার সার্বিয়া বেশ আধুনিক বিমানবহর ব্যবহার করে, যেখানে এয়ারবাস A319, এয়ারবাস A320, এবং এয়ারবাস A330 মডেলের বিমান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই বিমানগুলো মূলত সংক্ষিপ্ত এবং দীর্ঘ রুটে ব্যবহৃত হয়। এয়ার সার্বিয়ার বিমানবহরের অধিকাংশ বিমানই আধুনিক, যা যাত্রীদের নিরাপত্তা ও আরামদায়ক যাত্রার নিশ্চয়তা প্রদান করে।
এয়ার সার্বিয়া বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করেছে। এর মধ্যে ইউরোপের অনেক বড় শহর যেমন লন্ডন, প্যারিস, মস্কো, প্রাগ, ফ্রাঙ্কফুর্ট, রোম, মাদ্রিদ, বুদাপেস্ট সহ আরও অনেক শহরে সরাসরি ফ্লাইট সেবা প্রদান করছে। এছাড়া, দুবাই, বেইজিং, এথেন্স, দোহা, এবং ইস্তাম্বুল এর মতো গুরুত্বপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার শহরের সঙ্গে এয়ার সার্বিয়া সংযোগ স্থাপন করেছে।
এয়ার সার্বিয়া, এতিহাদ এয়ারওয়েজ এর সাথে একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি করেছে, যার ফলে তাদের মধ্য দিয়ে আরও নতুন গন্তব্যে ফ্লাইট চালানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
এয়ার সার্বিয়া আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন ক্ষেত্রে আধুনিক সেবা প্রদান করে। এই বিমান সংস্থার সেবার মধ্যে যাত্রীদের জন্য রয়েছে:
বিশ্রামাগার: আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য বিশেষ বিজনেস ক্লাস লাউঞ্জের সুবিধা।
ইন্টারনেট সেবা: বেশ কিছু বিমানে ফ্রি Wi-Fi সেবা দেওয়া হয়।
খাদ্য ও পানীয়: দীর্ঘ পথের যাত্রার সময়, যাত্রীদের জন্য সুস্বাদু খাবার এবং পানীয় পরিবেশন করা হয়।
নিরাপত্তা: এয়ার সার্বিয়ার বিমানে উচ্চ মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যবস্থা রয়েছে, যা যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
এয়ার সার্বিয়া প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার যাত্রী পরিবহন করে। এটি সঠিক সময়ে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বেশ পরিচিত এবং যাত্রীদের সময় সাশ্রয়ের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
এয়ার সার্বিয়া বেশ কিছু আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থার সঙ্গে কোড-শেয়ারিং চুক্তি করেছে, যার মধ্যে এতিহাদ এয়ারওয়েজ, এয়ার লিবানন, এবং কাতার এয়ারওয়েজ অন্যতম। কোড-শেয়ারিং চুক্তির মাধ্যমে, যাত্রীরা অন্যান্য বিমান সংস্থার সাথে একত্রে ভ্রমণ করতে পারে এবং একাধিক গন্তব্যে সহজে পৌঁছাতে পারে।
এয়ার সার্বিয়া শুধুমাত্র সাধারণ যাত্রীদের জন্য নয়, বরং ব্যবসায়ী যাত্রীদের জন্যও বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। এর মধ্যে রয়েছে:
বিজনেস ক্লাস পরিষেবা: বিশেষ খাবার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ সিট।
ফার্স্ট ক্লাস পরিষেবা: অত্যাধুনিক সুবিধা এবং প্রাইভেট লাউঞ্জ ব্যবহার।
এয়ার সার্বিয়া সার্বিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিমান সংস্থা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। এটি একটি আধুনিক, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী বিমান পরিবহন ব্যবস্থা প্রদান করে, যা সার্বিয়ার মধ্যে এবং আন্তর্জাতিক আকাশপথে যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করে। এয়ার সার্বিয়া যাত্রীদের সুবিধা, সেবা, এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং এটি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা হিসেবে প্রতিদিন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।