অনেকদিন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না। হঠাৎ বিডি ইন কুয়েত পেজের অ্যাডমিন শহিদুল সবাইকে আমন্ত্রণ করলেন, কুয়েত আরব সাগরে ঘুরতে যাবেন। ‘কুয়েত প্রবাসী’ গ্রুপ এবং ‘বিডি ইন কুয়েত’ গ্রুপের সকল সদস্য তাতে সম্মতি জানালেন।
সবকিছু ঠিকঠাক রেখে সাইফ রুবেল, জনি, আমিনুল, সিফাত, শহিদুল, মামুন, রুবেল হাসানসহ আমরা প্রায় ৮ জন মিলে রাত ৯টায় রওয়ানা হলাম বিনায়দা বিচে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল রাতের খানা ওখানে খাব। তার জন্য যা যা প্রয়োজন সব নিয়ে নিলাম। রাত ১০টায় আমরা পৌঁছে গেলাম বিনায়দা।
ওখানে আমাদের পরিচিত এক চাচা ছিল। যিনি ওই জায়গায় ডিউটি করেন। আমরা সবাই তার বাসায় উঠলাম। আমাদের ইচ্ছা রাতের সৈকত এবং সূর্যোদয় দেখব। জনি এবং মামুন ভাইর রান্না করা রাতের সুস্বাদু খানা শেষ করে সবাই সৈকতে নামলাম। তখন রাত ২টা বাজে। আমরা যে বাসায় উঠছি সেটা একদম সৈকতের পাশাপাশি ছিল।
এখানে কুয়েতের স্থানীয় বাসিন্দারা নিজ বাড়ি থাকা সত্বেও আরব সাগরের কূলে দ্বিতীয় বাড়ি তৈরি করেন। যাতে সবসময় এসে সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে। যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। ঢেউয়ের গর্জন মন কেড়ে নেয়ার মতো। জলরাশির খেলা আর হিমেল ঠাণ্ডা হাওয়া ধেয়ে আসছে দু’পাশ থেকে।
শুনশান নীরবতায় রাতের সমুদ্র যেন আলাদা রূপ ধারণ করলো। ঢেউগুলো যেন আরও কাছে এসে আঁছড়ে পড়ছে। রাতের আঁধারে ছবি তোলা আমাদের জন্য সম্ভব হয়নি। কিছুক্ষণ পর ফজরের আজান।
নামাজ শেষ হতে না হতে দেখা গেল দিনের আলোয় আলোকিত হতে যাচ্ছে চারপাশ। কিছুক্ষণ পর সূর্য উঠবে। আমরা সবাই নেমে পড়লাম সমুদ্রে। আমাদের জন্য সমুদ্রের কূলে একটা নৌকা রাখা ছিল। ওটা নামিয়ে দিলাম সাগরে। এবার কেউ সাঁতার কাটছে কেউ নৌকা চালাচ্ছে আবার কেউবা ছবি তুলছে।
সবাই নামলেও আমাদের মাঝে থাকা রুবেল ভাই পানিতে নামেনি। তিনি সাঁতার জানে না, তাই ভয় পাচ্ছে। সেজন্য ভিডিও নিয়ে ব্যস্ত। সূর্যোদয়ের এই মনোরম দৃশ্যটা তিনি ক্যামেরাবন্দি করে রাখলেন।
অনেকক্ষণ সৈকতে মজা-মাস্তিতে মেতে উঠছে সবাই। গরমে শীতল পানিতে গোসল করা, সাঁতার কাটা যেন এক অন্যরকম অনুভূতি। ধীরে ধীরে সূর্যের তাপ বাড়তে লাগলো। আমরা আর বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না। সবাই মিলে কয়েকটি গ্রুপ ছবি তোলে বাসায় এসে পুনরায় গোসল করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
ঘুম থেকে উঠে জুমার নামাজ পড়ে খানা খেয়ে যে যার কর্মস্থলে রওয়ানা দিলাম। প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে একটি দিন আরব সাগরে ভ্রমণ আমাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।