- “অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশীপ টেস্ট”-এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনি কী জানেন তা দেখা হয়।
- অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্ব পরীক্ষায় ২০টি মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন থাকে যার মধ্যে পাঁচটি অস্ট্রেলিয়ার মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে, এবং সেখান থেকে প্রতিটি উত্তর সঠিক হতে হবে।
- পরীক্ষার জন্য তিনবার সুযোগ বা বিকল্প দেওয়া হয়। কিন্তু তৃতীয়বারের পরেও উত্তীর্ণ হতে না পারলে নতুন করে পরীক্ষায় বসার আবেদন করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া একটি বৈচিত্র্যময় এবং বহুসাংস্কৃতিক মহাদেশ, যেখানে ২৭০ টিরও বেশি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম অবিচ্ছিন্ন সংস্কৃতিগুলির মধ্যে একটি নিয়ে যা নিয়ে দেশটি গর্ব করে এবং ১৯৪৫ সাল থেকে প্রায় সাত মিলিয়ন অভিবাসীকে স্বাগত জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। আবেদন করার আগে আপনাকে অবশ্যই একটি
অভিবাসীরা বিশেষ মানদন্ড পূরণ করে ‘কনফেরাল’ পদ্ধতিতে এবং পিতা বা মাতার কেউ একজন অস্ট্রেলিয়ান হলে ‘ডিসেন্ট’ ক্যাটাগরিতে নাগরিকত্বের জন্য সাধারণভাবে আবেদন করা যায়।
অভিবাসন আইনজীবী ইভা আবদেল-মেসিয়াহ শত শত মানুষকে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পেতে সহায়তা করেছেন।
তিনি বলেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হল স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া।
তিনি বলেন, বৈধভাবে কোন ভিসায় টানা চার বছর অবস্থান করলে, সেইসাথে ১২ মাসের বেশি অন্য দেশে না থাকলে এবং এর মধ্যে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি বা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার শেষ বছরে তিন মাসের বেশি অন্য দেশে না থাকলে এই মানদন্ড পূরণ করা যায়।
এর পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্বের জন্য ১৮ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীদের অবশ্যই ‘ভাল চরিত্র’ দেখাতে হবে, যা স্থায়ী নৈতিক গুণাবলী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
- অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করার বা বিদেশে থাকাকালীন সংযুক্ত থাকার পরিকল্পনা,
- ইংরেজি ভাষার প্রাথমিক জ্ঞান,
- অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে তথ্য,
- অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হওয়ার অর্থ কী।
আর এগুলো সম্পর্কে মূল্যায়নের জন্য বেশিরভাগ আবেদনকারী নাগরিকত্ব পরীক্ষায় বসেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রতীক, গণতান্ত্রিক বিশ্বাস, অধিকার এবং স্বাধীনতা সম্পর্কে জানা, এবং সর্বোপরি অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হওয়ার অর্থ কী তা বোঝার বিষয়টি পরীক্ষা করা হয়।ইভা আবদেল-মেসিয়াহ, অভিবাসন আইনজীবী
মিজ ইভা ব্যাখ্যা করে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রতীক, গণতান্ত্রিক বিশ্বাস, অধিকার এবং স্বাধীনতা সম্পর্কে জানা, এবং সর্বোপরি অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হওয়ার অর্থ কী তা বোঝার বিষয়টি পরীক্ষা করা হয়।
২০টি মাল্টিপল চয়েস বা বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকে।
এতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতীক, ঐতিহাসিক ঘটনা, সরকারী কাঠামো এবং নাগরিকত্বের অধিকার এবং দায়িত্বের মতো বিভিন্ন বিষয় থাকে।
মিজ ইভা বলেন, এই ২০টি প্রশ্নের মধ্যে পাঁচটি অস্ট্রেলিয়ার মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে, এবং সেখান থেকে প্রতিটি উত্তর সঠিক হতে হবে। তাই, পরীক্ষার পাস মার্ক ৭৫% হলেও অস্ট্রেলিয়ার মূল্যবোধ সম্পর্কিত ওই পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর কোন একটি ভুল হওয়া মানে পুরো পরীক্ষায় ফেল বলে গণ্য হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট (
)) সরকারী নাগরিকত্ব পরীক্ষার রিসোর্স বুকলেট থেকে অধ্যয়ন করার সুপারিশ করে, যাকে বলা হয়
পুস্তিকাটি ৪০টি ভাষায় পাওয়া যায়, এবং আপনি ওয়েবসাইটে দেওয়া পডকাস্ট লিঙ্কের মাধ্যমেও শুনতে পারেন।
পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য “আওয়ার কমন বন্ড” বুকলেটে রয়েছে। আপনাকে অবশ্যই এটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝতে হবে এবং এটি মুখস্থ করতে আপনাকে সাহায্য করার জন্য নোটগুলি নিতে হবে।
আপনি
করা যায় এমন অনেক ওয়েবসাইটের একটিতে অনলাইন অনুশীলন পরীক্ষাও দিতে পারেন যা প্রকৃত পরীক্ষার অনুকরণ।
মিজ ইভা বলেন যে অনেক ফোন অ্যাপ থেকেও এগুলো দেখা যায় যা কম্পিউটারের ওয়েবসাইট লিঙ্ক থেকেও সহজ।
নাগরিকত্ব পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অস্ট্রেলিয়ান ইভেন্টগুলির বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে এবং এতে আদিবাসী এবং বহুসংস্কৃতির অস্ট্রেলিয়ানদের অবদান অন্তর্ভুক্ত থাকে।
তবে পরীক্ষা শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষায় হয়। সুতরাং, আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি ভাষা ভালভাবে বুঝতে হবে।
প্রশ্নগুলি বুঝতে হলে প্রয়োজনীয় শব্দগুলোর মানে জানা প্রয়োজন।
মিজ ইভা কিছু সাধারণ ভুল বা ত্রুটির কথাও বলেছেন যা আবেদনকারীদের নাগরিকত্ব পরীক্ষায় বসার সময় এড়ানো উচিত।
তিনি আবেদনকারীদের সাবধানে প্রশ্ন পড়তে, সময়সীমার মধ্যে থাকতে এবং উত্তরে ক্লিক করার জন্য তাড়াহুড়ো এড়াতে পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, পরীক্ষার জন্য তিনবার সুযোগ বা বিকল্প দেওয়া হয়। কিন্তু তৃতীয়বারের পরেও উত্তীর্ণ হতে না পারলে নতুন করে পরীক্ষায় বসার আবেদন করতে হবে।
নাগরিকত্ব পরীক্ষার প্রস্তুতির কোর্স অনেক নতুন অভিবাসী, উদ্বাস্তু এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের নাগরিকত্ব পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করেছে।
ভিকি হাইন, সিডওয়েস্ট মাল্টিকালচারাল সার্ভিস
সিডওয়েস্টের ভিকি হাইন বলেন, তাদের কোর্স অনেক নতুন অভিবাসী, উদ্বাস্তু এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের নাগরিকত্ব পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করেছে।
এই কোর্সটি সমস্ত অভিবাসীদের জন্য উন্মুক্ত।
সিডওয়েস্ট ২০১৪ সালে পশ্চিম সিডনিতে প্রথম নাগরিকত্ব লাভের পাঠদান শুরু করে।
মিজ হাইন বলেন, তারপর থেকে শত শত প্রার্থী সফলভাবে তাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং নাগরিকত্ব পেয়েছেন।