শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১২ পূর্বাহ্ন

উচ্চ শিক্ষায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর আগ্রহ কানাডা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩

প্রতি বছর দেশের বাইরে লেখাপড়া করতে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিদেশে পাড়ি জমান। যাদের বেশিরভাগের আগ্রহ থাকে কানাডায় পড়াশুনা করার। এদের কেউ আগ্রহ অনুযায়ী সুযোগ পান আবার কেউ পান না। যারা পান না তাদের আক্ষেপটা রয়ে-ই যায়।

ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে শিক্ষার্থীদের যতটা আগ্রহ তার চেয়ে বেশি ঝোঁক উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডার প্রতি। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে, উচ্চ শিক্ষালাভে শিক্ষার্থীরা কেন কানাডায় যেতে এতটা আগ্রহী?

আয়তনে ৬৭টি বাংলাদেশের সমান কানাডা। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ যা আমেরিকার চেয়েও বড়। তবে জনসংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে কয়েকগুন কম। যা দশভাগের এক ভাগ। বৃহত্তম এ দেশটিতে মাত্র তিন কোটি ষাট লাখ লোকের বসবাস। এর মধ্যে ৫৯ লাখের বয়স ৬৫ বছরের ওপরে এবং ৫৮ লাখের বয়স ১৪ বছরের নিচে। এ প্রথম, কানাডার ইতিহাসে সিনিয়র সিটিজেনের সংখ্যা শিশুদের চেয়ে বেশি।

আয়তনের তুলনায় লোক সংখ্যা অনেক কম হওয়ায় অনেক সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে জনসংখ্যা ঘাটতি পূরণ হয়নি। দেশটির শ্রম বাজারে বর্তমানে ২২ লাখ লোকের ঘাটতি। এ লক্ষ্যে ২০১৫-১৬ তে তিন লাখ ২১ হাজার ইমিগ্র্যান্ট নেয়া হয়। যা ১৯১০ সালের পর সর্বোচ্চ। এ বছরও সাড়ে তিন লাখ ইমিগ্র্যান্ট নিবে দেশটি।

এ লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষা লাভে ইচ্ছুকদের জন্য বড় একটা সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে দেশটির সরকার। এছাড়া, বিশ্বের সব স্বনামধন্য বিশ্ববিদল্যায়ের তালিকার বড় একটা অংশ এখানেই। দেশটিতে রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব ভিক্টরিয়া, ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশকলম্বিয়া, ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো ও কুইনস ইউনিভার্সিটির মত সব নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়।

সর্বশেষ প্রকাশিত বিশ্ব-র‌্যাংকিং অনুযায়ী ৯০% এরও বেশি কানাডিয়ান রিসার্চ স্বীকৃতি পেয়েছে। স্বনামধন্য এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও ক্যারিয়ার গঠনে যা বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে।

দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা তাত্ত্বিক দক্ষতার পাশাপাশি প্রায়োগিক অভিজ্ঞতাকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিভিন্ন শিল্প ও পেশার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সঠিকভবে দিক নির্দেশনা দিতে পারেন।

এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার সেন্টারগুলো শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠনের  কাজে নিয়োজিত। দেশটিতে আর্থিকভাবে স্বচ্ছলরা পড়াশুনার সুযোগ তো পেয়েই থাকে। যাদের অর্থের সংকট আছে কিন্তু স্কোর ও ভাষায় বিশেষ করে ইংলিশে দক্ষতা ভাল আছে তাদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা করেছে দেশটি।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে অনার্স ও মাস্টার্স করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবেন, সেখানকার অনেক প্রফেসরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলে ফান্ড পাওয়া যেতে পারে। যা যাওয়ার এক বছর আগে থেকে যোগোযোগ করতে হয়। তবে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করতে যারা যাবেন তাদের স্কলারশিপ ও ফান্ড পাওয়া অনেক সহজ।

বর্তমানে দেশটিতে পড়াশুনার ব্যাপারে অনেক সুযোগ সুবিধা থাকলেও স্নাতক ও স্নাতকত্তোর পর্যায়ে স্কলারশিপ পাওয়া দুষ্কর। যারা পিএইচডি ডিগ্রি লাভের জন্য যাবেন তাদের জন্য বড় সুযোগ রয়েছে দেশটিতে।

আশার কথা হলো- এখানকার প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে ডিগ্রি লাভ করবেন, তা একজন শিক্ষার্থী ক্যারিয়ারকে অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। দেশটিতেই স্থায়ী চাকরির ও নাগরিকত্ব নিয়ে পরিবারসহ থাকতে পারবেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য বর্তমানে স্নাতক ও স্নাতকত্তোরের জন্য আইএলটিএস-এ সাড়ে ছয় স্কোর লাগবে।

এছাড়া, দেশটিতে কয়েকটি বৃত্তির ব্যবস্থা আছে। ভেনিয়ার কানাডা গ্রাজুয়েট ক্ললারশিপ তার একটি। কানাডায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক এমন শিক্ষার্থীদের কাছে সর্বাধিক জনপ্রিয় এ বৃত্তিটি। দেশটির সরকার এ বৃত্তি দিয়ে থাকে। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে বছরে ৫০ হাজার কানাডীয় ডলার প্রদান করা হয়। সাধারণত পিএইচডি গবেষণার জন্য এ বৃত্তি দেয়া হয়ে থাকে।

এছাড়াও আপনি সেখানে পার্টটাইম চাকরির সুযোগ পাবেন। সেখান থেকে প্রতিমাসে সর্বনিম্ন ৫০-৭০ হাজার টাকা মাসিক সম্মানি পাবেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com