বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৬:২২ অপরাহ্ন
Uncategorized

আদিবাসীদের উৎসব

  • আপডেট সময় রবিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আইএলও সনদ অনুযায়ী, যাদের ভিন্ন সংস্কৃতি ও রীতি- নীতি রয়েছে, জীবিকার ধরণ ভিন্ন, ভিন্ন আইন দ্বারা সামাজিক জীবন পরিচালিত হয় তারাই আদিবাসী। আদিবাসীদের বসতি রয়েছে বাংলাদেশেও। প্রায় ৪৫ ধরণের আদিবাসী রয়েছে বাংলাদেশে। তাদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি, নিজস্ব ভাষা এবং নিজস্ব উৎসবও। ভিন্ন স্বকীয়তার জন্যে আদিবাসীদের জীবনাচরণ আকৃষ্ট করেছে ভ্রমণ পিয়াসু পর্যটকদের। নিজস্ব ঐতিহ্য বয়ে চলা আদিবাসীদের উৎসব এ তাই সামিল হয় দেশ-বিদেশের পর্যটক। আদিবাসীদের ভিন্নধারার এসব উৎসবের গল্প বলা হবে আজ।

চাকমাদের বিজু উৎসব :

চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চংগ্যাসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠির নববর্ষের উৎসব হলও বিজু। চৈত্র মাসের শেষ দুইদিন ও বৈশাখের প্রথম দিন ; মোট এই তিনদিন ঘিরে পালিত বিজু উৎসবের মূল লক্ষ্য হলও পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়া। উৎসবের তিনদিনের তিনটি নাম রয়েছে। ফুলবিজু, মূলবিজু, গোজ্যাপোজ্যা। তরুণ- তরুণীরা পানিতে ফুল ভাসিয়ে মূল উৎসবের সূচনা করে। এদিন ভালো খাবার রান্না করা হয়, এতে মনে করা হয় বছরের অন্যান্য দিন ভালো কাটবে।

মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব :

সাংগ্রাই উৎসব মারমা বর্ষ পঞ্জিকা অনুযায়ী পুরনো বছরের শেষ দুইদিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন মিলিয়ে মোট ৩ দিন পালিত হয় সাংগ্রাই উৎসব। ছবি : সংগৃহীত

মারমা বর্ষ পঞ্জিকা ‘ ম্রাইমা সাক্রঃয়’- এর নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী সাংগ্রাই উৎসবের আয়োজন করা হয়। পুরনো বছরের শেষ দুইদিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন নিয়ে পালিত হয় সাংগ্রাই উৎসব। প্রথম দিন সকালে পাংছোয়াই (ফুল সাংগ্রাই), বছরের শেষদিন প্রধান সাংগ্রাই আর নতুন বছরের প্রথম দিন পানি খেলার সাথে সাথে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোও অনুষ্ঠিত হয়। সাংগ্রাই-এর পরেই শুরু হয় জুম চাষ। মারমারা মাঘী পূর্ণিমার পর থেকে সাংগ্রাইয়ের আগ পর্যন্ত সময়টিতে বিয়ে করে না। সাংগ্রাইকে মারমারা নতুন বছরের শুরুসহ পুরনো সব জিনিসকে ঝেড়ে ফেলে নতুন করে শুরু করাকেই বোঝায়।

মুরংদের চাংক্রান :

ম্রাইমা পঞ্জিকা অনুযায়ী মুরংরা নববর্ষ পালন করে থাকে। তাদের এই বর্ষবরণের উৎসব হলও চাংক্রান। চাকমাদের মতো তারাও তিনদিনব্যাপী নববর্ষ পালন করে থাকে। প্রথমদিন মেয়েরা বন থেকে ফুল সংগ্রহ করে মন্দির সাজায়, নিজেরাও সাজে, রাতে পিঠা বানায়। মূল উৎসবের দিন তারা বাঁশী বাজিয়ে ‘পুষ্প নৃত্য’ করতে করতে মন্দির প্রদক্ষিণ করে। তাদের মধ্যে লাঠিখেলা বেশ জনপ্রিয়। চাংক্রানের দিন তারা তাই লাঠি খেলে। উৎসবের শেষদিনে তারা মন্দিরে উপাসনা করে।

কারাম উৎসব :


আদিবাসীদের উৎসব কারাম উৎসববৃক্ষের পুজোর উৎসব হিসেবে পরিচিত সমতলের আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হলও কারাম উৎসব। ছবি : রাইজিং বিডি

সমতলের আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় উৎসব কারাম উৎসব। ওরাও সম্প্রদায় ভাদ্র মাসে উদযাপন করে কারাম উৎসব। ওরাও ছাড়া সাঁওতাল, মালো, মুন্ডাসব বিভিন্ন ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী এই উৎসব পালন করে। উৎসবের প্রথমদিন নর- নারীরা সারাদিন উপোষ থাকে। ওরাওরা মাদল, ঢোল, করতাল ও ঝুমকির বাজনার তালে তালে নেচে-গেয়ে এলাকা থেকে কারাম গাছের (কদম) ডাল তুলে আনে। পূজা শেষে এটি বিসর্জন দেয়া হয়। তাই একে বৃক্ষের পুজোর উৎসবও বলা হয়।

সাঁওতালদের সোহরায় উৎসব :

সাঁওতালদের নতুন বছর বরণের উৎসব হলও সোহরায় উৎসব। গৃহ পূজা এবং ফসলের উৎপাদনের সঙ্গে যে সব পশু জড়িত তাদের পূজা করা এই পরবের মুখ্য উৎসব। এ উৎসবকে ‘বাঁধন পরব’ বলা হয়ে থাকে। উৎসবের একটি রেওয়াজ হলও এদিন বিবাহিত মেয়েদের বাপের বাড়িতে নিমন্ত্রণে আসতে হয়। সোহরায়ের নির্দিষ্ট কোন দিন নেই। গ্রামের মোড়লরা একটি দিন নির্ধারিত করেন এ উৎসবের জন্য।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com