বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন
Uncategorized

অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার শুরু করতে চাইলে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২১

দেশের বাইরে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, অবশ্যই কিছু নিয়ম-কানুন ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করা ও দিকনির্দেশনা না জানার কারণে, অনেকেই বিদেশে ক্যারিয়ার গড়তে ব্যর্থ হয়ে থাকে। আপনি যদি অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার গঠন করতে চান, তবে আপনাকেও কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

কাজের ভিসা

অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা পাওয়া মূলত নির্ভর করে, আপনার যোগ্যতা, দক্ষতা এবং কী ধরনের কাজ খুঁজছেন তার উপরে। অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন ধরনের ভিসা প্রচলিত আছে। চলুন, বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা সম্পর্কে জেনে নিই।

১.স্কিলড ভিসা (Skilled Visas)

এই ভিসা পেতে হলে আপনাকে আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে। যোগ্যতা ও দক্ষতা বিবেচনাপূর্বক এই ভিসা প্রদান করা হয়ে থাকে। আর এই ভিসা পেয়ে গেলে, আপনি খুব সহজেই আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পেয়ে যাবেন।

২. এমপ্লোয়ার স্পনসর্ড ওয়ার্কার্স (Employer Sponsored Workers)

আপনি যদি অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তাদের দ্বারা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে থাকেন এবং তারা আপনাকে স্পন্সর করতে সম্মত থাকে। তবে আপনি এই ভিসার জন্য আবেদন করতে সক্ষম হবেন।

৩. হারভেস্ট ট্রেইল (Harvest Trail)

আপনি যদি ভ্রমণের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার খামারগুলোতে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে চান, তবে আপনাকে এই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

৪. ওয়ার্কিং হলিডে ভিসা (Working Holiday Visa)

যাদের বয়স আঠারো থেকে ত্রিশের মধ্যে এবং এক বছরের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করতে আগ্রহী। তারাই কেবল এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে।আপনার বয়স যদি আঠারো থেকে ত্রিশের মধ্যে হয় এবং আপনি এক বছরের জন্য কাজ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তবে এই ভিসার জন্য আবেদন করুন।

উপার্জন

উপার্জন মূলত যোগ্যতা ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে থাকে। সাধারণত অস্ট্রেলিয়ায় পূর্ণকালীন চাকরির বার্ষিক গড় বেতন প্রায় ৮৫ হাজার ডলার। আর ন্যূনতম মজুরি প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১৮ ডলার। তবে আপনার পেশার উপর ভিত্তি করে, এই উপার্জন অনেক কম বেশি হতে পারে। চিকিৎসা খাতে যারা কাজ করেন, তাদের মধ্যে সার্জনদের বার্ষিক গড় বেতন প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার। অপরদিকে হিসাবরক্ষকের বার্ষিক উপার্জন প্রায় ৫৫ হাজার ডলার। খুচরো বিক্রয় সহায়তাকারীর প্রতি ঘন্টায় আয় সাধারণত ২০ ডলার।

আপনি যদি ওয়ার্কিং হলিডে ভিসায় অস্থায়ী কাজে নিযুক্ত হয়ে থাকেন, তবুও বেশ মানসম্মত উপার্জন করতে সক্ষম হবেন। ফসল সংগ্রহ ও ফল বাজারজাতকরণ সংক্রান্ত কাজে অংশ নিয়ে, প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৮০০ থেকে ১ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়। তবে এ কাজে একটু দীর্ঘ ও কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। রেস্টুরেন্ট, হোটেল কিংবা বারে অফিসকর্মী বা আতিথেয়তাকর্মী হিসেবে কাজ করে, প্রতি ঘন্টায় প্রায় ২০ ডলার উপার্জন করতে পারবেন।

ট্যাক্স প্রদান

অস্ট্রেলিয়ায় মূলত বাসস্থানের ধরনের উপর ট্যাক্স প্রদান করতে হয়। আপনি যদি ওয়ার্কিং হলিডে ভিসায় থাকেন, তবে আপনি একজন অনাবাসিক হিসেবে বিবেচিত হবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে স্থায়ী বাসিন্দাদের তুলনায় একটু বেশি ট্যাক্স প্রদান করতে হবে।

