বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৭ অপরাহ্ন

অস্ট্রেলিয়ায় স্কলারশিপের সঙ্গে চাকরিসহ নানা সুবিধা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪

উদ্ভাবনশীলতা ও উৎপাদনশীলতার বাস্তবিক সন্নিবেশে নিহিত থাকে একটি দেশের সমৃদ্ধির রূপকল্প। এই মেলবন্ধন গঠনের একদম অঙ্কুরে কাজ করে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। একটি বিশ্ববিদ্যালয় কেবল অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য একটি জায়গা নয়, বরং উন্নত দেশ গঠনে দক্ষ কর্মীর মূল জোগানদাতা। যুগের সেরা সব মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটিয়ে ঠিক এ তত্ত্বেরই ব্যবহারিক রূপ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ওশেনিয়া মহাদেশের এ বৃহত্তম ভূখণ্ডে যুগ যুগ ধরে চলছে বিশ্বের সর্বোচ্চ মানের শিক্ষাচর্চা। পড়াশোনার জন্য বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী মেধাবীর কাছেই দেশটি এখন পছন্দে প্রথমের দিকে। চলুন, অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, জীবনযাত্রার খরচ ও স্কলারশিপ–সংক্রান্ত যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

কিউএস ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিংয়ে ২০২৫ সালের জন্য শীর্ষ ১০ শিক্ষার্থীবান্ধব নগরীর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন (৫) ও সিডনি (৬)। জীবনযাত্রার খরচ অনেক বেশি থাকা সত্ত্বেও এই মেগাসিটি দুটিতে অনায়াসেই জায়গা করে নিচ্ছেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। তা ছাড়া দুটি শহরসহ আরও বেশ কয়েকটি শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতিবছরই থাকে কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ে। ২০২৪-এ প্রথম অর্ধশতকের মধ্যে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো: ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন (১৩), ইউনিভার্সিটি অব সিডনি (১৮), ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস (১৯), অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (৩০), মোনাশ ইউনিভার্সিটি (৩৭) ও ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড (৪০)।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এমন র‍্যাঙ্কিংয়ে থাকার অন্যতম কারণ হলো এগুলোর প্রতিটি দুইয়ের অধিক বিষয়ের পাঠদানের জন্য সেরা। প্রকৌশল, প্রযুক্তি, মেডিসিন, কলা ও মানবিকের নাম করলে প্রায়ই ঘুরেফিরে এই বিদ্যাপীঠগুলোর নাম আসে।

বিশ্বের ১৩তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ অস্ট্রেলিয়া। এর ফলে দেশটির নাগরিকেরা উন্নত মানের অবকাঠামো, আধুনিকতা ও সর্বোচ্চ মানের স্বাস্থ্যসেবার মতো সুবিধাগুলো পেয়ে থাকেন। সব মিলিয়ে পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার গঠনে উন্নয়নশীল দেশের ছাত্রছাত্রীদের জন্য অস্ট্রেলিয়া নিঃসন্দেহে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।

সেরা বিশ্ববিদ্যালয় কোনগুলো:·ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন, ইউনিভার্সিটি অব সিডনি, ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মোনাশ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া, ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডিলেড, ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনি, আরএমআইটি ইউনিভার্সিটি।

সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন বিষয় কোনোগুলো: অ্যাকাউন্টিং, অ্যাকচুয়ারিয়াল সায়েন্স, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি, সাইকোলজি, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, আর্কিটেকচার, ইঞ্জিনিয়ারিং, হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড নার্সিং, বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট।

