মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া ইরানের আকাশসীমা অবশেষে আংশিকভাবে খুলেছে। ২৪ জুন থেকে কিছু যাত্রীবাহী ফ্লাইট ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় আকাশপথ ব্যবহার করে চলতে শুরু করেছে— কিছু ট্রানজিট ফ্লাইট, কিছু সরাসরি ফ্লাইট।
তবে এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি তেহরানের দুই প্রধান বিমানবন্দর—মেহরাবাদ ও ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। একইভাবে মাশহাদ ও শিরাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেও এখনো ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়নি। ফলে পুরোদমে আকাশপথ চালু হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
১৩ জুন রাতে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত শুরু হলে ইসরায়েল, ইরাক, ইরান, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবানন নিরাপত্তার কারণে আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। ১৫ জুন থেকে কয়েকটি দেশ ধাপে ধাপে আকাশপথ খুলে দিলেও ইরান করিডর বন্ধ থাকায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে বড় বাধা ছিল।
ইরানের মতো গুরুত্বপূর্ণ আকাশপথ বন্ধ থাকায় প্রতিদিন প্রায় ৫০০ ফ্লাইট বিকল্প রুটে যেতে বাধ্য হয়। বেশিরভাগ বিমান এখন তুরস্ক, মিশর ও সৌদি আরবের আকাশপথ ব্যবহার করছে, যেগুলো তুলনামূলকভাবে নিরাপদ ধরা হয়।
২৪ জুন থেকে সংঘাতের উত্তেজনা কমতে থাকায় ধীরে ধীরে ইরানের আকাশসীমা ব্যবহারে ফিরছে কিছু বিমানসংস্থা।
ইতোমধ্যে ইরানের আকাশপথ ব্যবহার করে দুবাই–লন্ডন, দুবাই–মস্কো এবং আজারবাইজান–দুবাই রুটে কিছু ফ্লাইট চলাচল শুরু করেছে। ফ্লাইটরাডার অনুযায়ী, ইরান এয়ার, ফ্লাইদুবাই এবং ওমান এয়ার এসব রুটে চলাচল করছে।
তবে এমিরেটস, কাতার এয়ারওয়েজ, ফ্লাইদুবাইয়ের মতো বড় এয়ারলাইনসগুলো এখনো ইরানের আকাশসীমা পর্যবেক্ষণে রেখেছে। তারা ৩০ জুন পর্যন্ত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
যুদ্ধ শুরুর আগে ইরানের আকাশপথ দিয়ে প্রতিদিন চলত প্রায় ১,৪০০টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। এর মধ্যে তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতিদিন গড়ে ১২৮টি ফ্লাইট চলত।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সব ফ্লাইট বিকল্প রুটে চলে যায়, ফলে ইরান প্রতিদিন প্রায় ১৪ কোটি টাকা ‘ওভারফ্লাইট ফি’ থেকে বঞ্চিত হয়।
এভিয়েশনশিল্পের একজন কর্মকর্তা আকাশযাত্রাকে বলেন, “শুধু চার দিনে ইরানের ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৫৬ কোটি টাকা। মাস গড়ালে এই আয় ১৭শ কোটি টাকা ছাড়াবে। শুধু ফ্লাইট ফি নয়, ক্ষতি হয়েছে বিমানবন্দর পরিষেবা, জ্বালানি বিক্রি এবং রক্ষণাবেক্ষণ আয়েও, যা মোট ক্ষতি বাড়িয়ে তুলবে”