- অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপ আবেদনের জন্য সাধারণ রেসিডেন্সি থাকতে হবে
- সিটিজেনশিপ টেস্টে শতকরা ৭৫ ভাগ বা তার বেশি নাম্বার পেতে হবে
- কোভিড ১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে সিটিজেনশিপ প্রদান অনুষ্ঠানগুলো অনলাইনে হয়ে থাকে
অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপের জন্য আবেদন করতে অভিবাসীদের স্থায়ী বসবাসের কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়।
নাগরিক হতে হলে অবশ্যই তার আগে আবেদনকারীর পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট বা স্থায়ী বসবাসের ভিসা থাকতে হবে।
ব্রিসবেনের অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশন এজেন্সির মাইগ্রেশন এজেন্ট রুবি ফাউডের বলেন, কোন ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়ায় একটানা চার বছর বাস করে তার মধ্যে অন্তত এক বছর পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট অবস্থায় বাস করলে তিনি নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হবেন, কিংবা পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট ভিসা পেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আগমনের পর একটানা চার বছর বাস করলে তিনি নাগরিকত্ব পেতে আবেদন করতে পারবেন।
মিজ ফাউডের বলেন, স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক ভিসাধারীদের পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট বলে গণ্য করা হয় না।

সিটিজেনশিপের জন্য আবেদন
ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্স অনলাইন আবেদনের জন্য সুপারিশ করে, কারণ অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।
ডিপার্টমেন্ট বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপের জন্য নতুন আবেদন গ্রহণ করছে, এবং যেসব আবেদন জমা পড়েছে সেগুলোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে।
তবে, কোভিড ১৯ পরিস্থিতিতে মুখোমুখি ইন্টারভিউ এবং টেস্ট আপাতত বন্ধ আছে, এবং পরিস্থিতির উন্নতি হলে সেগুলো আবার চালু হবে।
সিটিজেনশিপ টেস্ট
সকল আবেদনকারীদের অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপ টেস্ট পাশ করতে হবে; সিটিজেনশিপ পাওয়ার পর যেসব অধিকার এবং দায়িত্ব পালন করতে হয় সে সম্পর্কে নাগরিকদের ধারণা যাচাই করতেই এই ব্যবস্থা।
এজন্য আবেদনকারীরা ‘অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপ-আওয়ার কমন বন্ড’ শিরোনামে একটি অনলাইন বুকলেট থেকে সাহায্য নিতে পারেন, এই বুকলেটের ওপর ভিত্তি করেই ২০টি মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন টেস্টে থাকবে।
ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্সের ফ্যামিলি এন্ড সিটিজেনশিপ প্রোগ্রামের কর্মকর্তা ড্যামিয়েন কিলনার বলেন, পরীক্ষার প্রশ্নগুলো অনেকটা সোজাসাপ্টা এবং এর জন্য মাত্র ত্রিশ মিনিট সময় লাগবে।
প্রত্যাশা করা হয় যে প্রার্থীরা টেস্টের প্রস্তুতির জন্য ওই ম্যাটেরিয়ালগুলো ভালো করে পড়ে নেবে এবং যখন তারা মনে করবে যে তাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট ভালো তখন তারা টেস্টে অংশ নেবে।
টেস্টে পাশ করতে হলে শতকরা ৭৫ ভাগ নাম্বার পেতে হবে। যদি কেউ টেস্টে কৃতকার্য না হয় তবে কোন ফী ছাড়াই সেদিনই পুনরায় টেস্ট দিতে পারবে বা নতুন করে টেস্টের জন্য বুকিং দিতে পারবে।

নাগরিকত্ব প্রদান অনুষ্ঠান
যখন নাগরিকত্বের আবেদন অনুমোদিত হবে তখন প্রার্থীদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হবে এবং অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপ অঙ্গীকারপত্র পাঠ করতে হবে।
এই অনুষ্ঠানটির আমন্ত্রণ পেতে তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত লাগতে পারে, এবং প্রার্থীদের এক বছরের মধ্যে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অঙ্গীকারপত্র পাঠ করতে হবে।
তবে, প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া সম্ভব না হয় তবে অনুমোদিত নাগরিকত্ব বাতিল হবে না।
অনুষ্ঠানগুলো সাধারণত এক থেকে দু’ঘন্টার মধ্যে সম্পন্ন হয়, এবং সিটি কাউন্সিলগুলো এর আয়োজন করে থাকে। তবে কোভিড ১৯ মহামারীর এই সময়ে সিটিজেনশিপ অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াটি নিরাপদ ভিডিও-লিংকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, এটি যারা নাগরিকত্বের অনুমোদন পেয়েছে তাদের সুবিধা করে দিয়েছে।
অনলাইন অনুষ্ঠানটি কম সময়ে সম্পন্ন হয়, যদিও পরিচয় পত্র এবং অন্যান্য আইনগত বিষয়াদি নিশ্চিত করতে কিছুটা সময় নিতে পারে।

মিঃ কিলনার বলেন, সিটিজেনশিপ অনুষ্ঠানের সময় কাউন্সিলের একজন চিফ এক্সেকিউটিভ অফিসার একটি ভূমিকা পাঠ করবেন, যেটি সিটিজেনশিপ আইনের মধ্যে নির্দিষ্ট করে বিবৃত আছে।
সিটিজেনশিপ প্রদান অনুষ্ঠানে ‘ওয়েলকাম তো নেশন’ বা ‘ওয়েলকাম তো কান্ট্রি’ এমন ভূমিকা এবং মিনিস্টারের পাঠানো বার্তা পাঠ করা হয়, এসময় জাতীয় সংগীত বাজানো হয়, এবং প্রার্থীরা অঙ্গীকারপত্র পাঠ করেন।
নাগরিকত্ব অঙ্গীকারপত্র পাঠের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সমাজে সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রতিজ্ঞা করে থাকেন।
সিটিজেনশিপ অনুষ্ঠান শেষে একজন প্রার্থী অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণকারী অন্য নাগরিকদের মত একই অধিকার এবং কর্তব্য পালন করতে পারবেন।
এই অধিকারের মধ্যে আছে ভোটাধিকার প্রয়োগ, সন্তান দত্তক নেয়া, অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্ট নেয়া, ইউনিভার্সিটি খরচের জন্য লোন নেয়া, নির্বাচনে দাঁড়ানো ইত্যাদি।