আবেদনের সময় কবে: বছরজুড়ে সাধারণত তিনটি মৌসুমে ভর্তির জন্য আবেদন গ্রহণ করে থাকে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। মৌসুমগুলো ফেব্রুয়ারি, জুলাই ও নভেম্বর ইনটেক হিসেবে পরিচিত। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কোর্সে ভর্তির সুযোগ থাকে ফেব্রুয়ারি ইনটেকে। ভর্তি কার্যক্রম চলে ফেব্রুয়ারি বা মার্চ থেকে শুরু করে মে মাসের শেষ বা জুনের শুরু পর্যন্ত। আবেদন গ্রহণ করা হয় আগের বছরের অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে। ইন্টার্নশিপ বা কর্মসংস্থান পাওয়ার ক্ষেত্রে এই মৌসুমই সর্বাধিক উপযুক্ত। জুলাই ইনটেকের আবেদন নেওয়া হয় এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত। অতঃপর ভর্তি শুরু হয় জুলাইয়ের শেষ বা আগস্টের শুরুর দিকে। তারপর নভেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে ছাত্রছাত্রী ভর্তি। সর্বশেষ নভেম্বর ইনটেকে আবেদনের সময় সেপ্টেম্বর মাস। ভর্তিপ্রক্রিয়া চলমান থাকে নভেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত।

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অনলাইন পোর্টালে আবেদন করা যায়। মৌসুমগুলোকে কেন্দ্র করে ওয়েবসাইটগুলোতে ভর্তির শর্ত, কোর্সের পর্যাপ্ততা ও আবেদনের সময়সীমা হালনাগাদ করা হয়। তাই অনলাইন আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ অন্য বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জানতে প্ল্যাটফর্মগুলোতে চোখ রাখা উচিত। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

অনলাইন আবেদনপত্র

একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট এবং সার্টিফিকেট: স্নাতকের ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিকের নথি, স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতকের নথি এবং পিএইচডির জন্য স্নাতকোত্তরের শংসাপত্র

ইংরেজি ভাষা দক্ষতার প্রমাণপত্র: ন্যূনতম যোগ্যতা স্বরূপ আইইএলটিএস স্কোর ৬, টোয়েফেল আইবিটিতে ৬৪, কেমব্রিজ ইংলিশ: অ্যাডভান্সডে ১৬৯, বা পিটিই (পিয়ারসন টেস্ট অব ইংলিশ) একাডেমিক-এ ৫০।

সিভি বা পোর্টফোলিও

এসওপি (স্টেটমেন্ট অব পার্পাস) বা পার্সোনাল স্টেটমেন্ট

লেটার অব রিকমেন্ডেশন (এলওআর)

রিসার্চ প্রপোজাল (ডক্টরাল প্রোগ্রামের জন্য)

পেশাগত অভিজ্ঞতাপত্র (এমবিএ প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে)

বৈধ পাসপোর্ট

সাম্প্রতিক ছবি

অধ্যয়ন ফির জন্য আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণের জন্য কমপক্ষে কোর্সের প্রথম ১২ মাসের ফি। কোর্স ১২ মাস বা এর কম হলে সম্পূর্ণ ফি পরিশোধ করতে হবে।

স্বাস্থ্যবিমাস্বরূপ ওএসএইচসি (ওভারসিজ স্টুডেন্ট হেলথ কভার)

আবেদন ফি: সাধারণত ৫০ থেকে ১০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার বা ৪ হাজার ৯৩ থেকে ৮ হাজার ১৮৫ টাকা (১ অস্ট্রেলিয়ান ডলার= ৮১ দশমিক ৮৫ বাংলাদেশি টাকা)।

এর বাইরেও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথি চাওয়া হতে পারে। কোনো কাগজ বাংলায় হলে তা অবশ্যই ইংরেজিতে অনুবাদ করে মূল কপিসহ অনূদিত কপি স্ক্যান করতে হবে। এখানে অনুবাদককে অবশ্যই জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হতে হবে।
স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন পদ্ধতি

স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের মতো কোর্সগুলোতে অধ্যয়নের অনুমতি দেয় অস্ট্রেলিয়ার সাবক্লাস ৫০০ স্টুডেন্ট ভিসা। এখানে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দসই বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন। এ ভিসার আবেদন অফলাইন ও অনলাইন দুই মাধ্যমেই করা যায়। আবেদনের পুরো প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করার জন্য দুটো প্ল্যাটফর্ম আছে। অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র বিভাগের ওয়েবসাইটের অন্তর্ভুক্ত ইমি পোর্টাল (https://online.immi.gov.au/lusc/register) ও ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিসেস) গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম (https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/aus/register)।

