শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:২২ অপরাহ্ন
Uncategorized

এক গ্রামেই ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২

মিষ্টি, স্বাদ ও সুঘ্রাণের জন্য কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর খ্যাতি আজ দেশজুড়ে। ভরা মৌসুমে ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখর এ গ্রামের লিচু বাগানগুলো। এবার গ্রামটির চাষিরা ১০ কোটি টাকার বেশি লিচু বিক্রির আশা করছেন।

জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে পাকুন্দিয়া উপজেলা মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের অবস্থান। গ্রামের প্রবেশপথেই দেখা মিলবে রাস্তার দু’পাশে সারি সারি লিচু গাছ। হাজার হাজার লিচু থোকায় থোকায় ঝুলছে গাছগুলোতে। লাল টকটকে লিচু দেখলে যে কারও খেতে লোভ জাগবে। লিচু চাষ করেই দেশখ্যাত মঙ্গলবাড়িয়া গ্রাম, স্বাবলম্বী এখানকার চাষিরা।

মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর জাত ও উৎপাদন বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, ঠিক কত বছর আগে এবং কীভাবে এ গ্রামে লিচুর চাষ শুরু হয়, তার সঠিক কোনও তথ্য নেই। তবে প্রবীণদের ধারণা, প্রায় ২০০ বছর আগে গ্রামের মো. হাশিম মুন্সী চীন থেকে চারা এনে তার বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেন। তারপর থেকেই এ লিচুর জাত পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গ্রামের নামেই এ জাতের লিচুর নামকরণ হয়। আর এখন এই লিচুর জন্যই বিখ্যাত হয়ে উঠেছে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রাম।

লিচু চাষে ভাগ্য ফিরেছে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের হাজারও মানুষের। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন লিচু চাষে আগ্রহ বাড়ছে এখানকার চাষিদের।

এদিকে মধু মাসে শুরু হয়েছে এখানকার লিচু আহরণের কাজ। আরও বেশ কিছু দিন ধরে চলবে লিচুর বেচাকেনা। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছে শত শত পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা। প্রতি ১০০ লিচু বিক্রি হয়ে তিন থেকে চারশ’ টাকায়। শুধু দেশ নয়, প্রবাসীরা এ লিচুর স্বাদ নিচ্ছেন বহু বছর ধরে। আবার লিচুর এমন সময়ে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের বাড়িগুলোতেও ভিড় করেন আত্মীয়-স্বজনরা।

হোসেনপুর থেকে লিচু কিনতে এসেছেন হাসান মাহমুদ। তিনি বলেন, এ সময়ে আমি প্রতিবারই এখানে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসি। বাগানের টসটসে ও সুস্বাদু লিচু খেতে বাচ্চাদের একটা আবদার থাকে। এখানকার লিচুর স্বাদ একবার যে পাবে, তাকে বারবার আসতেই হবে। তাছাড়া স্বাদ আর দামেরও একটা ভালো বোঝাপড়া রয়েছে।

লিচু চাষি শামীম মিয়া বলেন, বংশানুক্রমে বছরের পর বছর এখানকার বেশিরভাগ মানুষ লিচু চাষের সঙ্গে যুক্ত। আমরাও বছরের পর বছর এখানকার লিচু চাষের ওপর নির্ভরশীল। এখানকার লিচু খেতেও সুস্বাদু, ঘ্রাণও সুন্দর এবং দেখতেও ভালো। প্রতি বছরই লিচু চাষ করে লাভের মুখ দেখেছি। লিচুর আয় থেকেই আমাদের ভোরণ-পোষণ ও সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চলে।

স্থানীয় লিচু চাষি করিম বলেন, মঙ্গলবাড়িয়ায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ২০০ বাগান রয়েছে। এসব বাগান থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির আশা করা হচ্ছে।

স্থানীয় লিচু চাষি তৌহিদ মিয়া বলেন, মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু অনেক সুস্বাদু। বিভিন্ন জেলার মানুষ এখানে লিচু কেনার জন্য আসেন। ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে এ এলাকায় লিচুর চাষ ও বিক্রি চলছে। এ বছর আমার দুইশ’ লিচুর গাছ রয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছি। আশা করছি সবকিছু ঠিক থাকলে ১০-১২ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারবো।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com