1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনঃ বর্তমান সময়ের সমস্যা ও সম্ভাবনা
বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:১৬ অপরাহ্ন
Uncategorized

অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনঃ বর্তমান সময়ের সমস্যা ও সম্ভাবনা

  • আপডেট সময় শনিবার, ৫ জুন, ২০২১

অস্ট্রেলিয়াকে বলা হয় অভিবাসীদের দেশ। পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ্বের এই বিশাল অঞ্চলে একসময় এখানকার আদিবাসী মানুষরাই বসবাস করতো। সপ্তদশ শতাব্দীতে ডাচ নাবিকরা এই মহাদেশে এসেছিলো কিন্তু তারা বসতি করেনি। ১৭৭০ সালে ব্রিটিশ নাবিক জেমস কুক অস্ট্রেলিয়াতে আসেন এবং বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে পরিকল্পনা নিয়ে ব্রিটেনে ফিরে যান।

তারপর ১৭৮৮ সালে এদেশে এসে পৌছে ব্রিটিশ জাহাজের প্রথম বহরটি। এই বহরে ছিলো এক থেকে দেড় হাজার দ্বীপান্তরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি, নৌসেনা, নাবিক, বেসামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী সহ অনেক ধরণের মানুষ। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো নতুন এই মাটিতে অভিবাসী হয়ে নতুন একটি দেশের আবাদ করা। এটি সেই সময় যখন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূবর্ণসময় চলছিলো, সারা পৃথিবীর দিকদিগন্তে পৌছে যাচ্ছিলো ব্রিটেনের সৈন্য, ব্যবসায়ী, অভিযাত্রী এবং বিজ্ঞানীদের দল। এর মাত্র ত্রিশ বছর আগেই ভারতবর্ষে ব্রিটেনের উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছিলা ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে।

সেই প্রথম জাহাজের বহর এসে পৌছার পর থেকে বিগত দুইশত ত্রিশ বছর সময়কালে দেশটি অনেক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে গিয়েছে। বর্তমান পৃথিবীতে অস্ট্রেলিয়া একটি সুপরিচিত নাম। প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির দেশটিতে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনের জন্য সারা পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকেই প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক মানুষ অস্ট্রেলিয়াতে আসছেন, এদেশকে তাদের নিজেদের দেশ হিসেবে গ্রহণ করছেন। অন্যদিকে বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে উদযাপন করার চিন্তা থেকে অস্ট্রেলিয়াও সবাইকে বরণ করে নেয়।

বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। দেশটি প্রতিবছর সর্বোচ্চ এক লক্ষ নব্বই হাজার মানুষকে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার অনুমোদন বা পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি দেয়ার সরকারী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। প্রতিবছর যারা এদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে থাকেন তাদের মাঝে দুই-তৃতীয়াংশ মানুষই বিভিন্ন স্কিলড ক্যাটাগরি বা পেশার ভিত্তিতে ভিসা পান। অন্যদিকে এক-তৃতীয়াংশ স্থায়ী বাসিন্দা আসেন পারিবারিক সূত্রে; কোন নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দার স্বামী-স্ত্রী, সন্তান কিংবা বাবা-মা হওয়ার কারণে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্কিলড মাইগ্রেন্টদের মাঝে সবচেয়ে বেশি মানুষ আসেন ভারত থেকে, এর পরেই আছে ইংল্যান্ড এবং চীনের স্থান। অন্যদিকে পারিবারিক আত্মীয়তার সূত্রে অভিবাসী হয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ আসেন চীন থেকে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে আছে ইংল্যান্ড এবং ভারত।

বাংলাদেশ বিপুল জনসংখ্যার একটি দেশ। এক সময় মনে করা হতো বাংলাদেশের জনসংখ্যা দেশটির জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে, কিন্তু গত কয়েক দশকের বাস্তবতা পরিস্কারভাবেই প্রমাণ করে দেয় যে জনসংখ্যা বাংলাদেশের সমস্যা নয়। বাংলাদেশের সমস্যা হলো সঠিক নীতিমালার অভাব, সুষ্ঠ পদ্ধতি এবং ব্যবস্থাপনার অভাব। যথাযথভাবে কাজ করলে বাংলাদেশের জনসংখ্যা দেশটির জন্য সম্পদ হয়ে দাঁড়াবে। আগামীর পৃথিবীতে যখন গ্লোবাল ওয়ার্মিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং অটোমেশন ইত্যাদি সূচকের কারণে অর্থনীতি ও সমাজের নানা দিকে উল্লেখযোগ্য এবং অভাবনীয় সব পরিবর্তন আসবে, তখন দক্ষ এবং যোগ্য মানবসম্পদ হয়ে উঠবে পৃথিবীর চালিকাশক্তি।

আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত বর্তমানে অভিবাসনের দিক থেকে পৃথিবীর অন্যতম অগ্রবর্তী দেশ। এছাড়াও এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের প্রচুর মানুষ নিজ যোগ্যতার আজ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ছে, আন্তর্জাতিক কর্মযজ্ঞে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে। কিন্তু এই প্রেক্ষিতে পরিস্কারভাবেই বাংলাদেশ এখনো অনেক পেছনে। আমাদের নিজেদের এই অবস্থা নিয়ে সৎ আত্মসমালোচনা এবং সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত নীতিমালা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা এখন সময়ের দাবী।

আমরা যদি অস্ট্রেলিয়ার দিকে তাকাই তাহলে দেখি অস্ট্রেলিয়া প্রতিবছর বিভিন্ন কাজে দক্ষ জনশক্তিকে এদেশে আনতে উদগ্রীব। যেসব কাজের জন্য এদেশের মানুষ দরকার, সে সব পেশার তালিকা প্রতিবছরই এদেশের সরকার আপডেট করে থাকে। কিন্তু যথার্থ পরিকল্পনা করে এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে পড়ালেখা এবং কাজ করার মাধ্যমে অভিবাসনের চিন্তা আমাদের দেশে একেবারেই অনুপস্থিত। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পারিবারিক উৎসাহে কিংবা চাপে অথবা ব্যক্তিগত প্রণোদনায় অনেকে বিদেশে চলে আসছে। কিন্তু এক্ষেত্রে যদি আগে থেকেই কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জানা থাকে এবং অভিবাসনের নানা দিক সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে তা যে কোন মানুষের জন্য খুবই সহজ একটি বিষয় হতে পারে।

এক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো ভাষাগত। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একজন ছাত্র বা ছাত্রী ভালোভাবে ইংলিশ শিখতে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যোগাযোগের দক্ষতা অর্জন করতে সাধারণত ব্যর্থ হয়। বর্তমানের ছোট হয়ে আসা পৃথিবীতে ইংলিশ সহ নানা ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পলিসি পরিবর্তনের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের দেশের নীতিনির্ধারণী মহলের মানুষদের দেখা দরকার। অন্যথায় এ পশ্চাতপদ অবস্থা থেকে উত্তরণ দিন দিন কঠিনই হতে থাকবে।

অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যায় ভারতের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপিন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলো থেকেও প্রতিবছর প্রচুর সংখ্যক পেশাজীবী মানুষ অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা হচ্ছেন। নেপালের জনসংখ্যা যেখানে বাংলাদেশের প্রায় সাত ভাগের এক ভাগ, সেই দেশ থেকেও প্রতিবছর প্রচুর মানুষ অস্ট্রেলিয়াতে অভিবাসী হয়ে আসছেন। এ তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান অনেক নিচে। অথচ প্রতিবছর বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী পড়ালেখা শেষ করে বের হচ্ছে, তাদেরকে একটু যথাযথ পরামর্শ দেয়া গেলে এবং পরিকল্পনা করে আগালে তাদের অনেকেই অস্ট্রেলিয়া সহ বিশ্বের নানা দেশে গিয়ে সেসব দেশের এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মূল্যবান ভূমিকা রাখার সুযোগ পেতো।

