শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন

একই ভিডিও বহু ভাষায় ডাবিং করা যাবে ইউটিউবে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০২৩

একজন মানুষের পক্ষে যেমন সব দেশের ভাষা শেখা সম্ভব নয়, আবার শুধু ভাষাগত সীমাবদ্ধতার কারণে দেশ-বিদেশের দারুণ সব সিনেমা, সিরিজ দেখা বন্ধ রাখাও মুশকিল। বিশেষত বিশ্বগ্রামের বাসিন্দারা যখন সবাই প্রযুক্তির এক ছাতার নিচে বাস করছে। 

বিনোদনের দুনিয়ায় ভাষার এই সীমাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাবার জন্য রয়েছে সাবটাইটেল ও ডাবিংয়ের মতো বিকল্প। অনেকেই সাবটাইটেল বনাম ডাবিংয়ের তর্কে মাতেন, কেউ কেউ বলেন, সাবটাইটেল পড়তে পড়তে সিনেমা দেখাটা বেশ চ্যালেঞ্জের কাজ– তাই তারা ডাবিংয়ের দিকেই ঝুঁকে থাকেন। এমনটা বলাও ভুল হবে না যে শুধু ডাবিং ছিল বলেই বহু ‘অন্য ভাষা’র কনটেন্ট বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়েছে।

এই জনপ্রিয়তা অর্জনে সম্প্রতি ইউটিউব আরও একধাপ এগিয়ে গেল। এখন থেকে একই ভিডিও নানান ভাষায় ডাব করা যাবে ইউটিউবে। বিশ্বব্যাপী দর্শকরা যাতে আরও বেশি মাত্রায় ইউটিউব কনটেন্ট উপভোগ করতে পারে, সে জন্যই তাদের এমন পদক্ষেপ।

এ ছাড়া ইউটিউবের নিজস্ব প্রচার-প্রসারও যে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে, তা বলাই বাহুল্য।

ইউটিউবে বহুভাষিক অডিও ট্র্যাক চালুর প্রযুক্তি আগে থেকেই ছিল। তবে এই অপশন ভালোভাবে কাজে লাগাতে হলে কনটেন্ট নির্মাতাদের থার্ড পার্টি ডাবিংকারীদের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে এবং ডাবিংটি একবার আপলোড করা হয়ে গেলে দর্শকরা একই মেন্যু থেকে পছন্দের ভাষায় ডাবিং বেছে নিতে পারবেন, ঠিক যেমন সাবটাইটেল বা অডিও বাঁছাই করেন। তবে কোন কোন ভাষায় ভিডিওটি দেখা যাবে, তা নির্ভর করবে নির্মাতাদের ওপর।

প্রাথমিকভাবে এই ফিচারটি পরীক্ষা করে দেখা হয় এক দল কনটেন্ট নির্মাতাদের সঙ্গে। ইউটিউব থেকে জানা যায়, ইতোমধ্যে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি ভিডিও মোট ৪০টি ভাষায় আপলোড করা হয়েছে। শুধু জানুয়ারির হিসেবেই ১৫ শতাংশেরও বেশি ডাবকৃত ভিডিওগুলোর ওয়াচটাইম খেয়াল করে দেখা যায়, এই দর্শকরা কি না মৌলিক ভাষার বদলে অন্য ভাষায় ভিডিওগুলো দেখেছেন এবং শুধু এই এক মাসেই দর্শকরা ২ মিলিয়ন ঘণ্টা ডাবকৃত ভিডিও উপভোগ করেছেন। ফলে, এই নতুন ফিচারটি ইউটিউবের অর্থনীতিতে বেশ ভালো প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

বর্তমানে জনপ্রিয় ডাবিং ভাষার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে স্প্যানিশ, পর্তুগিজ ও হিন্দি। শুরুর দিকে শুধু বেশি সময়ের ভিডিওগুলোতে এই ফিচার প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে বর্তমানে শর্ট ভিডিওর জন্যও কাজ করা হচ্ছে যেহেতু আগামী দিনের কনটেন্ট হিসেবে শর্ট ভিডিওর গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।

এই ফিচারে প্রাথমিকভাবে সংযুক্ত হওয়া লোকেদের মাঝে জিমি ডোনাল্ডসন তথা বহুল পরিচিত ইউটিউব তারকা মিস্টার বিস্ট অন্যতম। তিনি এরই মাঝে মোট ১১টি ভাষায় তার বিভিন্ন বিখ্যাত ভিডিও আপলোড করেছেন এবং এই ফিচার নিয়ে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী– ‘১২টি ভাষার জন্য ১২টি চ্যানেল খোলা অত্যন্ত কঠিন কাজ। তাই এভাবে সবগুলো ভাষা এক জায়গায় পাওয়ার বিষয়টি খুব সহজ।’

তিনি এও মনে করেন, এই ফিচারটি শুধু কনটেন্ট নির্মাতাদেরই সহায়তা করে না বরং বিশ্বব্যাপী দর্শক ও ফলোয়ারদেরও পছন্দমতো কনটেন্ট খুঁজে পেতে সাহায্য করে। তার মতে, ‘আপনি মেক্সিকোতে থাকেন, ব্রাজিলে থাকেন বা ভারতে– সবগুলো ভাষার ডাবিংই পাবেন একই ভিডিওতে, এক জায়গায়। তাই লোকের জন্য বোঝাটাও আগের চেয়ে সহজ হবে।’

বহুভাষিক ডাবিংয়ের জন্য উপযুক্ত কনটেন্ট নির্মাতাদের ইউটিউব কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হবে এবং এতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণও করা হবে। এই প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার পর তারা ক্রিয়েটর স্টুডিওতে এই নতুন ফিচারটিতে কাজ করতে পারবেন। শুধু নতুন ভিডিও নয়, পুরনো ভিডিওতেও তারা একাধিক ভাষার ডাবিংয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন। এজন্য তাদের প্রয়োজন পড়বে সাবটাইটেল এডিটর টুল। তবে কোন ইউটিউবাররা এ সুযোগ পাবেন, তা নিয়ে এখনো পুরোপুরি খোলাসা করা হয়নি ইউটিউবের পক্ষ থেকে। শুধু বলা হয়েছে, হাজারো ইউটিউবারকে সঙ্গে নিয়ে তারা তাদের লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যাচ্ছেন।

তথ্যসূত্র: টেকক্রাঞ্চডটকম, এনবিসিনিউজ, হলিউডরিপোর্টারডটকম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com