1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
আমেরিকা কি চীনা মডেলে এগোচ্ছে?
বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৮ অপরাহ্ন
Uncategorized

আমেরিকা কি চীনা মডেলে এগোচ্ছে?

  • আপডেট সময় রবিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আফগানিস্তানে ২০ বছরের যুদ্ধে ক্ষান্ত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা দেশটি ছাড়ার পর সেখানে এখন তালেবান সরকার।

এসব ঘটনার নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন মত দিচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র নতুন এক বিশ্ব গড়তে যাচ্ছে, যেখানে যুদ্ধ থাকবে না, আধিপত্য সৃষ্টির পন্থা হবে ভিন্ন কিছু। যদিও সেই পথে অনেক আগেই ঢুকে পড়েছে চীন। নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় শুধু যুদ্ধই যে প্রধান পন্থা নয়, সেটা হয়তো চীনের কাছ থেকে বুঝতে শুরু করেছে মার্কিন সরকার।

টুইন টাওয়ারে হামলার পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ যুক্তরাষ্ট্রকে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছেন। এই হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তিনি বলেছিলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই শত্রুকে জয় করতে সমস্ত সম্পদ ব্যবহার করবে। ’

বুশের শুরু করা সেই দীর্ঘ যুদ্ধে তার দেশ যে এখন ক্লান্ত, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সিদ্ধান্তগুলো তাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। যুদ্ধ নয়, তিনি এখন ‘ঐক্যের ডাক’ দিচ্ছেন। যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্ব নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার নীতি থেকে তিনি হয়তো বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন, নতুন মডেলে বিশ্ব শাসনের স্বপ্ন দেখছেন।

গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র যখন যুদ্ধের পেছনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থ ব্যয় করেছে, তখন চীন অর্থ ঢেলেছে ব্যবসার প্রসারে। যুক্তরাষ্ট্র যখন সৈন্য চলাচলের পথ তৈরি করতে ব্যস্ত, ঠিক তখন চীন ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ তৈরিতে মন দিয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে একটা ব্যবসায়ীক নেটওয়ার্ক গড়ার চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছে চীন।

বিগত কয়েক দশকে বিশ্বের নানা প্রান্তের সীমান্ত প্রাচীর সরে গেছে। গড়ে উঠেছে বিশ্বব্যাপী একটি ওয়েবের জাল। এর মাধ্যমে পুরো বিশ্ব এক হতে চাচ্ছে। সেখানে প্রতিশোধপরায়ণ ভূরাজনীতির চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে ব্যবসা ও অর্থনীতির প্রসার। সঙ্গে অভিবাসী ও মহামারি নিয়ন্ত্রণ করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।

বলা হয়, পুঁজিবাদের একটা নিজস্ব শক্তি রয়েছে। বিশ্ব এখন সেই শক্তির নিয়ন্ত্রককে মোড়লের আসনে বসাতে চায়। যেখানে অনেক দূর এগিয়ে গেছে চীন। শুধু এশিয়া নয়, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা এখন চীনের বাজার।

এই ব্যবসায়ীক গতি ও বিনিয়োগকে অনেকেই ‘চীনা ক্যু’ হিসেবে দেখছে। এই প্রচারণাকে ‘ইউরোপীয় প্রোপাগান্ড’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। তবে ‘চীনা ঋণের ফাঁদ’ কথাটি এখন বহুল প্রচলিত অভিযোগ।

বিশ্বের অনেক দেশ এখন সেই চীনা ঋণের ফাঁদে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার প্রধানত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মহাসড়ক, রেলপথ, গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্ট, খনিজ আহরণ প্রকল্পের নামে ‘সহজ শর্তে’ বিপুল ঋণ দিচ্ছে চীন।

অনেক দেশ এতে প্রলুব্ধ হচ্ছে। সেই ঋণ নিয়ে দেশগুলো এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে। কিন্তু শেষে দেখা যাচ্ছে, প্রকল্পের আয় থেকে সুদে-আসলে ঋণ পরিশোধ হচ্ছে না। এতে করে দেশগুলো ‘চীনা ঋণের ফাঁদে’ আটকা পড়ছে। তাই প্রকল্পগুলোর দীর্ঘমেয়াদি কর্তৃত্ব চলে যাচ্ছে চীনের হাতে। এভাবেই চীন একের পর এক দেশের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। এর সবশেষ উদাহরণ আফগানিস্তানে চীনের বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিয়োগ।

বিশ্বব্যাংক, এডিবি, এএফডিবি, সিডিবি ও আইডিবির মতো আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র উন্নয়ন অর্থায়নে বিনিয়োগ করে। এর পাশাপাশি এতদিন সমর ও গোয়েন্দা যুদ্ধ চালিয়ে যেত দেশটি। কিন্তু এখন তাদের ‘আকর্ষণীয় বিকল্প’ হিসেবে ভৌত অবকাঠামো প্রকল্পে হাজির হয়েছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢেলেছে। এর বিনিময়ে মুনাফা খুব কম পেয়েছে বলে মনে করছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তাই এই যুদ্ধনীতি থেকে বের হতে চাইছেন তিনি। বিশ্বকে দিচ্ছেন ‘শান্তির বার্তা’। কিন্তু একই সময়ে চীন বিশ্বের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঋণ দিয়েছে, এর থেকে সুদে-আসলে মুনাফা তুলেছে।

এই ব্যবসায়ীক মডেলে এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ ছিল অনিশ্চিত, মুনাফা পাওয়ার লক্ষ্যও ছিল দো-টানায়। কিন্তু চীন সেখানে একই মডেলে ‘ঋণের ফাঁদ’ তৈরি করে শতভাগ মুনাফা অর্জন করেছে বলে প্রচার করা হচ্ছে।

তাই যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে এসে চীনা মডেলে বিশ্বকে যুক্তরাষ্ট্র শাসন করতে চাইছে কি না, ভবিষ্যতই সেটা বলে দেবে।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com