অন্য সময়ের তুলনায় প্রায় ফাঁকা রাজধানী। নগরের বাসিন্দাদের গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন তাপমাত্রা কমলেও গরম কতটা কমবে, সেই নিশ্চয়তা নেই। তারপরও ঈদ বলে কথা। গরম বা বৃষ্টি যা–ই হোক, ঈদের দিন নগরবাসীর অনেকেই নতুন পোশাক পরে পরিবার–পরিজন নিয়ে ঘুরতে বের হন। জাতীয় চিড়িয়াখানাসহ কয়েকটি জায়গা ঈদের দিন বেশ জমজমাট থাকে।
ঈদের দিন পরিবার–পরিজন নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানার পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর ঈদের দিনসহ ছুটির তিন দিন গড়ে এক লাখের বেশি দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় এসেছিলেন। এবার গরমে সংখ্যাটা একটু কমতে পারে বলে মনে হচ্ছে। তবে যাঁরা আসবেন, তাঁদের নিরাপত্তায় যাতে কোনো ঘাটতি না হয়, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতাসহ সার্বিক বিষয়ে নজর দেওয়া হয়েছে। সব মিলে বলা যায়, দর্শনার্থীদের স্বাগত জানানোর জন্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত আছে। ঈদের দিন জাতীয় চিড়িয়াখানা সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা।
মেট্রোরেল চালুর পর যাত্রীরা এবার প্রথমবার ঈদের দিন মেট্রোরেলে ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন। ঈদের দিন মেট্রোরেল চলবে বেলা দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। এ ছাড়া প্রতিদিন আগের মতোই সকাল আটটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের নামাজ পড়ে যাত্রীরা যাতে ভ্রমণ করতে পারেন, সে জন্য ঈদের দিন বেলা দুইটা থেকে মেট্রোরেল চলবে। ঈদের দিন অন্যান্য যানবাহন কম থাকে, এবার প্রচণ্ড গরম, সে হিসেবে যাত্রীরা মেট্রোরেলে স্বচ্ছন্দে ভ্রমণ করতে পারবেন।
মাহফুজুর রহমান জানালেন, স্টেশনের ডিসপ্লেতে এখন যাত্রীদের রমজানের শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে। ঈদের দিন ডিসপ্লেতে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হবে।
মেট্রোরেলের পল্লবী স্টেশনের কন্ট্রোলার মিশুক কুমার দে প্রথম আলোকে বলেন, এবার ঈদের দিন মেট্রোরেলে যাত্রীর চাপ থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে। স্টেশনগুলো যাত্রীদের স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত আছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের শ্যামলীর ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু মেলাটি অন্য দিনের মতো ঈদের দিনও খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এ তথ্য জানিয়েছেন এখানকার জ্যেষ্ঠ গেমস অপারেটর হামিম আলম।
এ ছাড়া ঈদের দিন জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ঘোড়ার গাড়িতে চড়া, চন্দ্রিমা উদ্যানসহ বিভিন্ন উদ্যানে খানিকক্ষণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ তো থাকছেই।
ঈদের দিন অনেকেই ঘুরতে যান শাহবাগের বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে। তবে নগরবাসী এবার সে সুযোগ পাচ্ছেন না। জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সরকারি ছুটির দিনে জাদুঘর খোলা থাকে। তবে এবার ঈদের ছুটিতে কর্মীদের বাড়ি যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে ঈদের দিন জাদুঘর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ছুটির পর যথারীতি খোলা থাকবে জাদুঘর।
শিশু–কিশোরদের প্রধান আগ্রহের জায়গা ছিল শাহবাগে সরকারিভাবে চালু হওয়া দেশের প্রথম শিশুপার্কটি। তবে কয়েক বছর ধরে শিশুপার্কটি বন্ধ আছে। শিশুপার্কের উন্নয়নে কাজ চলমান বলে জানালেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। কবে নাগাদ এটি চালু হবে, তা–ও বলা সম্ভব নয় বলে জানালেন এই কর্মকর্তা। তবে ঈদের দিন কলাবাগান মাঠ ও মাঠসংলগ্ন শহীদ শেখ রাসেলসহ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অন্য যে শিশুপার্কগুলো আছে, তা চালু থাকবে।