হেলিকপ্টার ব্যবসার পাশাপাশি যাত্রীবাহী ও কার্গো এয়ারলাইন্স আনার পরিকল্পনা করেছে এমজিএইচ গ্রুপ। এয়ারলাইন্সের নাম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ফ্লাই ফ্যালকন’। অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সঙ্গে বৈঠক করেছে এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, এয়ার ফ্যালকন বাংলাদেশ লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি যৌথভাবে গঠন করেছে বাংলাদেশের লজিস্টিক কোম্পানি এমজিএইচ গ্রুপ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস কোম্পানি (এফজেডই)। তারা ‘ফ্লাই ফ্যালকন’ নামে যাত্রী ও কার্গো উভয় ধরনের ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। এয়ারলাইন্সটির ৫১ শতাংশ মালিকানা থাকছে বাংলাদেশের এমজিএইচ গ্রুপের হাতে এবং বাকি ৪৯ শতাংশ বিনিয়োগ করছে এফজেডই। প্রতিষ্ঠানটি আরব আমিরাতের শারজাহের সুলতানের মালিকানাধীন। আমিরাতভিত্তিক এয়ার অ্যারাবিয়া এই গ্রুপের প্রতিষ্ঠান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেবিচকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফ্লাই ফ্যালকনের পক্ষ থেকে বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড রেগুলেশন্স বিভাগে এ বিষয়ে একটি ‘লেটার অব ইন্টেন্ট’ (এলওআই) জমা দেয়। এরপর আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ফ্লাই ফ্যালকনের প্রতিনিধিরা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) সঙ্গে একটি প্রাক-আবেদন বৈঠক সম্পন্ন করেন। বৈঠকে অংশ নেন এমজিএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আনিস আহমেদ। তিনি ফ্লাই ফ্যালকনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া, উপস্থিত ছিলেন বিদেশি অংশীদার এফজেডই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদেল আবদুল্লা মোহাম্মদ আলি।
তিনি আরও জানান, ফ্লাই ফ্যালকন এখন প্রাথমিক ধাপে রয়েছে। প্রি-অ্যাপ্লিকেশন মিটিংয়ের পর তারা সিএএবির পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ধাপে আনুষ্ঠানিক আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাশাপাশি তিনটি বেসরকারি এয়ারলাইন্স— নভোএয়ার, ইউএস-বাংলা এবং এয়ার অ্যাস্ট্রা— পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে এয়ার অ্যাস্ট্রা সর্বশেষ এয়ারলাইন্স হিসেবে ২০২২ সালে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। ফ্লাই ফ্যালকন যুক্ত হলে এটি হবে দেশের পরবর্তী সম্ভাব্য এয়ারলাইন্স, যা যাত্রী ও কার্গো উভয় রুটে নতুন প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে।
দেশের ১২তম বেসরকারি এয়ারলাইন্স হিসেবে অনুমোদন পেয়েও ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারেনি ফ্লাই ঢাকা। জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই এয়ারলাইন্সের মালিক।
সর্বশেষ ২০২৪ সালের নভেম্বরে যাত্রা শুরুর পরিকল্পনা থাকলেও আসেনি তারা। গত ২৫ বছরে অর্থ সংকটে অন্তত আটটি বেসরকারি এয়ারলাইন্স তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে কার্যক্রম গুটিয়ে নেয় রিজেন্ট এয়ারওয়েজ।