1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
‘এত টাকা খরচ করে রোমানিয়া আসতে বলব না’
রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন

‘এত টাকা খরচ করে রোমানিয়া আসতে বলব না’

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

গত কয়েক বছরে লাখ লাখ টাকা খরচ করে জীবিকার সন্ধানে ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন হাজার হাজার বাংলাদেশি। তাদের অনেকেই আবার রোমানিয়া থেকে পালিয়ে ইউরোপের অন্য দেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন। পালাতে গিয়ে সীমান্তে আটকও হয়েছেন অনেকে।

রোমানিয়া আসতে কত খরচ হয় তাদের আর কেন তাদের অনেকে পালিয়ে অন্য দেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন? ইউরোপের দেশ রোমানিয়াতে বাংলাদেশিদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে দেশটিতে রয়েছেন ইনফোমাইগ্রেন্টসের সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ।

রোমানিয়া-হাঙ্গেরির সীমান্তের কাছের শহর তিমিসোয়ারায় তাদের সাথে দেখা হয় তিন বাংলাদেশির। নিজেদের পরিস্থিতি জানালেন এই তিন অভিবাসী।

প্রায় দশ লাখ টাকা খরচ করে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রোমানিয়ায় পাড়ি জমান বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল মমিন। বর্তমানে নির্মাণ খাতের একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন তিনি।

জানালেন, বাংলাদেশের একটি এজেন্সির সহায়তায় রোমানিয়ার কাজের সুযোগ পান তিনি। এজন্য তার মোট খরচ হয়েছে সাড়ে নয় লাখ টাকা। শুধু তাই নয়, রোমানিয়ায় আসার পর একটি প্রতিষ্ঠান তাদের কাছ থেকে সিকিউরিটি ডিপোজিট বাবদ আরো ৫০০ ডলার নিয়ে নেয়।

আব্দুল মমিনের দাবি, দেশে দাললেরা মিথ্যা কথা বলে তার কাছ থেকে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এত টাকা খরচ করে রোমানিয়া কেন এসেছেন জানতে চাইলে মমিন বলেন, ‘এত হিউজ টাকা খরচ করে আমি আর কাউকে রোমানিয়ে আসতে বলব না।’

এখানকার পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, এখানে আসার আগে যেভাবে শুনেছেন তার চেয়ে বাস্তবতা ভিন্ন। কাজের পরিবেশের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, দিনে ১০ ঘণ্টা কাজ করতে হয় তাদের।

তিনি দাবি করেন, অসুস্থতায়ও কোনো ছুটি মেলে না। নেই স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা। আর এ কারণে নিজের চিকিৎসার টাকা নিজেকেই দিতে হয়। তিনি আরও জানান, অসুস্থ হয়ে কাজে যোগদান করতে না পারলে তাদের বেতন কেটে রাখা হয়।

এত টাকা খরচ করে আসার আসার বিষয়টি তার সাথে থাকা আর দুই বাংলাদেশির কাছ থেকেও জানা গেলো।

মোহাম্মদ শাহ আলম এবং মোহাম্মদ আবু তালেব জানালেন রোমানিয়াতে পৌঁছানো বাবদ তাদের ৮-১০ লাখ টাকা গুনতে হয়েছে।

২০২২ সালে রোমানিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সেই সময়ের (২০২২ সালের আগের) পূর্ববর্তী দুই বছরে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি রোমানিয়ার কাজের ভিসা পেয়েছেন।

তাদের বড় একটি অংশ রোমানিয়া আসার পর ইউরোপের অন্যান্য দেশ বিশেষ করে ইতালিতে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেছেন। এমনকি পালিয়ে রোমানিয়া ছাড়তে গিয়ে অনেকেই সীমান্তে আটক হয়েছেন।

এই তিন বাংলাদেশির কাছে জানতে চাওয়া হয় কেন বাংলাদেশিরা রোমানিয়া ছাড়তে চান।

বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, যে সুযোগ-সুবিধার কথা শ্রমিকদের বলা হয়, রোমানিয়াতে আসার পর সেই সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় না। আর তাই রোমানিয়া ছাড়তে চান বাংলাদেশিরা।

তার দাবি, যে বেতন, কাজ এবং যেভাবে টিআরসি বা টেম্পরারি রেসিডেন্স পারমিট দেওয়ার কথা বলা হয়, রোমানিয়া আসার পর দেখা যায় বিষয়টি তেমন নয়। আর এ কারণেই বাংলাদেশিরা রোমানিয়া ছেড়ে যান।

নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করে মাসে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা আয় করেন শাহ আলম। সেইসাথে কোম্পানি থেকে তাকে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এসব মিলিয়ে নিজে ভালো আছেন বলে জানালেন এই অভিবাসী।

সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com