যেকোনো একটিতে অ্যাকাউন্ট খুলে আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু করা যায়। তবে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য অবশ্যই ভিএফএস সাইটের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। উভয় ক্ষেত্রেই আবেদনের জরুরি কাগজপত্র আপলোডসহ আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়।

ভিসার আবেদনের কাগজপত্র

বৈধ পাসপোর্টের সঙ্গে জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রত্যয়িত অনুলিপি

অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীর ভর্তির অফার লেটার

স্বাস্থ্যবিমা হিসাব ও এসএইচসি: বিমার মূল্যমান ন্যূনতম বার্ষিক ১ হাজার ডলার বা ৮১ হাজার ৮৫০ টাকা

শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট এবং সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেফারেন্স বা রিকমেন্ডেশন লেটারের প্রত্যয়িত অনুলিপি)

পিএইচডির জন্য থিসিস বা রিসার্চ প্রপোজাল; সঙ্গে সিভি

আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ: জীবনযাত্রার খরচ বাবদ ১২ মাসের জন্য ২৯ হাজার ৭১০ ডলার (২৪ লাখ ৩১ হাজার ৭৭২ টাকা), ভ্রমণ খরচ ২ হাজার ডলার (১ লাখ ৬৩ হাজার ৭০০ টাকা)। এর প্রমাণস্বরূপ নিজের নামে থাকা ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রদর্শন করতে হবে। শিক্ষার্থী এ খরচ বহন করলে তার আয়ের উৎস হিসেবে কর্মসংস্থানের প্রমাণ: চাকরিজীবী হলে চাকরির বেতন, পদবি ও সময়কাল উল্লেখপূর্বক নিয়োগকর্তার কর্মসংস্থান শংসাপত্র।

সেরা ট্যুর প্যাকেজ

কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ তুলে থাকলে তার বিস্তারিত চুক্তিনামা

স্কলারশিপের ক্ষেত্রে স্কলারশিপ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিবৃতিপত্র

এ ছাড়া অন্য কেউ আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকলে যে তথ্যগুলো দিতে হবে, তা হলো—অর্থসহায়তা প্রদানকারীর সঙ্গে শিক্ষার্থীর সম্পর্কের প্রমাণ, তাঁদের পরিচয়নথি, আর্থিক সহায়তা প্রদানের প্রমাণপত্র, স্বাস্থ্য শংসাপত্র

অস্ট্রেলিয়ান ভ্যালু স্টেটমেন্টে সই বা সম্মতি প্রদান

প্রতিটি নথির মূল এবং অনুলিপি উভয় কপির রঙিন ও স্পষ্ট স্ক্যান করতে হবে, যেন তা সহজে পাঠযোগ্য হয়। কোনো নথি একের অধিক পৃষ্ঠার হলে সবগুলোকে ১টি ফাইলে নিতে হবে।

পরিচয়ের নথিগুলো প্রতিটি অনূর্ধ্ব ৫০০ কিলোবাইট আর বাকি নথিগুলোর প্রতিটি সর্বোচ্চ ৫ মেগাবাইট পর্যন্ত হতে পারবে।

বায়োমেট্রিক নিবন্ধন

ভিসা কেন্দ্রে যাওয়ার আগে অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/aus/register লিংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। যাঁরা এর আগে ভিসা আবেদনের জন্য এই সাইট ব্যবহার করেছেন, তাঁদের আর নতুন করে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে না। শুধু সাক্ষাৎকারের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং দিলেই হবে। ই-মেইলের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য নির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেওয়া হবে। এ লেটার প্রিন্ট করে সেই নির্দিষ্ট সময়ানুযায়ী পাসপোর্ট ও ভিসা আবেদনের যাবতীয় নথি সহকারে কন্স্যুলেট অফিসে যেতে হবে। এগুলোর কোনোটিই অফিসে রেখে দেওয়া হবে না। কেবল প্রার্থীকে তাৎক্ষণিক যাচাইয়ের জন্য দরকার হবে।

