বাংলাদেশে শিগগিরই ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম কম ভাড়ার (লো-কস্ট) এয়ারলাইন্স সংস্থা উইজ এয়ার। মধ্যপ্রাচ্যের আবুধাবিভিত্তিক এয়ারলাইন্সটি চলতি মে মাসেই বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছ থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেতে পারে।
বেবিচকের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আলহামুদি। কূটনীতিক বিভিন্ন বিষয় আলোচনার পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশে উইজ এয়ার পরিচালনার সহযোগিতা চান। পাশাপাশি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সাক্ষাতেও একই কথা বলেন রাষ্ট্রদূত। বেবিচকের কাছে উইজ এয়ার তাদের ফ্লাইট পরিচালনার ইচ্ছার বিষয়টি অবগত করলে বেবিচক তাদের কূটনীতিক চ্যানেলের মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে আবেদন করতে বলে।
এবিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, উইজ এয়ার ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি চেয়েছে। তবে আমরা আপাতত তাদের ঢাকা থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিতে পারছি না। তাদের ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ে আলোচনা আছে। শিগগিরই তাদের একটা ডেলিগেশন টিম ঢাকায় আসছে। তাদের সঙ্গে এবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
বেবিচকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, উইজ এয়ার ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবিতে এবং আবুধাবি থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফ্লাইট পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করে। ঢাকায় প্লেন রাখার জায়গা সংকট রয়েছে। তাই তাদের ফ্লাইট চট্টগ্রামে পরিচালনার অনুমতি দিতে পারে বেবিচক। এবিষয়ে আমিরাতের ডেলিগেশন টিমের সঙ্গে আগামী ১৫ অথবা ১৬ মে তাদের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। তাদের ডেলিগেশন টিমে থাকবে আমিরাতের জেনারেল সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (জিসিসিএ), এভিয়েশন রেগুলেটরি বডি অব ইউএই এবং উইজ এয়ার কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে বাংলাদেশি যাত্রী নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দেশগুলোতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে এমিরেটস এয়ারলাইন্স, ইতিহাদ এয়ারওয়েজ, ফ্লাই দুবাই, এয়ার অ্যারাবিয়া। এছাড়াও বাংলাদেশের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও ইউএই’তে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
বিশ্বে কম ভাড়ার টিকিট বিক্রির জন্য বিখ্যাত ‘উইজ এয়ার’
বিশ্বে কমদামি টিকিট বিক্রির জন্য বিখ্যাত এয়ারলাইন্স হিসেবে খ্যাতি আছে ‘উইজ এয়ারের’। ২০০৪ সালে অপারেশনে আসা উইজ এয়ার মূলত হাঙ্গেরিভিত্তিক এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ইউরোপে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর তারা আবুধাবিতে একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তাকে ‘উইজ এয়ার আবুধাবি’ নামকরণ করে। কোম্পানি আইনের ভাষায় উইজ এয়ার আবুধাবি মূলত উইজ এয়ারের একটি ‘ডটার কোম্পানি’।
এয়ারলাইন্সটির বর্তমানে ১৭৯টি এয়ারক্রাফট রয়েছে। তারা বাংলাদেশি যাত্রীদের ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলোতে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এয়ারলাইন্সটি যাত্রীদের অনেক কমদামে টিকিট দেয়। তবে এটি শুধু যাত্রীর ভ্রমণ ভাড়া। ফ্লাইটে খাবার খেতে বা চেক-ইন লাগেজ নিতে হলে যাত্রীকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হবে।