আফগানিস্তান। দেশটির নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে যুদ্ধবিধ্বস্ত দারিদ্রপীড়িত একটি দেশের ছবি। কিন্তু দেশটির রুক্ষ মাটির নিচে কী পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে তা কল্পনা করাও সম্ভব না। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের জরিপ বলছে- দেশটির উষর মাটির নিচে রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের প্রকৃতিক সম্পদ। এগুলো যদি সঠিকভাবে উত্তলোন করা যায়- তাহলে মাত্র এক দশকেই উন্নত দেশের কাতারে উঠে আসবে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। ইসলামি আমিরাতের রুক্ষ মাটির নিচে রয়েছে- আইরন, কপার, গোল্ড, লিথিয়াম, রেয়ার আর্থ, কোবাল্ট, ইউরেনিয়াম, বক্সাইট, সালফার ও গেইমসস্টোনের মতো মহামূল্যবান সব প্রাকৃতিক সম্পদ।
২০১০ সালে ভূতাত্বিকদের মূল্যায়ণ নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন। যেখানে লিথিয়ামের বিপুল মজুদের জন্য আফগানিস্তানকে আগামীর সৌদি আরব বলে আখ্যা দেওয়া হয়।
ইসলামের পূণ্যভূমি সৌদি আরব যেমন অপরিশোধিত তেলের মাধ্যমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে ধনী দেশ হয়ে উঠেছিল, লিথিয়ামের মাধ্যমে আফগানিস্তানও মাত্র এক দশকেই সমৃদ্ধ দেশ হতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছিল পেন্টাগনের ওই রিপোর্টে।
আফগানিস্তানের খনি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ২০১৯ সালের একটি প্রতিবেদনে বলায়- দেশটিতে কপার বা তামার রিজার্ভ প্রায় ৩০ মিলিয়ন টন। একই বছরে মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত আফগানিস্তানের খনিগুলোর রোডম্যাপে বলা হয়েছে যে অনাবিষ্কৃত কপারের পরিমাণ আরও ২৮.৩ মিলিয়ন টন। অর্থাৎ দেশটিতে মোট কপারের পরিমাণ প্রায় ৬০ মিলিয়ন বা ৬ কোটি টন। বর্তমানে যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। দিন যত যাবে, এর মূল্য ততই বাড়তে থাকবে।
আল জাজিরার তথ্যমতে, আফগানিস্তানের আকরিক লোহার পরিমাণ আনুমানিক ২.২ বিলিয়ন মেট্রিক টন। বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী এর ২৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। স্টিল তৈরির মূল উপকরণ এই আইরন ওর বা আকরিক লোহা। জানা গেছে, রাজধানী কাবুল থেকে ১৩০ কিলোমিটার পশ্চিমের পার্বত্য বামিয়ান প্রদেশে অবস্থিত হাজিগাক খনি। যেখানে অন্তত ১.৭ বিলিয়ন টন আয়রন ওরের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাকিটা পাওয়া যায় দেশটির বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খনিগুলোতে।