ঢাকা ভিএফএস ঠিকানা: ডেল্টা লাইফ টাওয়ার (৪র্থ তলা), প্লট নম্বর ৩৭, রোড নম্বর ৪৫ ও ৯০, গুলশান উত্তর বাণিজ্যিক এলাকা, গুলশান সার্কেল ২, ঢাকা-১২১২।

চট্টগ্রামের ভিএফএস ঠিকানা: ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চট্টগ্রাম, (৫ম তলা), ১০২/১০৩ আগ্রাবাদ সিএ, কমার্স কলেজ রোড, চট্টগ্রাম-৪১০০।

সিলেট ভিএফএস ঠিকানা: মার্চেন্ট টাওয়ার, ২য় তলা, পূর্ব মীরাবাজার, সিলেট-৩১০০।

ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় এবং আনুষঙ্গিক খরচ

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে নিয়মিত ইমি অ্যাকাউন্ট বা ভিএফএস অ্যাকাউন্ট চেক করা জরুরি। কেননা যদি কোনো অতিরিক্ত তথ্য বা নথির প্রয়োজন হয়, তবে এই অ্যাকাউন্টে বা ই-মেইলের মাধ্যমে জানানো হবে। এ সময় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আরও কিছু কাগজপত্র প্রদানের প্রয়োজন হতে পারে। এগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা জরুরি হচ্ছে পুলিশ সার্টিফিকেট। চরিত্র মূল্যায়নের জন্য ব্যক্তিগত বিবৃতিস্বরূপ দুটি ফরম পূরণ করতে বলা হতে পারে।

· ফরম নং ৮০ (https://immi.homeaffairs.gov.au/form-listing/forms/80.pdf)

·  ফরম নং ১৫৬৩ (https://immi.homeaffairs.gov.au/form-listing/forms/1563.pdf)

এ প্রক্রিয়ায় ভিসার প্রায় ৯০ শতাংশ প্রস্তুত হতে সাধারণত চার মাস সময় লেগে যায়।

সাবক্লাস ৫০০ স্টুডেন্ট ভিসা ফি ১ হাজার ৬০০ ডলার কিংবা ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৬০ টাকা। এটি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ফি ২ হাজার ১৫৫ টাকা সরাসরি ভিএফএস সেন্টারে নগদে জমা দিতে হবে।

পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার সম্ভাব্য খরচ কত

স্নাতক ডিগ্রির জন্য বাজেট রাখতে হবে ২০ থেকে ৪৫ হাজার ডলার, যা ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬ থেকে ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ২৬৩ টাকা। ২২ থেকে ৫০ হাজার ডলারের (১৮ লাখ ৭০৬ থেকে ৪০ লাখ ৯২ হাজার ৫১৪ টাকা) ব্যয়ভার রয়েছে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামগুলোতে। আর ডক্টরাল ডিগ্রিতে খরচ হয় ১৮ থেকে ৪২ হাজার ডলার (১৪ লাখ ৭৩ হাজার ৩০৫ থেকে ৩৪ লাখ ৩৭ হাজার ৭১২ টাকা)।

জীবনযাত্রার খরচের দিক থেকেও অস্ট্রেলিয়া যথেষ্ট ব্যয়বহুল। আবাসনে কমের মধ্যেই ক্যাম্পাস ডরমিটরির ভাড়া ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ ডলার। শেয়ার্ড অ্যাপার্টমেন্টে দিতে হয় ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ ডলার। স্থানীয় পরিবারের সঙ্গে থাকার ক্ষেত্রে ভাড়া ১ থেকে ১ হাজার ৪০০ ডলার।

এ ছাড়া প্রতি মাসে খাবার ও মুদির জন্য বাজেট রাখতে হবে ৬৫ থেকে ১০৩ ডলার। যাতায়াত বাবদ খরচ ৩০০ থেকে ৪০০ ডলার। বিদ্যুৎ, গ্যাস, মোবাইল ও ইন্টারনেটসহ ইউটিলিটি বাজেট ২৭০ থেকে ৪৯০ ডলার। তবে বিভিন্ন শহরের ওপর ভিত্তি করে এই গড় বাজেটে বেশ তারতম্য ঘটে। প্রধান কিছু শহরের জীবনযাত্রার খরচ হলো