বিপুলায়তনের দেশ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানতম শহরগুলো বলতে সিডনি, মেলবোর্ণ, কুইনসল্যান্ড এসব শহরকেই বুঝায়। যখন এদেশে অভিবাসীরা আসেন তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব শহরে এসে থাকেন। আড়াই কোটি জনসংখ্যার মাঝে প্রায় এক কোটি মানুষই বাস করেন এই তিনটি এলাকায়। তাই এই এলাকাগুলোকে অস্ট্রেলিয়ান সরকার জনসংখ্যাবহুল হিসেবে ধরে নিয়ে অন্যান্য এলাকায় জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে। উদাহরণস্বরুপ, নর্দান টেরিটরি অঞ্চলে যদি কেউ অভিবাসন নিয়ে আসতে চায় তাহলে তার জন্য ভিসার শর্তাবলী এদেশে এখন সরকারীভাবে অপেক্ষাকৃত সহজতর করে দেয়া হয়েছে। অনেকগুলো পেশার মানুষদের জন্যই এখন এ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। উদাহরণস্বরুপ মটর মেকানিক, রিটেইল ম্যানেজার, বাস ও ট্রাক ড্রাইভার, বুচার, বিউটি থেরাপিস্ট হর্টিকালচার বিশেষজ্ঞ, শেফ এবং কুক, ওয়েল্ডার, ফ্রুট গ্রোয়ার সহ আরো অনেক কাজের কথা বলা যায়। এসব কাজে প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ মানুষেরা এখন সরাসরি কাজ নিয়ে নর্দান টেরিটরিতে থাকার জন্য আসলে এবং পাঁচ বছর থাকলেই পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি পেয়ে যাবেন।

একইভাবে সাউথ অস্ট্রেলিয়া স্টেটেও অভিবাসন সহজতর করার জন্য সে রাজ্যের সরকার সাম্প্রতিক সময়ে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। এরকম একটি নতুন সুযোগ হলো যদি কোন ছাত্রছাত্রী মার্চ ২০১২ কিংবা তার পুর্বে থেকেই সাউথ অস্ট্রেলিয়ার কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেছে এবং ধারাবাহিকভাবে সাউথ অস্ট্রেলিয়া এলাকাতেই বসবাস করে এসেছে এমন হয় তাহলে পেশাগত কোন বাধ্যবাধকতা ছাড়াই স্টেট-মনোনীত ভিসা পাওয়ার সুযোগ পাবে। তাছাড়া সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় বড় অংকের বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই সহজ শর্তে ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন ধরণের একটি ভিসা প্রবর্তনের সংবাদ সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।

এসব নানা স্টেট বা রাজ্যের অভিবাসন-চিত্রের বাহিরে পুরো অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায় প্রকৌশলী, তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবি, একাউন্টেন্ট, ডেন্টিস্ট, ফার্মাসিস্ট, নার্স, রেডিওলজিস্ট, ইলেকট্রিশিয়ান, কুক, প্লামবার সহ বিভিন্ন বিশেষায়িত কাজে যারা প্রশিক্ষিত এবং কাজের অভিজ্ঞতা রাখেন তাদের জন্য এদেশে সহজেই অভিবাসনের সুযোগ রয়েছে। যে কোন পেশার মাধ্যমেই অভিবাসনের ক্ষেত্রে যথাযথ শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কাজের অভিজ্ঞতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তার পাশাপাশি ইংলিশ ভাষায় দক্ষতা নিরুপণের মাপকাঠি হিসেবে আইইএলটিএস পরীক্ষার ফলাফলও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে কেউ যদি তথ্য অনুসন্ধান করে, অভিজ্ঞ মানুষদের কাছ থেকে প্রয়োজন হলে পরামর্শ নেয় এবং আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে তাহলে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন অসম্ভব কোন কাজ নয়।

তবে সার্বিকভাবে বিচার করলে অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন নীতিমালা কিছুটা জটিল। একই সাথে এই নিয়মকানুনগুলো খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল। অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিতে অভিবাসন নীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ। সুতরাং সরকার পরিবর্তনের পাশাপাশি প্রায় নিয়মিতই অভিবাসন সংক্রান্ত নানা নিয়মকানুন পরিবর্তন হয়। সুতরাং কেউ যদি এ দেশে অভিবাসনের চিন্তা করেন এবং প্রাথমিক পর্যালোচনায় বয়স, শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতা এসব মিলে নিজেকে সম্ভাবনাময় প্রার্থী বিবেচনা করেন তখন একজন পেশাদার অভিবাসন বিষয়ক পরামর্শদাতা বা মাইগ্রেশন এজেন্ট এক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়াটিকে সহজতর এবং সম্ভব করে তুলতে ভালো ভূমিকা রাখতে পারেন।

