শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

অস্ট্রেলিয়ায় কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন চার বাংলাদেশি বন্ধু

  • আপডেট সময় রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২

কী করা যায়, এই নিয়ে দিনের পর দিন বৈঠক করলেন চার বন্ধু এ এন এম খায়রুল আনোয়ার, এ এইচ এম জি কিবরিয়া, ইমরান হোসেন ও মেসবাহ উদ্দিন খান। ভাবতে ভাবতে ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠা করলেন একটা কলেজ। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরে অবস্থিত এ কলেজের নাম ‘সাউথ সিডনি কলেজ’। অস্ট্রেলিয়া সরকার অনুমোদিত কলেজটি মূলত বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। গত ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশীয় উদ্যোক্তাদের সম্মেলনে কলেজটি ‘প্রগ্রেসিভ এডুকেশন ইনস্টিটিউট অব দ্য ইয়ার’ পদক পেয়েছে। মেলবোর্নের ক্রাউন সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে যোগ দিয়েছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার শতাধিক উদ্যোক্তা।

নানা দেশের শিক্ষার্থীরা পড়েন এ কলেজে

নানা দেশের শিক্ষার্থীরা পড়েন এ কলেজে
ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার ব্যস্ত বাণিজ্যিক কেন্দ্র সিডনি শহর থেকে ট্রেনে মাত্র ১২ মিনিটের দূরত্বে এ কলেজের অবস্থান। বাংলাদেশিদের কথা মাথায় রেখে প্রতিষ্ঠা করা হলেও এটি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে। এ এন এম খায়রুল আনোয়ারের পাশাপাশি এটি পরিচালনা করছেন এ এইচ এম জি কিবরিয়া, ইমরান হোসেন ও মেসবাহ উদ্দিন খান। বয়সের ব্যবধান থাকলেও চারজন মূলত বন্ধু। অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন এ এইচ এম জি কিবরিয়া। আর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন এ এন এম খায়রুল আনোয়ার।

কী শেখানো হচ্ছে

কলেজের পর্ষদ চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোটর মেকানিক, অটোমোটিভ, সাইবার সিকিউরিটি, কাঠের কাজ, কমিউনিটি সার্ভিস, পর্যটন—এ রকম নানা বিষয়ে ১৩টি কোর্স পরিচালনা করে আসছে সাউথ সিডনি কলেজ। অস্ট্রেলিয়ার টরেন্স ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড ও গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পরিচালিত হচ্ছে কোর্সগুলো। আর বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের ১৫টি দেশ থেকে এ কলেজ শিক্ষার্থী পেয়েছে। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট ভিসায় কলেজে পড়ছেন, পাশাপাশি কাজও করছেন।

জন্মলগ্ন থেকেই শিক্ষার্থীদের আপন করে নিচ্ছে সাউথ সিডনি কলেজ জানালেন কলেজের অধ্যক্ষ এ এইচ এম জি কিবরিয়া। হোয়াটসঅ্যাপে তিনি জানালেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ সময়ের সঙ্গে পাঠ্যক্রম উন্নয়ন ও প্রয়োগকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। পাশাপাশি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ শেষে কাজের সন্ধান দেওয়ার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

কিবরিয়া বলেন, ‘বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গবেষণা ও অন্যান্য পেশাগত কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখছে সাউথ সিডনি কলেজ। আর এর মধ্য দিয়ে দেশে–বিদেশে মানুষের মনোযোগ ও প্রশংসা পেয়ে আসছে। প্রতিবছর কলেজের মান মূল্যায়ন করে অস্ট্রেলিয়া সরকার। কলেজ ঠিকমতো চলছে কি না, মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে কি না, এ মূল্যায়নে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমাদের কলেজ ভালো মান পাচ্ছে।’

অধ্যক্ষ আরও জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে শতাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন এ কলেজে। করোনার কারণে একটু ব্যাহত হলেও এখন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আবার বাড়ছে। গত মাসেই ভর্তি হয়েছেন সাতজন।

কারা ভর্তি হতে পারবেন

সম্প্রতি ঢাকায় এসেছেন কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এ এন এম খায়রুল আনোয়ার। তাঁর সঙ্গে কথা হয় গত ২০ নভেম্বর। বললেন, একটা শ্রেণি আছে, যাঁরা বিদেশে কাজ করতে যান, কিন্তু যোগ্যতার অভাবে বৈধভাবে থেকে যাওয়ার চিন্তা করতে পারেন না। এ কলেজ থেকে পাস করে কেউ ভালো চাকরি তো করতে পারবেনই, অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের চিন্তাও করতে পারবেন।

উচ্চমাধ্যমিক পাস করেই সাউথ সিডনি কলেজে ভর্তির আবেদন করা যাবে। ভর্তির জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৫ থাকতে হয়। এ স্কোর বেশি হলে আরও ভালো। তবে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে চান, এমন শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করে সাউথ সিডনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ভর্তি হওয়ার পর খণ্ডকালীন কাজ করার সুযোগ রয়েছে, তাতেই থাকা-খাওয়ার খরচ চলে যায়। দুই বছরের কোর্সে ভর্তি হতে খরচ হবে প্রায় ১৫ লাখ টাকা।

খায়রুল আনোয়ার বলেন, ‘আমরা চাই, যোগ্যতাসম্পন্ন বাংলাদেশিদের অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস বাড়ুক। সে বিবেচনা থেকেই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমরা আরও বেশি বাংলাদেশির সাফল্য দেখতে চাই।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com