একজন অনাবাসিক হিসেবে আপনাকে প্রতি ১ ডলারে প্রায় ৩২.৫ সেন্ট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে। তবে অনাবাসিক হিসেবে আপনাকে স্থায়ী বাসিন্দাদের মতো মেডিকেয়ার লেভি দিতে হবে না। এক্ষেত্রে আপনি স্থায়ী বাসিন্দাদের ন্যায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন না। আপনাকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্বাস্থ্যসেবা নিতে হবে।

বসবাস

অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের জন্য বেশ উপযুক্ত আবহাওয়া ও পরিবেশ বিরাজমান আছে। সাধারণত ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করা বেশ সুবিধাজনক। কারণ এদের মধ্যে ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত তেমন কোনো পার্থক্য নেই। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের খরচ মূলত এলাকার উপর নির্ভর করে থাকে। যদিও অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের খরচ একটু বেশি, তবে আয় অনুযায়ী খরচের হার স্বাভাবিক বলা যায়। অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সিডনি বেশ ব্যয়বহুল একটি শহর। এখানে প্রতি সপ্তাহে আপনাকে প্রায় ৫০০ ডলার ভাড়া দিতে হবে।

আর ব্রিসবেন ও পার্থ শহরে বেশ সাশ্রয়ী মূল্যে বসবাস করা সম্ভব। অস্ট্রেলিয়ার পরিবহন ব্যবস্থা খুবই চমৎকার এবং যুক্তরাজ্যের তুলনায় অত্যন্ত সাশ্রয়ী। এখানে বড় বড় শহরগুলোতে নির্ভরযোগ্য ও উন্নত মানের বাস নেটওয়ার্ক রয়েছে। আবার সারা দেশ জুড়েই ট্যাক্সি চলাচল করে থাকে। সিডনি, পার্থ ও ব্রিসবেনে ট্রেনে চলাচলের ব্যবস্থাও আছে। এছাড়াও আপনি ইচ্ছা করলে নিজের গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন, তবে এক্ষেত্রে আপনাকে লাইসেন্স করে নিতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও খুবই উন্নত।

অস্ট্রেলিয়ায় কাজ ও বসবাস করার সুবিধা

অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করে এবং বসবাস করে, আপনি বেশ উন্নত জীবনযাপন করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যেসব সুবিধাগুলো উপভোগ করতে পারবেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-
১. চমৎকার ও সফল ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ।
২. নির্দিষ্ট পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার জন্য উৎসাহ প্রদান।

৩. প্রথম শ্রেণীর স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা
৪. বহু সংস্কৃতির মাঝে সহবস্থান
৫. উষ্ণ জলবায়ু

পরামর্শ

পৃথিবীর যেকোনো দেশেই পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাই মুখ্য বিষয়। তাই অস্ট্রেলিয়ায় চাকরি পেতে হলেও, আপনার এগুলোরই প্রয়োজন হবে। অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার গঠন করার ক্ষেত্রে, যেসব পরামর্শগুলো মাথায় রাখবেন, সেগুলো হলো-
১. বসবাসের জন্য এমন একটি শহর নির্বাচন করুন, যে স্থানের আবহাওয়া ও পরিবেশের সঙ্গে আপনি খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারবেন।
২. আপনি যে চাকরিতে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তার বিকল্পও একটি কাজ পছন্দ করে রাখুন।
৩. আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতা বিশ্লেষণ করুন এবং যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী চাকরি খোঁজ করুন।
৪. দেশের বাইরে যেতে হলেই বাধ্যতামূলকভাবে ভিসার প্রয়োজন হয়। তাই অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগেই ভিসা করে নিন।

৬. অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই চাকরি খোঁজ করা যায়। তাই অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞাপন বিশ্লেষণ করে, আপনার পছন্দের চাকরিটি নির্বাচন করুন। তারপর ঐ চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করুন।

এসব দিকনির্দেশনা ও পরামর্শগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করলে, আপনি খুব সহজেই অস্ট্রেলিয়ায় একটি চাকরি পেয়ে যাবেন। আর অস্ট্রেলিয়ায় চাকরি করার সুযোগ পেলে, আপনি খুব সহজেই সফল ক্যারিয়ার গঠন করতে সক্ষম হবেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com