দেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি এয়ারলাইনন্স ইউএস-বাংলার বহরে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে নেক্সট জেনারেশন এটিআ-৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট। সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ এই এয়ারক্রাফট এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, মালোশিয়ান এয়ারলাইনন্স, মালিন্দো ,লাইনস এয়ার ব্যবহার করে থাকে।
দেশে প্রথমবারের মতো অভ্যন্তরীন রুটে সম্পূর্ণ নতুন উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউএস- বাংলা যাত্রীসেবায় চমক দেখাবে বলে জানালেন এয়ারলাইনসটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। কালের কন্ঠকে
দেওয়া এক সাক্ষাৎকার তিনি বলেন, বহরে দুটি এটিআর-৭২-৬০০ উড়োজাহাজ পাশাপাশি শিগরিই আরো দুটি উড়োজাহাজ যুক্ত হবে।
এতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের প্রতি যাত্রীদের আস্থা ও গ্রহণযোগ্য তা আরো বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। ২০১৪ সালের
১৭ জুলাই ‘ফ্লাই ফাষ্ট-ফ্লাই সেইফ’ ¯েøাগানে দুটি ড্যাশ ৮-৪০০ ও দুটি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে। আরো দুটি
এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট এলে এর মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ১১ টি।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পর ইউএস-বাংলা দেশের বেসরকারি এয়ারলাইনসের মধ্যে সর্ববৃহৎ। দেশের সাতটি অভ্যরীণ গন্তব্যে ইউএস-বাংলা বেশিসংখ্যক ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
এছাড়া ঢাকা কলকাতা, চেন্নাই, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, ব্যাংকক, গুয়াংজু, মাস্কাট ও দোহায় নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান সংস্থাটি।
আপাতত নতুন গন্তব্য যাওয়ার পরিকল্পনা নেই বলে জানান আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, ‘আমার বর্তমানে যেসব
আন্তর্জাতিক গন্তব্য ফ্লাইট পরিচালনা করছি, সেগুলো আরো মনোযোগ বাড়াব। সময়ানুবর্তিতা, নিরাপত্তা, নির্দেশনা এবং
কর্মীদের দক্ষতার কারণে আমাদের অনটাইম পারফরম্যানন্স ৯৮.৭ শতাংশ।
অনটাইম পারফরম্যানন্সসহ যাত্রীসেবায় মান সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে চাই। ব্যবসায়িক সম্ভবনা দেখলে ভবিষ্যতে নতুন রুটে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করব।’ দেশের এভিয়েশন খাতের বিকাশে সরকারের আরো নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন এই উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, ‘উড়োজাহাজ পরিচালনায় বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশ।
আবার সবচেয়ে ভাড়াও কম এখানে। এমন সমীকরণে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি ছাড়া এই খাত র্দীঘ মেয়াদে টেকসই হবে না। আমরা অন্য ব্যবসা থেকে মুনাফা করে এনে এয়ারলাইনস ব্যবসা টিকিয়ে রাখছি। এই খাতে দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো না থাকলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা বাইরে চলে যেত।
দেশের পোশাকসহ বিভিন্ন খাত রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা পেয়ে থাকে। প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরও আমরা অবহেলিত।’ দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইউএস-বাংলা নিরাপত্তায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে জানিয়ে মোহাম্মদ আবদুল্লা
আল মামুন বলেন, ‘ইউএস-বাংলা এয়ারলানইস সব সময় নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে থাকে, যা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।
বিশ্বের খ্যাতনামা এয়ারলাইনসগুলোর সেফটি রেটিংস নিয়ে পরিচালিত ‘এয়ারলাইন রেটিংসডটকম’এ স্থান করে নিয়েছে
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। এই রেটিংসটি সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালার ভিত্তিতে প্রদান করা হয়ে থাকে। সরকারি কর্তৃপক্ষের
অডিট রিপোর্ট, এভিয়েশন গভর্নিংবডির নিজস্ব অডিট, এয়ারলাইনসের নিজেস্ব সেফটি ডাটা, পাইলট ইঞ্জিনিয়ারদেও
ট্রেনিং ও দক্ষতা, এয়ারক্রাফটের বয়স ও মডেল বিবেচনায় নিয়ে এই রেটিং দেওয়া হয়। তারা গত পাচঁ বছর ধরে পরিচালিত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের পরিসংখ্যান এবং কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করেছে এবং সাত তারকাগুলোর সর্বোচ্চ রেটিং মানের মধ্যে নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে ইউএস-বাংলাকে পূর্ণ পরিষেবা ক্যারিয়ার হিসেবে রেট দিয়েছে।
সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস এমডি বলেন, ‘ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস বাংলাদেশের পরিচয়
বহনকারী একটি প্রতিষ্ঠান। এ দেশের মানুষের আশা-আকাক্ষা ও সম্ভাবনা ধারন করে আমাদের পথ চলা। আমরা আমাদের সম্মানিত যাত্রী, ট্রাভেল এজেন্ট, করপোরেট বডি ও শুভানুধ্যায়ী- যাঁরা নেপাল দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে আমাদের পাশে থেকে আমাদের ওপর আস্থা রেখে আমাদের সাহস জুগিয়েছেন, আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’