রাজধানীর দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের উত্তরা সেন্টার স্টেশনের পাশে বিস্তৃত খোলা মাঠে গড়ে উঠেছে এক–দেড় শ অস্থায়ী খাবারের দোকান। চা থেকে শুরু করে সামুদ্রিক মাছ, কী নেই এখানে? ভোজন করতে এসে ঘোরাঘুরিটা বাদ যাবে কেন! দিয়াবাড়ির জলাশয়ে রয়েছে ভাসমান রেস্তোরাঁ, কায়াক নিয়ে ঘোরার ব্যবস্থা। সিলেট ও রাজশাহী নগরের মানুষও খেতে গিয়ে ঘোরার কাজটা সেরে আসতে পারেন, এমন কিছু জায়গা নিয়েই এবারের আয়োজন
দোকানের নাম: বারবিকিউ ওয়ার্ল্ড
খাবার: চিংড়ি, লবস্টার, কোরাল, স্কুইড, স্যামন, কাঁকড়া, কালোচাঁদা, টুনা, কিংফিশ, অক্টোপাসসহ অন্তত ১২ থেকে ১৫ পদের মাছ।
যেভাবে বিক্রি: মাছ বিক্রি হয় ফ্রাই বা বারবিকিউ করে; অর্থাৎ ক্রেতা দরদাম করে মাছ পছন্দের পর তাঁদের সামনেই কেটেকুটে ফ্রাই অথবা বারবিকিউ করা হয়। কেউ চাইলে সঙ্গে গরম পরোটা বা চালের রুটি নিতে পারেন। মাছগুলো বিক্রি হয় পিস হিসেবে, ঠিকা দরে।
দরদাম: চিংড়ি আকারভেদে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত; কোরাল ছোট ৮০০ টাকা; কোরাল মাঝারি ১ হাজার ২০০ টাকা, কোরাল বড় ১ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত; স্কুইড ১ প্লেট (৬টি থাকে) ২০০ টাকা, স্যামন ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা; লবস্টার আকারভেদে ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত, কালোচাঁদা ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা, অক্টোপাস ৪০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, কাঁকড়া প্রতিটি আকারভেদে ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, টুনা মাছ সর্বনিম্ন ৬০০ টাকা।
খোলা: বিকেল চারটার পর শুরু হয়। চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। শুক্র ও শনিবার বেশি ভিড় থাকে।
ঠিকানা: দিয়াবাড়ি বউবাজার, সেক্টর-১৮, মেট্রোরেল উত্তরা সেন্টার স্টেশনের পাশে।
মোবাইল: ০১৬১৭৮৬২১১২
দোকানের নাম: ইয়ামি ফুড এক্সপ্রেস
কত পদের মাংস: দেশি হাঁস, চায়না হাঁস ও রাজহাঁস
যেভাবে বিক্রি: হাঁসের মাংসগুলো রান্না করা থাকে। সঙ্গে থাকে পরোটা, চালের রুটি ও চাপটি। ভোজনরসিকেরা কেউ পরোটা, কেউ চালের রুটি বা চাপটি দিয়ে হাঁসের মাংস খান।
দরদাম: দেশি হাঁস প্রতি প্লেট ২৫০ টাকা, চায়না হাঁস প্রতি প্লেট ৩০০ টাকা এবং রাজহাঁস প্রতি প্লেট ৩৫০ টাকা। আর চালের রুটি প্রতিটি ১০ টাকা, পরোটা ও চাপটি ২০ টাকা করে।
খোলা: বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। শুক্র ও শনিবার বেশি ভিড় থাকে।
ঠিকানা: দিয়াবাড়ি বউবাজার, সেক্টর-১৮, মেট্রোরেল উত্তরা সেন্টার স্টেশনের পাশে।
মোবাইল: ০১৬৮২৪৩৮২৫৭
দোকানের নাম: ফ্রেন্ডস জোন
পদ: গরুর কালাভুনা, লালভুনা
