আমাদের অনেকেরই মনে একটাই স্বপ্ন
একদিন আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজের হাতে ডলার উপার্জন করব…”
রাতে বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করলে মনে হয়— ঝলমলে শহর, বড় বড় বিল্ডিং, সুন্দর গাড়ি, আর স্বাধীন জীবন।
কিন্তু এই স্বপ্নের আড়ালে আছে হাজারো সংগ্রাম, পরিকল্পনা আর সঠিক প্রসেস জানা।
আজ আমি আপনাকে বলবো — কিভাবে আপনি নিজেই নিজের আমেরিকার ওয়ার্ক ভিসা আবেদন করতে পারেন, ব্রোকার বা অযথা খরচ ছাড়াই।
কারণ, সঠিক তথ্যই পারে আপনার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে।
১. স্বপ্নের প্রথম ধাপ — প্রস্তুতি
আমেরিকায় কাজ করতে হলে প্রথমেই দরকার সঠিক ভিসা টাইপ বেছে নেওয়া।
সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়ার্ক ভিসাগুলো হলো:
H-1B (Specialty Occupations)
H-2B (Seasonal Non-Agricultural Workers)
EB-3 (Unskilled/Skilled Workers)
বাস্তবতা:
আমেরিকা এমনিতেই কাউকে কাজের ভিসা দেয় না — আপনার জন্য একটি বৈধ স্পন্সর কোম্পানি থাকতে হবে, যারা আপনার জন্য অফিসিয়ালি আবেদন করবে।
২. চাকরির অফার ও পিটিশন দাখিল
বৈধ কোম্পানি আপনাকে অফার লেটার দেবে।
তারা Form I-129 জমা দিয়ে USCIS (U.S. Citizenship and Immigration Services)-এ পিটিশন করবে।
পিটিশন অনুমোদিত হলে আপনি পাবেন I-797 Approval Notice।
এই ধাপে অনেকেই ফেক কোম্পানির ফাঁদে পড়ে। মনে রাখবেন— শুধু ডলার আয়ের স্বপ্ন নয়, আপনার নিরাপত্তা ও বৈধতা আগে।
অনলাইনে DS-160 Form পূরণ করুন।
ফর্ম সাবমিট করার পর কনফার্মেশন পেজ প্রিন্ট করে রাখুন।
আপনার দেশের US Embassy ওয়েবসাইটে গিয়ে ইন্টারভিউ অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করুন।
৪. ডকুমেন্ট প্রস্তুত করুন
বৈধ পাসপোর্ট (৬ মাসের বেশি মেয়াদ)
২x২ ইঞ্চি ছবি (US Visa Requirements অনুযায়ী)
শিক্ষাগত ও অভিজ্ঞতার প্রমাণ
ভিসা ফি সাধারণত $190 USD (ভিসা টাইপ অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে)।
অনলাইনে বা নির্দিষ্ট ব্যাংকে জমা দিন।
৬. ইন্টারভিউ ও বায়োমেট্রিকস
এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
কনস্যুলার অফিসার আপনার উদ্দেশ্য, যোগ্যতা, চাকরির প্রমাণ সব যাচাই করবেন।
আপনার উত্তর হতে হবে আত্মবিশ্বাসী ও সত্য।
অনেকেই এই ধাপে ব্যর্থ হন শুধু প্রস্তুতির অভাবে। তাই আগেই সম্ভাব্য প্রশ্ন-উত্তর অনুশীলন করুন।
৭. রেজাল্ট ও আমেরিকা যাত্রা
ভিসা অনুমোদিত হলে কয়েক দিনের মধ্যে পাসপোর্টে ভিসা লাগবে।
বিমানবন্দরে CBP Officer আপনার কাগজপত্র চেক করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেবে।
আমেরিকায় জীবন সুন্দর, কিন্তু প্রথম কয়েক মাস খুব কঠিন হতে পারে —
নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া
ভাড়া, বিল, খাবারের খরচ ম্যানেজ করা
কিন্তু ধৈর্য আর পরিশ্রম থাকলে এখানেই আপনি গড়ে তুলতে পারেন নিজের স্বপ্নের ভবিষ্যৎ।
শেষ কথা — আপনার স্বপ্নের যাত্রা আজ থেকেই শুরু!
হয়তো কেউ বলেছে — “আমেরিকায় যাওয়া কঠিন” বা “তুমি পারবে না”…
কিন্তু আপনি যদি এতক্ষণ পড়ে থাকেন, তার মানে আপনার ভেতরে সাহস আছে!
Like this:
Like Loading...