ইউরোপ এবং এশিয়া জুড়ে বিস্তৃত তুর্কির ইস্তাম্বুল শহর। অটোমান সম্রাজ্য থেকে শুরু করে অনেক ইতিহাস সমৃদ্ধ এই শহর। ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক, প্রাণবন্ত দৃশ্য এবং মনোরম রন্ধনশৈলীর জন্য বিখ্যাত ইস্তাম্বুল। এই শহরটি প্রাচ্য এবং পশ্চিমা প্রভাবগুলোর অনন্য সংমিশ্রণ। ইস্তাম্বুলে গেলে আপনি একটি অবিস্মরণীয় ছুটির অভিজ্ঞতা পাবেন। এখানকার বিখ্যাত ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং চমকপ্রদ ল্যান্ডস্কেপ মনোমুগ্ধকর মিশ্রণ সরবরাহ করে। ইস্তাম্বুলে থাকাকালীন সময়ে আপনি সুন্দর স্মৃতি তৈরি করতে পারবেন। এই শহরে গেলে অবশ্যই যে জায়গাগুলো দেখবেন তার একটি তালিকা দেওয়া হল।
হাজিয়া সোফিয়া
হাজিয়া সোফিয়া আইকনিক ল্যান্ডমার্কটি মূলত ষষ্ঠ শতাব্দীতে ক্যাথেড্রাল হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। এর পরে অটোমান সাম্রাজ্যের সময় এটি একটি মসজিদে রূপান্তরিত হয়েছিল। বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। হাজিয়া সোফিয়া বাইজেন্টাইন এবং অটোমান স্থাপত্য শৈলীর একটি চিত্তাকর্ষক মিশ্রণ প্রদর্শন করে। এর বিশাল গম্বুজ, জটিল মোজাইক এবং সমৃদ্ধ ইতিহাস পর্যটকদের আকর্ষণ করে। মানব সৃজনশীলতা এবং স্থাপত্য প্রতিভার একটি অসাধারণ প্রমাণ এটি। ইস্তাম্বুলের সমৃদ্ধ ইতিহাসের একটি আইকনিক প্রতীক। এটি ইস্তাম্বুলের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। হাজিয়া সোফিয়া ল্যান্ডমার্কটি শহরের খ্রিস্টান থেকে ইসলামে রূপান্তরের প্রতিনিধিত্ব করে।
সুলতান আহমেদ মসজিদ
সুলতান আহমেদ মসজিদ উসমানীয় স্থাপত্যর একটি সেরা শিল্পকর্ম। নীল রঙের টাইলস দিয়ে নির্মিত হওয়ার কারণে এটি ব্লু মস্ক নামেও পরিচিত। হাজিয়া সোফিয়ার ঠিক বিপরীতে অবস্থিত এই মসজিদটি। মসজিদের ছয়টি মিনার এবং চমৎকার গম্বুজ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেবে আপনাকে।
তোপকাপি প্রাসাদ
তোপকাপি প্রাসাদ পরিদর্শনের মাধ্যমে উসমানীয় সুলতানদের জগতে প্রবেশ করতে পারবেন। এই বিশাল প্রাসাদটি অটোমান সুলতানদের প্রাক্তন বাসস্থান হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তুর্কি ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ের শিল্প, নিদর্শন এবং সম্পদের চমৎকার সংগ্রহ রয়েছে এখানে। এই প্রাসাদের চারপাশে রয়েছে সবুজ বাগান। যেখান থেকে আপনি বসফরাসের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। দর্শনার্থীরা এই প্রাসাদের বিলাসবহুল কক্ষগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। অটোমান সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসে আপনাকে বিমোহিত করতে পারে। তোপকাপি প্রাসাদটি অটোমান যুগের মহিমার একটি প্রমাণ।
গ্র্যান্ড বাজার
বিশ্বের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম বাজারগুলোর মধ্যে একটি গ্র্যান্ড বাজার। এখানে প্রায় ৪হাজারেরও বেশি দোকান রয়েছে। এখানে তুর্কির ঐতিহ্যবাহী গহনা, সিরামিক, মশলা, কারুশিল্পর দোকান রয়েছে। পুরো বাজারটি জুড়ে অনেক অলিগলি বিস্তৃত। আপনি এখানে গেলে হারিয়েও যেতে পারেন। ইস্তাম্বুল গেলে অবশ্যই এই ঐতিহাসিক বাজারের প্রাণবন্ত পরিবেশের অভিজ্ঞতা নিন।
বসফরাস ক্রুজ
বসফরাস ক্রুজ ভ্রমণ করলে ইস্তাম্বুলের প্রাসাদ, মসজিদ এবং সেতু আপনাকে মুগ্ধ করবে। বসফরাসের তীরে অবস্থিত ইয়ালিস নামে পরিচিত মনোরম ওয়াটারফ্রন্ট ম্যানশনগুলোও দেখতে পাবেন। এই জলপথটি আপনাকে এশিয়া থেকে ইউরোপে নিয়ে যাবে। আপনি এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে চলে যেতে পারবেন। এ যেন এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা!
সুলতানাহমেট স্কয়ার
সুলতানাহমেট স্কয়ার একটি ঐতিহাসিক চত্বর। যা স্থানীয় এবং পর্যটকদের সমানভাবে আকৃষ্ট করে। হাজিয়া সোফিয়া এবং নীল মসজিদের কাছেই অবস্থিত সুলতানাহমেট স্কয়ার। এখানকার ওবেলিস্কের থিওডোসিয়াস ও জার্মান ঝর্ণা দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে।
সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস