ইমাম, মুয়াজ্জিন, ইসলাম ধর্ম প্রচারকারী এবং ধর্মীয় গবেষকরা দুবাইতে গোল্ডেন ভিসা পাবেন। ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম গত শনিবার এ ঘোষণা দিয়েছেন। দুবাই-ভিত্তিক পত্রিকা খালিজ টাইমস এ তথ্য দিয়েছে।
ঘোষণায় বলা হয়েছে ইমাম, মুয়াজ্জিন, ধর্ম প্রচারক, মুফতি এবং ধর্মীয় গবেষকদের গোল্ডেন ভিসা দেয়া হবে, যারা এ কাজে ২০ বছর পূর্ণ করেছেন।
সেক্ষেত্রে তাদের দুবাইতে থাকার জন্য ১০ বছর মেয়াদি ভিসা দেয়া হবে। এর পাশাপাশি তাদের ঈদ-উল-ফিতরের বোনাসও দেয়া হবে।
দুবাইয়ের নেতার অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সত্যিকার ধর্ম প্রচার এবং মূল্যবোধ ও নীতির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমাজকে এগিয়ে নেবার স্বীকৃতি হিসেবে তাদের এই সুবিধা দেয়া হচ্ছে।”
দুবাই থেকে প্রকাশিত পত্রিকা দ্য অ্যারাবিয়ান পোস্ট পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সাইফুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসার স্কিম ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে। এখন ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং ইসলামিক স্কলারদের দেয়া হচ্ছে গোল্ডেন ভিসা।
“যারা দুবাইতে অলরেডি বিভিন্ন মসজিদের সাথে কর্মরত আছেন তাদের জন্য এই ভিসা,” বলেন মি. রহমান।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাইরে যারা আছেন তারা গোল্ডেন ভিসার আওতায় সেখানে যেতে পারবেন কিনা সেটি পরিষ্কার নয়।
তিনি বলেন, যারা দীর্ঘ সময় দুবাইতে ছিলেন এবং যাদের কোন অপরাধের রেকর্ড নেই তাদের গোল্ডেন ভিসা দেয়া হচ্ছে।
“এদেরকে গোল্ডেন ভিসার আওতায় আনা হচ্ছে যাতে ট্যালেন্টেড যারা, তারা যাতে এখানে দীর্ঘমেয়াদি নির্বিঘ্নে থাকতে পারে। তারা যাতে এদেশ থেকে চলে না যায়,” বলেন মি. রহমান।
দুবাইয়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পরপর ভিসা নবায়ন করতে হয় এবং মেডিকেল টেস্ট দিতে হয়।
নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান তার কর্মীদের জন্য ভিসার আবেদন করে।
গোল্ডেন ভিসার আওতায় সরকার ১০ বছরের ভিসা দিয়ে দিচ্ছে।
তখন ভিসা নবায়ন করার কোন প্রয়োজন হয় না এবং এক জায়গায় চাকরী ছেড়ে অন্য জায়গায় স্বাধীনভাবে যেতে পারবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দুবাইয়ের নেতা শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম ২০১৯ সালে গোল্ডেন কার্ড ভিসা পদ্ধতি চালু করেছিলেন।
এর আওতায় চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, এবং স্কুলে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশাদারদের পরিবারসহ ১০ বছর থাকার সুযোগ দেয়া হয়।
মূলত অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে বিদেশি বিনিয়োগ আনার একটি অনানুষ্ঠানিক প্রতিযোগিতা চলছে মধ্যপ্রাচ্যের তিন প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে।
সুনির্দিষ্ট কিছু ক্রাইটেরিয়ার ভিত্তিতে ভিসা ইস্যু করে ইউএই কর্তৃপক্ষ, যার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রের মেধাবীরা সেখানে বসবাস, চাকরী ও অধ্যয়ন করতে পারবেন।
সামনে শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন খাতের মেধাবী পেশাজীবীরা এর আওতায় আসবেন।
দুই মিলিয়ন অর্থাৎ ২০ লাখ দিরহামের প্রপার্টি কিনলে বা সমপরিমাণ অর্থ সেখানকার ব্যাংকে রাখলেই এ ভিসার জন্য আবেদন করা যায়।
ভিসাটি ১০ বছরের জন্য বৈধ ও নবায়নযোগ্য।
এটি পেলে ছয় মাসের মধ্যে একাধিকবার সেদেশে প্রবেশ করা যাবে। ইস্যু করা হবে রেসিডেন্ট পারমিটও।
ইউএইর বাইরে থাকলেও ভিসাটি বাতিল হবে না। আর ভিসাধারীরা যে কোন সংখ্যক গৃহকর্মী স্পন্সর করতে পারবেন।
ভিসাধারী ব্যক্তির মৃত্যু হলে তার পরিবারের সদস্যরা সেখানে থাকতে পারবেন।