রুক্ষ মরুভুমিতে শ্যামল স্পর্শ। যেন ধূসর ক্যানভাসে রঙ তুলিতে আঁকা বাংলাদেশের কৃষির পোর্ট্রেট। এটি কোনো মরীচিকা নয়, মরুর বালিতে এমনই এক কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন প্রবাসী এক বাংলাদেশি।
আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় এই খামারে চাষ হচ্ছে লাউ, ধনে, মুলা, লালশাকসহ হরেক রকম সবজি।
মরুর বুকে এক চিলতে সবুজ। ধুধু বালুর পাহাড়ে ঘেরা এই ৫০ হেক্টর সবুজই সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় কৃষি খামার।
যার আইল ধরে হাটলে চোখ আটকে রাখে মানব শরীরের রক্তের অন্যতম উৎস লালশাক। দেখা মেলে সবুজ পাতা মুড়িয়ে পুষ্ট হয়ে থাকা ক্যান্সার প্রতিরোধী বাঁধাকপি। ফুলে ফলে শোভিত আছে প্রোটিন-ভিটামিনের ভান্ডার শিম।
তবে খেতের বিস্তার অংশ জুড়ে শোভা পাচ্ছে ওষুধি ধনেপাতা আর থানকুনি। একটি দুটি নয়। এই বাগানে লাউ, মিস্টি কুমড়া-মুলা, ল্যাটুসসহ চাষ হচ্ছে অন্তত ৩০ ধরনের শাকসবজি।
পাশেই ঠায় দাড়িয়ে মুরুর প্রতিক সারি সারি খেুজর গাছ। এই বাগানেই দেখা মেলে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের। যাদের কেউ ছেটাচ্ছেন ইউরিয়া, কেউবা দিচ্ছেন সেচ। কেউবা তুলছেন শাকসবজি। কাজের মাঝে কথা হয় তাদের সঙ্গে।
এ বিষয়ে তারা বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে এখানে এসেছি কৃষি কাজ করতে। সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি আমরা সেগুলো বিক্রি করি। এখানে লাউ, মিস্টি কুমড়া-মুলা, ধনেপাতা, ল্যাটুসসহ অন্তত ৩০ ধরনের শাকসবজি চাষ হচ্ছে।
খামারের মালিক মোরামকো গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজা মল্লিক জানান, মে-জুন-জুলাই-আগষ্ট ছাড়া সারা বছরই মরুর বুকে ফসল ফলাই। আমাদের ৪০টি ফার্ম রয়েছে।
এই ফার্মটি আমাদের নিজস্ব। বাকি ৩৯টি কন্ট্রাক্ট এর উপর চালাই। সম্পূর্ণ আরব-আমিরাতের সুপার মার্কেট গুলোতে আমরা সবজি সাপ্লাই দেই। এ বিষয়ে প্রবাসী ব্যবসায়ী কৃষিবিদ নাসির উদ্দিন কাওসার জানান, আরবের মরুভূমিতে কয়েকশ খামার রয়েছে।
চাষাবাদে সুনাম থাকায় বেশির ভাগ বাগানই এখন বাংলাদেশীদের দখলে।
ইউএইতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর বলেন, দক্ষ বাংলাদেশীরা দেশটিতে আসলে, খামারগুলোতে শ্রমিকের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্ব নেয়া সম্ভব।