এক্ষেত্রেও বাংলাদেশের একটি বড় সমস্যা হলো অভিবাসন পরামর্শের ব্যবসায় লোভ এবং অসততার বিস্তার। প্রতিনিয়ত প্রচুর বাংলাদেশী মানুষ এক্ষেত্রে প্রতারিত হওয়াতে বর্তমানে এক্ষেত্রে সর্বত্রই আস্থার অভাব দেখা যায়। এর ভেতরেই কেউ যদি আন্তরিক ও সচেষ্ট হয় তাহলে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের মাইগ্রেশন এজেন্টস সংক্রান্ত দপ্তর থেকে নিবন্ধিত পেশাজীবি পরামর্শক বা আইনজীবী, যার অস্ট্রেলিয়ার সরকারী ভ্যালিড এমএআরএন (মাইগ্রেশন এজেন্টস রেজিস্ট্রেশন নাম্বার) সহ অনুমোদন আছে এমন কোন প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে বের করতে হবে। এ ধরণের লাইসেন্স নিয়ে যারা কাজ করেন তারা সাধারণত ন্যুনতম পেশাগত সততা ও মান বজায় রাখতে বাধ্য হন, কারণ অন্যথায় কোন সমস্যার ভুক্তভোগী যদি অস্ট্রেলিয়ান সরকারের কাছে অভিযোগ করে এবং সে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয় তাহলে তখন এ কাজের লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হয়।

অভিবাসীদের দেশ অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ। চলতি বছরে অভিবাসন নীতিমালায় অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসছে, কিছু পরিবর্তন এর মাঝেই কার্যকর হয়েছে। নতুন প্রবর্তিত প্যারেন্টস ভিসায় অভিবাসীরা তাদের বাবা-মা’দেরকে দীর্ঘ সময়ের জন্য এদেশে নিয়ে আসার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন। অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বামী-স্ত্রী’দের জন্য পার্টনার ভিসা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে সরকার নতুনভাবে কিছু কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে। এর অর্থ এই না যে এসব ভিসা প্রদান বন্ধ হয়ে যাবে। বরং এসব নিয়মের মাধ্যমে এসব ভিসাপ্রত্যাশীদের সংখ্যা কিছুটা কমিয়ে আনাই হলো উদ্দেশ্য। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার ভেতরে যেসব অভিবাসী কাজ করছেন তাদের অনেকের ট্যাক্স রেকর্ড এবং বেতন/পারিশ্রমিকের রেকর্ড ইত্যাদি মিলিয়ে দেখা হবে তারা তাদের কাজসংক্রান্ত যেসব তথ্য সরকারকে দিয়ে যাচ্ছেন তা আসলেই ঠিক এবং যথার্থ কি না।

এভাবে বিভিন্ন কঠিন ও সহজ নীতিমালার মাঝেই সঠিক প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত যোগ্যতা থাকলে নিঃসন্দেহে অস্ট্রেলিয়া হতে পারে অভিবাসনে ইচ্ছুক বাংলাদেশীদের জন্য চমৎকার এক গন্তব্য। অপরুপ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই দেশ তার বাসিন্দাদেরকে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা উপহার দেয়। অস্ট্রেলিয়ান সমাজ একজন মানুষের জন্য ফেয়ার অপরচুনিটি বা যথাযোগ্য সুযোগ দেয়াতে বিশ্বাস করে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে উদারপন্থী চিন্তাভাবনা এবং দর্শনের প্রসার ঘটাতে অস্ট্রেলিয়া এখন বিশ্বের বুকে নিজেকে একটি মাল্টিকালচারালিজম চর্চা করা দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পেয়েছে। বাংলাদেশের প্রবাসীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের মেধা এবং যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। এটা নিশ্চিত করেই বলা যায় যে যদি যথাযথভাবে চেষ্টা করা হয় তাহলে অস্ট্রেলিয়াতেও বাংলাদেশী কমিউনিটির উন্নয়ন এবং বিকাশের এক অপূর্ব সম্ভাবনা আছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com