যেভাবে বিক্রি: গরুর ভুনার সঙ্গে রয়েছে চালের রুটি, পরোটা ও বিভিন্ন পদের পিঠা
দরদাম: প্রতি প্লেট গরুর ভুনার দাম ২৫০ টাকা
ঠিকানা: দিয়াবাড়ি বউবাজার, সেক্টর-১৮, মেট্রোরেল উত্তরা সেন্টার স্টেশনের পাশে।
মোবাইল: ০১৮৮৮৩৪৫৩০৩
দোকানের নাম: নুরুজ্জামান চা-বিলাস
পদ: তান্দুরি চা, তান্দুরি মালাই চা, কাজুবাদাম চা, তান্দুরি স্পেশাল চা, দুধ চা, দুধ মালাই চা, তেঁতুল চা, খেজুরের গুড়ের চাসহ মোট ১২ পদ।
দরদাম: প্রতি কাপ চা প্রকারভেদে ২০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত।
খোলা: বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত।
ঠিকানা: দিয়াবাড়ি বউবাজার, সেক্টর-১৮, মেট্রোরেল উত্তরা সেন্টার স্টেশনের পাশে।
মোবাইল: ০১৭৪১৭৪৭৫২৫
প্রতিষ্ঠানের নাম: নূর ফুড ক্যাফে অ্যান্ড কায়াকিং
ভাড়া: জনপ্রতি আধা ঘণ্টা ১০০ টাকা, ১ ঘণ্টা ১৫০ টাকা
খোলা: সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত
বিভিন্ন রাইড: শিশুদের নাগরদোলা, বড়দের নাগরদোলা, শিশুদের জাম্পিং গ্রাউন্ড। এগুলোর ভাড়া শিশুদের জন্য ৩০ টাকা, বড়দের ৫০ টাকা। লেকের উত্তর পাড়ে রাইডগুলো অবস্থিত।
অবস্থান: মেট্রোরেলের উত্তরা সেন্টার স্টেশনের দক্ষিণ পাশের লেক (৭৩ নম্বর পিলার-সংলগ্ন)।
মোবাইল: ০১৮৩৩৪৪৬৮০৯
নাম: নিউ জলতরঙ্গ রেস্টুরেন্ট
খাবার: বার্গার, চাওমিন, পাস্তা, স্যুপ, পিৎজা, চিকেন উইংস, কফি ইত্যাদি
খোলা: দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত
অবস্থান: মেট্রোরেলের উত্তরা সেন্টার স্টেশনের দক্ষিণ পাশের লেক (৭৩ নম্বর পিলার-সংলগ্ন)।
মোবাইল: ০১৮৩৩৪৪৬৮০৯
প্রতিষ্ঠানের নাম: শক্তি ওয়াটার গার্ডেন
ভাড়া: আধা ঘণ্টা জনপ্রতি ৫০ টাকা, ১ ঘণ্টা ১০০ টাকা।
খোলা: সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত
অবস্থান: দিয়াবাড়ি ৩ নম্বর ব্রিজ লেক, দিয়াবাড়ি। মেট্রোরেলের নিচের সড়কের পাশে।
মোবাইল: ০১৩০০৬৬৩৫০০
ঠিকানা: পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট নগর
কী কী পদ ও দরদাম: উন্দাল স্পেশাল বিরিয়ানি (দাম ৩৯৫ টাকা), চিকেন বিরিয়ানি (২৬০ টাকা), মাটন বিরিয়ানি (৩৫০ টাকা), হায়দরাবাদি বিরিয়ানি (৩৮৫ টাকা), বানারশি পোলাও (২২০ টাকা)।
কাবাব: চিকেন টিক্কা কাবাব (দাম ৫৫০ টাকা), মাটন কিমা কাবাব (৩৭০ টাকা), কাবাব মিক্স প্লেটার (৮৫০ টাকা), চিকেন হারিয়ালি কাবাব (৫৮০ টাকা)
খোলা: দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত।
মোবাইল: ০১৭১৭-০২০৫০৫
খাবারের তালিকা: গরুর আখনি (দাম ২০০ টাকা), খাসির আখনি (২২০ টাকা), শাহি মোরগ পোলাও (২৭০ টাকা), হাঁস খিচুড়ি (৩৩০ টাকা), কোরমা পোলাও (৩৩০ টাকা), ডাল খাসি (১২০ টাকা), বিফ রেজালা (১৯০ টাকা), বিফ কালাভুনা (২২০ টাকা)
সিলেটে শাখা দুটি: কুমারপাড়া পয়েন্ট ও সুবিদাবাজার পয়েন্টে মিতালি কমপ্লেক্স
