রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

আষাঢ় শেষে আসবে শ্রাবণের বারিধারা

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪

দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল আষাঢ় মাস। বর্ষা শুরুর এই মাসে কি কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা পেয়েছি আমরা? পেলেও তা কতটুকু ছিল? তাপপ্রবাহের আতঙ্ক থেকে বের হতে পেরেছি কি? মনে হয় পারিনি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, বৃক্ষরোপণ করে তাপমাত্রা কমাতে ভূমিকা রাখবো। তাই নিজের কাছেই প্রশ্ন, বর্ষার শুরুতেই আমরা কতগুলো গাছের চারা রোপণ করতে পেরেছি?

আষাঢ় শেষে আসে শ্রাবণ মাস। এই ‘শ্রাবণ’ বাংলা সনের চতুর্থ এবং ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শকাব্দের পঞ্চম মাস। শ্রাবণ মাস শেষেই বর্ষার সমাপ্তি ঘটে। আর এই শ্রাবণ নামটি এসেছে ‘শ্রবণা’ নক্ষত্রে সূর্যের অবস্থান থেকে। চাঁদের পূর্ণ একটি পরিক্রমকালের সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে। মাসের ধারণার উদ্ভব হয় ‘চাঁদের কলা’ থেকে। এ ধরনের মাসকে ‘চান্দ্র মাস’ বলা হয়।

ভারতে প্রচলিত হিন্দু সৌর পঞ্জিকানুসারে বঙ্গাব্দের মাস হিসেবে শ্রাবণ মাস ৩১ দিনের। এ মাসে কর্কট রাশিতে সূর্য অবস্থিত থাকে। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুয়ায়ী, বর্ষা হচ্ছে বাংলা বছরের দ্বিতীয় ঋতু। যেখানে ‘আষাঢ়’ ও ‘শ্রাবণ’ এই দুই মাসজুড়ে বর্ষাকাল ব্যাপৃত থাকে। বাংলা বছরে বর্ষার আগের ঋতুটি রৌদ্রতপ্ত গ্রীষ্ম আর পরের ঋতুটি শ্যামল শরৎ।

বাংলাদেশে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে তথা বর্ষাকালে বিলে ফোটে শাপলা। ডাঙায় ফোটে কদম, কামিনী, কেয়া, কৃষ্ণচূড়া, ক্যাজুপুট, গগনশিরীষ, নাগেশ্বর, মিনজিরি, সেগুন, সুলতান চাঁপা, স্বর্ণচাঁপা নামের ফুল। ঋতুর এই ঐশ্বর্যের মধ্যেও শ্রাবণের বারিধারা কি আমাদের সিক্ত করতে পারবে?

কেননা ভরা বর্ষাকালেও বাংলাদেশের মানুষকে ভ্যাপসা গরমের যন্ত্রণা সইতে হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে বর্ষাকালেও মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখন বর্ষা আর গ্রীষ্মকে আলাদা করে চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে এই বর্ষায় ঝরোঝরো বৃষ্টির বদলে দেশের কোথাও কোথাও তাপপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

ফলে গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে আমাদের কণ্ঠে আর উচ্চারিত হয় না, ‘আষাঢ় শ্রাবণ/ মানে না তো মন/ ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে/ তোমাকে আমার মনে পড়েছে।’ কিংবা বিরহ কাতর হয়ে গভীর রাতে গুনগুন করে গেয়ে ওঠে না মন, ‘শাওন–রাতে যদি স্মরেণ আসে মোরে/ বাহিরে ঝড় বহে, নয়নে বারি ঝরে।’

সুতরাং আমাদের কামনা থাকবে, শ্রাবণের বারিধারায় সিক্ত হবে আমাদের পরিবেশ। আর্দ্র হবে হৃদয়। তাপমাত্রার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে শীতল হয়ে উঠবে শ্রাবণ আকাশ। ভালোবাসায় ভরে উঠবে মানুষের মন। সবুজে-শ্যামলে ভরে উঠবে চারপাশ। তাই শ্রাবণ আসুক আপন মহিমায়। কবির ভাষায় বলতে চাই, ‘শ্রাবণের বারিধারা ঝরিছে বিরামহারা।/ বিজন শূন্য-পানে চেয়ে থাকি একাকী।/ দূর দিবসের তটে মনের আঁধার পটে/ অতীতের অলিখিত লিপিখানি লেখা কি।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com