ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের প্রতি চোখ অনেক দেশের। বিশেষ করে আমেরিকার। এইসব কথা কোথাও লেখা নেই। কিন্তু তা বিশ্বরাজনীতির বিশ্লেষণে ধরা পড়ে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ করে ছিনিয়ে আনা স্বাধীনতাকে তারা (অর্থাৎ বেশির ভাগ মানুষ) কাউকে স্পর্শ করতে দিতে চায় না। সে কারণে অনেক অনেক অপশন নিয়ে পরাশক্তিগুলো এগিয়ে এসেও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। এমন কি নোবেল পুরস্কার পাওয়া প্রফেসর ইউনুসও আমেরিকার কাছে আনত হতে গিয়ে ছিটকে পড়েছেন। আমেরিকা বাংলাদেশের পাশে থাকলে তা ভাল না খারাপ তা বিতর্কের বিষয়। তবে তাদের একটা যে পরিকল্পনা আছে, তা বোঝা যায়। ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিক ত্রৈমাসিক পত্রিকা ফরেন পলিসিতে সম্প্রতি আহমেদ হুসাইনের লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সেই নিবন্ধে বাংলাদেশ নিয়ে ওয়াশিংটনের মনোভাব বোঝাতে গিয়ে সম্প্রতি ঢাকা সফর করা স্টেট ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র কর্মকর্তা উজরা জেয়া বলেছিলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী ৫০ বছরের জন্য বাংলাদেশের সাথে তার সম্পর্ক গভীর করার অপেক্ষায় রয়েছে।’ ঢাকার মানবজমিন পত্রিকায় উক্ত নিবন্ধটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তা এখানে মুদ্রিত হলোঃ
‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী ৫০ বছরের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক গভীর করার অপেক্ষায় রয়েছে।’ ১১ জুলাই একথা বলেন গত তিন বছরে বাংলাদেশ সফরকারী মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সর্বোচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা উজরা জেয়া। এশিয়ায় একটি নতুন শীতল যুদ্ধের কথা উঠলে বাংলাদেশকে প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়, তবে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশকে প্রয়োজন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সঙ্কট এবং চীন ও ভারত উভয়ের সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শীতল যুদ্ধের চরম পর্যায়ে, ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নকে পাশে রেখে, বাংলাদেশ- (তখন পূর্ব পাকিস্তান) স্বাধীন হওয়ার জন্য ১৯৭১ সালে যুদ্ধে জড়িত হয়। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ভারত সামরিকভাবে এই যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে এবং মাত্র ১৩ দিন স্থায়ী একটি যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
বাংলাদেশ ক্রমেই মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। বিগত এক দশকে, দেশটি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের সাথে বিশাল পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে। দেশের মাথাপিছু আয় ভারত ও পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে এবং জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। কিন্তু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি গণতন্ত্র ভেঙে পড়েছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ ও তার দল আওয়ামী লীগ লোহার মুষ্টিতে দেশ শাসন করে আসছে।
শেখ হাসিনা নিজেকে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরাধিকার হিসেবে উপস্থাপন করেন, যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম কাÐারি ছিলেন। মুজিব নেতৃত্বাধীন সরকার সোভিয়েতপন্থী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে এবং ১৯৭৫ সালে তার শাসনের শেষে বাংলাদেশকে একটি স্বতন্ত্র একদলীয় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করে।
সে বছর, মুজিব তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ একটি সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন। তার মেয়েরা যারা সেইসময়ে বিদেশে ছিলেন তারা প্রাণে বেঁচে যান।
যে দুটি সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনা হয়েছিল, তাতে ব্যাপক কারচুপি হয়েছিল। এর জেরে বাংলাদেশে জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি সমস্ত কূটনৈতিক রীতি ভেঙে মন্তব্য করেন, তিনি শুনেছেন ভোট শুরুর আগেই রাতে পুলিশ ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ফেলে।।
দেশে মানবাধিকার এবং আইনের শাসন ধাক্কা খেয়েছে। নির্বাচনে নিয়মিত কারচুপি করা হয় এবং সন্ত্রাসের রাজত্ব বিরোধীদের অনেকটাই নীরব করে দিয়েছে। বিরোধী নেতা ও মানবাধিকার কর্মীরা নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন।
সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজের একটি সাম্প্রতিক তথ্যচিত্রে বাংলাদেশে অপহরণের একটি লোমহর্ষক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা আয়নাঘর (মিরর হাউস) নামে পরিচিত একটি জায়গায় সরকারবিরোধী কর্মীদের অবৈধভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য, কখনও কখনও বছরের পর বছর আটক করে রাখে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কর্তৃক তুলে নিয়ে যাওয়ার চেয়ে অবশ্য আয়নাঘরের বাসিন্দারা বেশি ভাগ্যবান। যদিও এটি পুলিশের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আধা- সামরিক ইউনিট হিসাবে গঠিত হয়েছিল, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও র্যাবের বিভিন্ন ইউনিটে কাজ করে। র্যাবে থাকা দুইজন প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা জার্মান মিডিয়া ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দফতর থেকে অনুমোদন নিয়ে অভিজাত বাহিনীকে কাজে লাগাচ্ছেন’’।
এনকাউন্টারে লোকদের হত্যা করার জন্য র্যাবের কুখ্যাতি এতটাই ছড়িয়ে পড়েছিলো যে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, এই বাহিনী মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে। মার্কিন হস্তক্ষেপ টনিকের মতো কাজ করেছিল- ওয়াশিংটন দেখিয়ে দিয়েছিলো তারা চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। রাতারাতি র্যাবের অপহরণ বন্ধ হয়ে যায়। বাইডেন প্রশাসন এখনো বাংলাদেশ সরকারকে চাপে রেখেছে। সর্বশেষ মার্কিন পদক্ষেপ হলো, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণœ করার জন্য দায়ী বা জড়িত যে কোন বাংলাদেশি ব্যক্তির ভিসার ওপর নিষেধাজ্ঞা’’।
জুলাই মাসে মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি বিঙ্কেন ঘোষিত নীতিটি বাংলাদেশকে নাইজেরিয়া, উগান্ডা এবং সোমালিয়ার সাথে এক সারিতে রেখেছে। নাইজেরিয়া এবং উগান্ডায় এই নিষেধাজ্ঞাগুলি খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি, তবে আগামী বছরের ভোটের আগে সরাসরি সর্বজনীন ভোটাধিকারের অনুমতি দেয়ার জন্য সোমালিয়ার সরকারকে চাপ দেয়ার ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল।
বাংলাদেশেও এই মার্কিন টোটকা কাজ করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্লুটোক্র্যাটরা তাদের অর্জিত সম্পদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডিয়ান রিয়েল এস্টেটে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করেন, তার পরিমাণ এতটাই যে, কানাডার টরন্টোতে একটি ছোট এলাকা ‘বেগম পাড়া’ নামে পরিচিত। এটি সেই এলাকা যেখানে বাংলাদেশের উচ্চবিত্তদের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা বসবাস করেন। কানাডা যদি ওয়াশিংটনের নেতৃত্ব অনুসরণ করে এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তাহলে এটি বাংলাদেশের প্লুটোক্র্যাটদের পশ্চিমা দেশে তাদের অবাধ প্রবেশাধিকার কেড়ে নেবে।
চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে হৃদ্যতা বাড়িয়ে নিজের জন্য সমস্যা তৈরি করছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সম্প্রতি রুশ ব্যাংকের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রুশ-নির্মিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য চীনা মুদ্রা ইউয়ানে ঋণ পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি ইউক্রেন সংঘাত দ্বিতীয় বছরে পদার্পণের কয়েক ঘন্টা আগে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের একটি প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থাকে। যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে ‘রাশিয়া অবিলম্বে, সম্পূর্ণ এবং নিঃশর্তভাবে ইউক্রেনের ভূখÐ থেকে তার সমস্ত সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করে শত্রুতার অবসান ঘটাবে।’ শেখ হাসিনা সংসদে এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যখন তার সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে (বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে) পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল, তখন রাশিয়াই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। অতএব, আমাদের অবশ্যই তাদের সাহায্য করতে হবে যারা কঠিন সময়ে আমাদের সাহায্য করেছিল।’
এই বছর, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি নৌ ঘাঁটিও উদ্বোধন করেন যেখানে দুটি চীন-নির্মিত সাবমেরিন রয়েছে। তার নামে নামাঙ্কিত ইনস্টলেশনটি বঙ্গোপসাগরের মুখে রয়েছে। সেইসঙ্গে এটি গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