খোলা: বেলা ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত।
ফোন: ০১৬০১-১৫০১১৪
সিলেট নগরের পূর্ব জিন্দাবাজারের পাশেই রয়েছে হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার, সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়িসহ ঐতিহ্যবাহী কিছু স্থাপনা। পূর্ব জিন্দাবাজার থেকে রিকশায় জনপ্রতি ১৫ টাকা ভাড়ায় দুই এলাকায় যাওয়া যায়।
হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ: নগরের ১৩০৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশে আগত পাশ্চাত্যের ইসলাম ধর্মের প্রচারক শাহ জালালের বাসস্থান ও শেষ সমাধি। দরগাহে দেখা মিলবে কবুতরের ঝাঁক, মাজার, বড় বড় গজার মাছ।
কিনব্রিজ: কিনব্রিজ ব্রিটিশ আমলে সুরমা নদীর ওপর প্রথম সেতু। ১৯৩৬ সালে নির্মিত ৩৯ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের সেতু পুরোটাই লোহার। তৎকালীন আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল কিন সেতুর উদ্বোধন করেন। সেই থেকেই সেতুর নাম কিনব্রিজ।
আলী আমজদের ঘড়ি: জমিদার আলী আমজদ খান ১৮৭৪ সালে ওই ঘড়িঘর নির্মাণ করেন। লোহার খুঁটির ওপর ঢেউটিনের প্রাচীন নির্মাণশৈলীর প্রায় ৩০ ফুট উঁচু স্থাপনার মধ্যে স্থাপন করা হয় ঘড়িটি।
শাহি ঈদগাহ: ১৭০০ সালে প্রথম দশকে সিলেটের শাহি ঈদগাহ নির্মিত হয়। কারুকার্যখচিত ২২টি বৃহৎ সিঁড়ি রয়েছে। সিঁড়ি মাড়িয়ে ওপরে উঠলে ১৫টি গম্বুজ সজ্জিত ঈদগাহ দেখা যায়। সন্ধ্যার পর অনেকেই হাঁটাহাঁটি করতে বের হন।
টিলাগড় ইকোপার্ক: জেলা সদরের পূর্ব প্রান্তে টিলাগড় রিজার্ভ ফরেস্টের ১১২ একর জায়গা নিয়ে ২০০৬ সালে টিলাগড় ইকোপার্ক স্থাপন করা হয়। ইকোপার্কটিতে রয়েছে ঘন গাছগাছালি এবং নানা প্রকার প্রাকৃতিক উদ্ভিদ ও বৃক্ষরাজি।
ঠিকানা: পাঠানপাড়া লালন শাহ মুক্তমঞ্চের পাশে, রাজশাহী নগর। পদ্মা নদী ঘেঁষেই খোলামেলা জায়গায় রেস্তোরাঁটির অবস্থান। শহর থেকে ১০ থেকে ২০ টাকা অটোরিকশা ভাড়া।
যা আছে: নোঙরে একদিকে রয়েছে শিশুদের জন্য রাইড, পদ্মাপাড়ে সবার বসার জন্য রয়েছে বিশেষ বেঞ্চ। এখানে বসেই পদ্মা নদীর প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়। অন্যদিকে বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় ৫০ ধরনের বেশি পদের খাবার। এগুলোর দাম ৩০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
নানা পদ: তান্দুরি চিকেন, সাবওয়ে স্যান্ডউইচ, অ্যারাবিয়ান রাইস প্লেটার অন্যতম। রেস্তোরাঁর দোতলায় বসে খেতে খেতে দেখা যায় পদ্মা নদীর সৌন্দর্য।
ফেসবুক: https://www.facebook.com/nongor.rajshahi?mibextid=ZbWKwL
[তথ্য দিয়েছেন আল আমিন, গাজীপুর; শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী ও মানাউবী সিংহ, সিলেট]