ক্যানবেরা: ৪ হাজার ৩১০ ডলার

সিডনি: ৩ হাজার ৯৮২ ডলার

মেলবোর্ন: ৩ হাজার ৭৭৮ ডলার

পার্থ: ৩ হাজার ৭৭৪ ডলার

ব্রিসবেন: ৩ হাজার ৭২৬ ডলার

হোবার্ট: ৩ হাজার ৬১৪ ডলার

অ্যাডিলেড: ৩ হাজার ৫০২ ডলার

স্কলারশিপ

মেলবোর্ন ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপ স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। এখানে প্রথম বছরের জন্য ১০ হাজার ডলার অধ্যয়ন ফি ছাড় পাওয়া যায়।

মোনাশ ইন্টারন্যাশনাল লিডারশিপ স্কলারশিপ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরতদের জন্য। এখানে প্রোগ্রামের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রেডিট পয়েন্ট নির্ধারিত থাকে, যেটি পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত শতভাগ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

ইউটিএস ভাইস চ্যান্সেলরের ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের ৫০ শতাংশ ব্যয়ভার গ্রহণ করে থাকে।

গ্লোবাল একাডেমিক এক্সিলেন্স স্কলারশিপে (ইন্টারন্যাশনাল) প্রতিটি অনুষদে অসামান্য একাডেমিক ফলাফল অর্জনকারীদের অধ্যয়ন খরচ থেকে ৫০ শতাংশ মওকুফ করা হয়।

সাবক্লাস ৫০০ স্টুডেন্ট ভিসার একটি প্রধান সুবিধা হলো: সেমিস্টার চলা সময়ে প্রতি ২ সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা কাজ করা যায়। তবে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ক্ষেত্রে পূর্ণ বৈধতা পেতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অবশ্যই টিএফএন (ট্যাক্স ফাইল নম্বর) নিতে হবে। কেননা বিদেশি শিক্ষার্থীদের যাঁদের অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের ছয় মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে, তাঁদের অবশ্যই আয়কর দিতে হয়।

কাজের অবস্থান, অভিজ্ঞতা ও কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে চাকরির মজুরি ভিন্ন হয়ে থাকে। বিশেষ করে সিডনি, মেলবোর্ন বা পার্থের মতো শহরে মজুরির পরিমাণ অন্য শহরগুলোর তুলনায় বেশি।

প্রতি ঘণ্টায় মজুরিসহ অস্ট্রেলিয়ায় কিছু খণ্ডকালীন চাকরির তালিকা হলো

*ক্যাম্পাসের ভেতরের চাকরি: পিয়ার টিউটরিং ২৯ দশমিক ৪৫ ডলার; গবেষণা সহকারী: ৩০ ডলার, শিক্ষকতা সহকারী ৩৮ দশমিক ৪০ ডলার, লাইব্রেরিয়ান: ২৭ ডলার; বারিস্তা ২২ ডলার; বিক্রয় সহকারী: ৩০ ডলার।

ক্যাম্পাসের বাইরের চাকরি: খুচরা বিক্রেতা: ২৪ দশমিক ৭৬ ডলার; জ্বালানি পাম্প বা গ্যাসস্টেশন ২২ দশমিক ৪২ ডলার; নির্মাণ সাইট ৫০ ডলার; ডেলিভারি ড্রাইভার ৩০ দশমিক ৮৮ ডলার, পেট সিটার: ২২ ডলার; ট্রান্সলেটর ২৫ দশমিক ৮৭ ডলার।
সর্বোচ্চ মানের শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করায় সংগত কারণেই অস্ট্রেলিয়ার উচ্চশিক্ষা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। তাই এই অসামান্য সুযোগ লাভের জন্য স্কলারশিপ অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। এর প্রথম শর্ত হিসেবে স্নাতকের জন্য উচ্চমাধ্যমিকে এবং স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতকে দুর্দান্ত ফল অর্জন করা জরুরি। পাশাপাশি ইংরেজি ভাষা দক্ষতার পরীক্ষায়ও গড়পড়তার থেকে বেশি স্কোর থাকা উচিত।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com