স্থল ও সমুদ্রপথে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে আইওএম৷
২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন রুটে আসা বাংলাদেশিদের তথ্য তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনটিতে৷ এর মধ্য দিয়ে ভূমধ্যসাগর,পশ্চিম বলকান এবং পূর্ব ইউরোপের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট করা বাংলাদেশিদের বড় একটি সংখ্যা উঠে আসলেও স্বাভাবিকভাবে এটি সম্পূর্ণ আগমনের পরিসংখ্যান নয়।
সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কর্তৃপক্ষের নথিভুক্ত করা তথ্য সংগ্রহ করে পরিংখ্যানটি তৈরি করেছে আইওএম ডিটিএম ইউরোপ শাখা। ইইউ এর অর্থায়নে ডিসপ্লেসমেন্ট ট্র্যাকিং ম্যাট্রিক্স (ডিটিএম) এমন একটি প্রকল্প যার সাহায্যে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানের অভিবাসন ও বাস্তুচ্যুতি সংক্রান্ত মানবিক উন্নয়ন প্রচেষ্টার কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করা হয়।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পশ্চিম বলকান ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো দিয়ে ১০ হাজার ৪ জন বাংলাদেশি ইইউতে এসেছেন। যাদের মধ্যে ক্রোয়েশিয়া হয়ে তিন হাজার ২৩৭ জন, বসনিয়া-হ্যার্ৎসেগোভিনা হয়ে দুই হাজার ১৬১ জন, স্লোভেনিয়া হয়ে দুই হাজার ৭৫ জন, আলবেনিয়া হয়ে এক হাজার ৫৫ জন, মন্টিনিগ্রো হয়ে ৬৯৫ জন, রোমানিয়া হয়ে ৫২৬ জন, নর্থ মেসিডোনিয়া হয়ে ১৪৫ জন, সার্বিয়া হয়ে ১২৯ জন এবং কসোভো হয়ে এসেছেন ১৪ জন।
আইওএম-এর পরিসংখ্যানে, বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীদের প্রায় ৩৮ শতাংশ স্থলপথ অর্থাৎ পশ্চিম বলকান ও পূর্ব ইউরোপের মধ্যে দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে এসেছেন৷
সমুদ্রপথে এসেছেন বেশিরভাগ বাংলাদেশি
স্থলপথে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি ইইউতে প্রবেশ করলেও আইওএম পরিসংখ্যানের ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশ লোক ভূমধ্যসাগর, এজিয়ান সাগরসহ অন্যান্য সামুদ্রিক রুটে ইইউতে প্রবেশ করেছেন।
সামুদ্রিক রুটে আসা অভিবাসীরা সবচেয়ে বেশি আসেন ইটালিতে। ২০২২ সালে মোট ১৫ হাজার ২২৮ জন বাংলাদেশি ইটালিতে এসেছেন।
এছাড়া মাল্টায় ২২৯ জন, স্পেনে ১১৭ জন এবং গ্রিস হয়ে আসা ৬জনকে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
এসব রুট ছাড়াও ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসে এসেছেন ৯০৭ জন বাংলাদেশি। তবে সাইপ্রাসে আসা ব্যক্তিরা বেশিরভাগই স্থলপথ ব্যবহার করে থাকেন।
আইওএম এর প্রতিবেদনে পশ্চিম বলকান এবং পূর্ব ইউরোপের সীমান্তে আসা একই ব্যক্তিদের সংখ্যা বারবার গণনা হওয়ার জটিলতা এড়াতে পুরো জোনের সংখ্যা একত্রে করা হয়নি। তাই দেশভিত্তিক সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে। কারণ এ অঞ্চলে থাকা ব্যক্তিরা মধ্য ও উত্তর ইউরোপে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কয়েকটি দেশ অতিক্রম করে থাকেন।
এই প্রতিবেদনেও বাইরেও বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি গত বছর ইইউতে প্রবেশ করে থাকতে পারেন। কারণ বিমানযোগে আসা ও অন্য প্রচলিত মাধ্যমে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা এখানে যুক্ত করা হয়নি। অনিয়মিত অভিবাসনের প্রাপ্ত পরিসংখ্যানের ওপর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা।