আজকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হবে আমেরিকার ইমিগ্র্যান্ট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।অন্য যেকোন দেশের নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করা ও কাজ করার অনুমতি প্রদান করা হয় ইমিগ্রান্ট ভিসার মাধ্যমে। শুধুমাত্র ডাইভার্সিটি ভিসা ব্যতীত সকল ইমিগ্রান্ট ভিসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন সার্ভিসের মাধ্যমে এই লিঙ্ক থেকে http://www.uscis.gov/ আবেদন জমা দিতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ইমিগ্রান্ট ভিসা তাদের জন্য বরাদ্দ যারা।
যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক বা বৈধভাবে বসবাস কারীদের নিকট আত্মীয়।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃক নির্ধারিত পদের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সম্পন্ন লোকজন।
সাক্ষাৎকারের সময়ঃ
জন্ম,বিবাহ, তালাক, মৃত্যু এবং পুলিশ সনদের মূল এবং ফটোকপির সাথে একসেট ফটোকপি নিতে হয়। ফটোকপিগুলো রেখে মূলকপিগুলো দিয়ে দেয়া হয়।
কাগজপত্রের পাঠযোগ্য না হলে পুনরায় সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
আবেদনপত্রের সাথে জমা দেয়া কাগজপত্র দূতাবাস থেকে ফেরৎ দেয়া হয় না।
আবেদনপত্রের সাথে বাংলা কাগজপত্রের ইংরেজী অনুবাদ কপি জমা দিতে হয়।
প্রয়োজনীয় কাগজঃ
পাসপোর্ট: পাসপোর্টের মেয়াদ ভিসা ইস্যুর তারিখ থেকে আট মাস থাকতে হয়।
ছবি: প্রত্যেক আবেদনকারীর দু’কপি ইমিগ্রেন্ট/ডিভি ছবি।
ইমিগ্রান্ট ভিসার আবেদন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করতে হয়। ফরম এই ঠিকানা থেকে ডাউনলোড করা যায় http:/travel.state.gov/ visa/frvi/forms/forms-1342.html
নিবন্ধনকৃত জন্ম ও মৃত্যু সনদপত্র
তালাক/ বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত দলিলপত্র
মেডিকেল রিপোর্ট
ভরন-পোষণের এফিডেভিট বা এফিডেভিট অব সাপোর্ট
আয়কর রিটার্ন
পারিবারিক সম্পর্কের প্রমাণ পত্র
পিটিশনারের বর্তমান বাসস্থানের প্রমাণ
পুলিশ সনদ
ফিঃ
যদি এজেন্ট ভিসা প্রক্রিয়াকরনের ফি দিয়ে থাকে তাহলে আবেদনকারীকে ফি দিতে হয় না।
এজেন্ট ফি না দিলে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ বাবদ ২৩০ ইউএস ডলার (সমপরিমাণ টাকা) ফি দিতে হয়। এই ফি নগদ অর্থে পরিশোধ করতে হয়।
বিবাহ সার্টিফিকেট।
বাংলাদেশ সিভিল আইন অনুযায়ী সকল বিবাহকে উপযুক্ত বিবাহ নিবন্ধন কারকের সাথে নিবন্ধন করন করতে হয়।
মুসলিম বিবাহ: বিবাহ সনদ ও নিকাহ্ নামার জন্য কাজী অফিস বা যিনি বিয়ে পড়িয়েছেন তার সাথে যোগাযোগ করতে হয়। বিবাহ সনদপত্র ও নিকাহনামায় বাংলা বা ইংরেজী কপি ভিসা সাক্ষাৎকারের সময় জমা দিতে হয়।
হিন্দু/বৌদ্ধ/খ্রিষ্টান আবেকারীদের ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বিবাহ নিবন্ধনকরণ বা পুরোহিত/ গির্জা/ মন্দির হতে সনদপত্র ভিসা সাক্ষাৎকারের সময় জমা দিতে হয়।
আবেদনকারী আত্মীয়-স্বজন অথবা পরিবারের সদস্যদের থেকে বিবাহের এফিডেভিট কাগজ গ্রহণযোগ্য হয় না।
মেডিকেল পরীক্ষাঃ
দূতাবাসের অনুমোদিত চিকিৎসক দ্বারা স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে অভিবাসনের বা ইমিগ্রান্টের উপযুক্ত বলে ঘোষিত হতে হয়। স্বাস্থ্যসম্মত উপযুক্ততার কাগজপত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ পথে দেখাতে হয়।
ভিসা সাক্ষাৎকারের আগে নিজ দায়িত্বে ডাক্তারের কাছ থেকে সাক্ষাৎকারের সময় নিতে হয়।
ডাক্তারী পরীক্ষার সময় আবেদনকারীর পাসপোর্ট ও একটি করে ফটো সাথে নিয়ে যেতে হয়।
দূতাবাসের অনুমোদিত চিকিৎসকগণ হলেনঃ
ডাঃ লীনা শাহনাজ পারভিন হক
(ডার্মাটোলজিস্ট এন্ড ভেনেরালোজিস্ট)
গ্রীন ক্রিসেন্ট হেলথ্ সার্ভিসেস
বাড়ি: ২৯ (ঢাকা ব্যাংকের পাশে), সড়ক: সোহরাওয়ার্দী এভিনিউ, বারিধারা, ঢাকা।
(নতুন বাজারের উত্তরে, বারিধারা সীমানা দেয়ালের ভিতর)
ফোন: ৮৮১-৭৩৩৫, ৯৮৬-২৩৮৪, ৮৮১-০৪৮৬
মোবাইল: ০১৭৪২-৩৮৮৮৫৪
ফ্যাক্স: ৮৮২-৯৫২৩
ই-মেইল: [email protected]
ডাঃ এম এ ওয়াহাব
(এমডি, পিএইচডি, ট্রপিক্যাল মেডিসিনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত)
সড়ক: ১২, বাড়ি: ৩, বারিধারা কূটনৈতিক এলাকা, ঢাকা
ফোন: ৯৮৫-৫৯৫৩, ৮৮২-৭৫৫৩
ফ্যাক্স: ৮৮২-৬০৬৯
ই-মেইল: [email protected]
ডাক্তারের ফিঃ
১৫ বছরের কম ১,৬০০/-
১৫ বছর বা তার বেশী ৩,০০০/-
কোন টিকা দানের প্রয়োজন হলে ডাক্তারী খরচ বেড়ে যায়।যক্ষা বা অন্যান্য সংক্রামক ব্যধির অস্তিত্ব পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরীতে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে ডাক্তারী পরীক্ষায় ৫ দিনের মধ্যে বাড়তি ফি জমা দিতে হয়।সকল ইমিগ্রান্টকে সংক্রামক রোগনাশক টিকা অবশ্যই নিতে হয়। এই সকল টিকা অনুমোদিত চিকিৎসকদের কাছে পাওয়া যায়। এই সকল টিকার সুফল ও ঝুঁকি সম্পর্কে ডাক্তাদের কাছ থেকে জেনে নিতে হয়।ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্ট সরাসরি কনস্যুলার শাখায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
দূতাবাসে সাক্ষাৎকারের ৭ দিন আগে ডাক্তারের সাথে সাক্ষাৎ করতে হয়।১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদেরর যক্ষার স্কিন টেস্ট করতে হয়। এই পরীক্ষার জন্য প্যানেল ডাক্তারের কাছে পরপর তিন দিন যেতে হয়। এই পরীক্ষা সাক্ষাৎকার তারিখের আগে শেষ করতে হয়।ডাক্তারী পরীক্ষায় রিপোর্ট ৬ মাসের বেশী পুরাতন হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।
ছবিঃ
ভিসা আবেদনকারীর জন্য ২ কপি ২× ২ ইঞ্চি (৫০×৫০ সি.সি) মাপের সাদা বা অফ হোয়াইট ব্যাকগ্রাউন্ডের রঙ্গিন ছবি হতে হয়।
ছবিতে চিবুক থেকে চুলসহ পর্যন্ত মুখের মাপ ১ ইঞ্চি থেকে ইঞ্চির মধ্যে হতে হয়।
ছবিতে দুইকান, দুই চোখ ও সম্পূর্ণ চেহারা ভালোভাবে দেখা যেতে হয়।
আবেদনকারীর মাথা, মুখমন্ডল ও চুলসহ মাথার উপরিভাগ হতে থুতনীর নিচ ভাগ পর্যন্ত এবং উভয় পাশের চুলের রেখা দেখা যেতে হয়।
ধর্মীয় ভাবে মাথা ঢাকা বা টুপি পরা ছবি গ্রহণযোগ্য হয় কিন্তু মুখমন্ডল খোলা থাকতে হয়।
গাড় রংয়ের চশমা বা মনোযোগ আকৃষ্ট হয় এমন কিছু পরে ছবি তোলা যায় না। তবে মেডিকেলের কারণে চোখের উপর পট্রি বা আচ্ছাদন দেয়া যেতে পারে।
সামরিক বাহিনী, বিমান কোম্পানী বা অন্য কোন প্রকারের টুপি পরা ছবি গ্রহণ করা যায় না।
ছবির উপরিভাগ মসৃন ও চকচকে হতে হয়।
ছবি সাক্ষাৎকার তারিখের ৬ মাসের মধ্যে তুলতে হয় যাতে চেহারার বর্তমান অবস্থা বোঝা যায়।
পুলিশ সার্টিফিকেটঃ
১৬ বা তার চেয়ে বেশি বয়সের আবেদনকারীকে নিম্নে উল্লেখিত পুলিশ কর্তৃপক্ষ থেকে পুলিশ সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়।
ক) বর্তমান আবাসস্থলের নিকটস্থ থানা থেকে
খ) আবেদনকারী আটক হয়ে থাকলে সেই কর্তৃপক্ষ থেকে
গ) আবেদনকারী যদি আমেরিকা ব্যতীত অন্য কোন দেশে অন্তত একবছর বসবাস করে থাকে তবে সেই দেশের পুলিশ কর্তৃপক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা সোনালী ব্যাংকে প্রতি সার্টিফিকেট এর জন্য ৫০০ টাকা জমা দিতে হয়।
পুলিশ সার্টিফিকেট ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এবং বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পর্যালোচিত, অনুমোদিত ও সত্যায়িত হতে হয়।
আরো বিস্তারিত জানতে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করতে হয়।
আটক রেকর্ডের পুলিশ সার্টিফিকেট, যাতে আটকের কারণ ও মামলার নিস্পত্তির বিবরণ থাকতে হয়।
যেসকল দেশের পুলিশ সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না জানতে ভিজিট করা যেতে পারে এই ঠিকানায় http://travel.state.gov/visa/fees/fees3272.html
জন্ম নিবন্ধন ও মৃত্যু সার্টিফিকেটঃ
আবেদনকারীকে তার নিকটস্থ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনকরণ অফিসে যোগাযোগ করতে হয়। যেখানে জন্ম বা যেখানে মৃতেক দাফন করা হয়েছে।
হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডাক্তারের কাছ থেকে মৃত্যু সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য নয়।
আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং প্রতিবেশীর কাছে থেকে নেয়া জন্ম সংক্রান্ত এফিডেভিট বা হলফনামা গ্রহণ করা হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম যাওয়ার সময় যে জন্ম সনদ ব্যবহার করা হয়েছে তাও আই আর ৫ এম এফ ৪ কেসে জমা দিতে হয়।
২১ বছরের কম বয়সী সন্তানদের ক্ষেত্রে জন্ম তারিখের সনদ জমা দিতে হয়। সন্তান অভিবাসী হতে না চাইলে বা অভিবাসী হওয়ার যোগ্য না হলেও জন্ম সনদ জমা দিতে হয়।
ডাইভারসিটি ভিসাঃ
২০১৩ ডিভি কর্মসূচীতে বাংলাদেশীদের আবেদন না করার জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
আশা করি এই পোস্টটি আপনাদের কিছুটা হলেও উপকারে আসবে। এরকম আরো অনেক কিছু জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন আমাদের পরিবারের একজন হয়ে। আমাদের সম্পর্কে আপনার পরিচিতদের জানিয়ে তাদের কেও সাহায্য করুণ তাদের প্রবাস ও স্বদেশ জীবনের সকল সমস্যার সমাধান পেতে।