কারণ নৌঘাঁটিটি চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি নিজেদের স্বার্থে জলদস্যুতা বিরোধী অভিযানে ব্যবহার করতে পারে। বিষয়টি ওয়াশিংটনকে ক্ষুব্ধ করেছে। পাশাপাশি মিয়ানমারের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার জন্যও ওয়াশিংটনের বাংলাদেশকে প্রয়োজন, কারণ চীন নিষ্ঠুর জান্তার সমর্থক হিসেবে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। কিন্তু ঢাকা তার পূর্ব প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে শক্ত হবার বদলে দুর্বলতা দেখিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি মেনে হাসিনা সরকার প্রবাসে থাকা মিয়ানমারের ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা এনইউজি কে সমর্থন করতে আগ্রহী নয়। এনইউজি আসলে ২০২১ সালে একটি চীনা- সমর্থিত সামরিক অভ্যুত্থানে ভেঙে দেওয়া সংসদের কিছু সদস্যদের নিয়ে গঠিত। মিয়ানমারের বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট কর্তৃক স্বীকৃত, এনইউজি এবং এর সশস্ত্র শাখা পিপলস ডিফেন্স ফোর্স ইতিমধ্যেই দেশের অর্ধেক নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু চীন চায় না অং সান সুচির নেতৃত্বে একটি গণতান্ত্রিক ও মুক্ত মিয়ানমার গড়ে উঠুক।
দীর্ঘদিন ধরে, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে বাধা দিতে সক্ষম হয়েছিল। ভারত তার বিদ্রোহ-প্রবণ উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে শান্ত রাখার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতাবস্থাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার সমস্ত ভারতবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতাদের ভারতে হস্তান্তর করেছে এবং নিশ্চিত করেছে যে, বাংলাদেশের বুকে কোনো ভারত বিরোধী কার্যকলাপ সংঘটিত হবে না। পাশাপাশি একটি বিতর্কিত চুক্তিতে, হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার একটি ভারতীয় কোম্পানিকে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনের কাছে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে। বিনিময়ে, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারত, হাসিনার স্বৈরাচারকে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলতে দিয়েছে।
বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টির নেতাকে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে যোগ দিতে ভারত তার প্রভাব খাটিয়েছিলো। যদিও অন্য সব প্রধান রাজনৈতিক দল সেই নির্বাচন বর্জন করেছিল। ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এতটা সরব ছিলো না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে, ওয়াশিংটনকে ভারতীয় উদ্বেগ উপেক্ষা করে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে হবে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের আগে চীন এবং রাশিয়া প্রকাশ্যে হাসিনার শাসনের প্রতি তাদের সমর্থন দেখিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনেও একই সুর শোনা গেছে। এতে উৎসাহিত হয়ে, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী স্বৈরশাসক আরেকটি কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার স্বপ্ন দেখতে পারেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি দৃঢ়ভাবে কাজ করে, ভিসা অনুমোদনের হুমকি এবং একটি স্বচ্ছ ভোটের জন্য তার চাপ অব্যাহত রাখে, তাহলে বাংলাদেশীরা ১৫ বছরের মধ্যে তাদের প্রথম সুষ্ঠু নির্বাচনের সাক্ষী হতে পারে।তবে এটুকুই যথেষ্ট নয়। এই বছরের মে মাসে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে লেখা একটি চিঠিতে, মার্কিন কংগ্রেসের ছয় সদস্য বাংলাদেশে কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার এবং বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী এবং সামরিক কর্মীদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সংঘটিত করতে বাইডেন প্রশাসনের এগিয়ে আসার সময় এসেছে। এটি এশিয়ার অন্যান্য কলুষিত রাজনৈতিক নেতাদের সাধারণ জোট গঠনে নিরুৎসাহিত করবে। এর মাধ্যমে মহাদেশ জুড়ে গণতন্ত্রের বার্তা সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছেন যে বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় হতে পারে জাতিসংঘের তত্ত¡াবধানে নির্বাচন, যেমনটি বব গুড এবং মার্কিন কংগ্রেসের অন্যান্য ১৩ সদস্য উত্থাপন করেছিলেন। তারা বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের তত্ত¡াবধান ও পরিচালনার জন্য বিশ্বব্যাপী নিরপেক্ষ সরকারদের সাথে একত্রিত হয়ে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ভোটারদের ভয়ভীতি, হয়রানি ও হামলা প্রতিরোধে শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রয়োজনের কথাও তাঁরা উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ ছোট হতে পারে, কিন্তু এটি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশটিকে আর নিজের ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত হবে না, ওয়াশিংটনের।
সূত্রঃ ফরেন পলিসি