এমিরেটস এয়ারলাইন্স অনেক কম সময়ে বিশ্বের শীর্ষ বিমান পরিবহন সংস্থার পরিণত হয়েছে। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে, যখন এটি যাত্রা শুরু করেছিল তাদের হাতে নিজেদের একটি বিমানও ছিলনা। পাকিস্তানের কাছ থেকে দুইটি বিমান ভাড়া নিয়ে তারা যাত্রা শুরু করেছিল। অথচ আজ তারা সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে গেছে।
এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে দুবাই যেনো সুবিধাজনক অবস্থায় থাকতে পারে সে কথা মাথায় রেখে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের আইডিয়া এসেছিল। কেননা এই তিনটি বড় মহাদেশ থেকে দুবাইয়ের দূরত্ব কম ছিল।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এর জন্য চমৎকার কানেক্টিং পয়েন্ট হতে পারতো দুবাই। এভাবে এমিরেটস এয়ারলাইন্স গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিল দুবাই প্রশাসন। এ বিমল সংস্থা গড়ে তোলার পেছনে সর্বোচ্চ মানের যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্য ছিল।
শুরুর দিকে তাদের এতটা অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রথম দিন থেকেই সর্বোচ্চ মানের যাত্রীসেবা দেওয়া শুরু করে। শুরুতে নতুন বিমান না কিনে তারা মার্কেটিং এর পেছনে অর্থ খরচ করে। বিমানের রুট পরীক্ষা করতে থাকে তারা।
দুইটি ভাড়া করা বিমান থেকে আজকে তারা ২৬২টি অত্যাধুনিক বিমানের বহর তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। বিমান পরিষেবাকে যতটা আধুনিক করা সম্ভব তার সবকিছুই চেষ্টা করেছে তারা। নতুন বিমান বেশ জ্বালানি সাশ্রয়ী হয়ে থাকে। রক্ষণাবেক্ষণের খরচও অনেক কম। আর যাত্রীরা নতুন বিমান বেশ পছন্দ করে থাকে।
এমিরেটস যাত্রীদের সেরা অভিজ্ঞতা দেওয়ার পেছনে প্রচুর টাকা খরচ করে থাকে। তারা বিশ্বাস করে যে, নতুন যাত্রীরা একবার মুগ্ধ হলে তারা পুনরায় এ বিমানে চড়বে। বিভিন্ন এয়ারপোর্টে এমিরেটস বিশ্বমানের লাউঞ্চ সুবিধা প্রদান করে।
বিস্তৃত পরিসরে সহজলভ্য হওয়ার কারণে তাদের জনপ্রিয়তা দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। যেসব জায়গায় তারা যায় না সেখানে আঞ্চলিক ফ্লাইট সংস্থার সাথে তারা কাজ করে থাকে। ২৮ টি বিদেশি বিমান সংস্থার সাথে তাদের চুক্তি রয়েছে।
এমিরেটস এর সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাদের উদ্বোধনী ব্র্যান্ডিং এবং মার্কেটিং কৌশল। বিলাসিতা, নতুনত্ব এবং আথিতেয়তাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় তাদের বিজ্ঞাপনে। স্পন্সরশিপের পেছনে তারা অনেক অর্থ খরচ করে থাকে।
তারা গ্রাহকদের সাথে সম্পৃক্ত হতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে থাকে। তারা এমন একটি ব্যবসায়িক মডেল দাঁড় করিয়েছে যেখানে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে খরচ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফুয়েল হেজিং পদ্ধতিতে তারা জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
তারা ক্রু মেম্বারদের চমৎকার বেতন এবং বাড়তি সুবিধা প্রদান করে থাকে। ফলে তারা সন্তুষ্ট থাকে এবং ধর্মঘট বা অভিযোগের কোন স্থান এখানে নেই। তারা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন এবং অটোমেশন পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করেছে।