চাই শুধু একটু চেষ্টা ও প্রস্তুতি
অনেকের ধারণা, অস্ট্রেলিয়ায় কাজ পাওয়া খুব কঠিন। কিন্তু বাস্তবে দৃশ্যপট একেবারেই ভিন্ন। যারা সামান্য প্রচেষ্টা, ধৈর্য এবং প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যান, তাদের জন্য কাজ পাওয়া মোটেও কঠিন নয়। প্রবাসজীবনের শুরুতে বা পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে নানা ধরনের কাজ সহজলভ্য-পেট্রোল পাম্প, সুপারশপ, রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, ফাস্টফুড চেইন, এজ কেয়ার কিংবা ডেলিভারি সার্ভিস। সব ক্ষেত্রেই রয়েছে প্রচুর সুযোগ।
কোলস (Coles), উলওয়ার্থস (Woolworths), আলডি (Aldi), কেএফসি (KFC), ডমিনোজ (Domino’s), অ্যামাজন (Amazon), অস্ট্রেলিয়া পোস্ট (Australia Post) ও উবার ইটস (Uber Eats)।–এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত নিয়োগ চলছে।
অস্ট্রেলিয়ার শ্রমবাজারে বেতনের হারও উৎসাহজনক। সার্ভিস স্টেশন বা সুপারশপে ঘণ্টাপ্রতি আয় ২৪ থেকে ২৮ ডলার, রেস্টুরেন্ট বা ক্যাফেতে ২৫ থেকে ৩৫ ডলার, আর বার বা পাব-এ কাজ করলে ঘণ্টায় ৪৫ ডলার পর্যন্ত পাওয়া যায়। সপ্তাহান্তে বা রাতের শিফটে এই হার আরও বেড়ে যায়। এজ কেয়ার বা সাপোর্ট ওয়ার্কার পেশায় ঘণ্টাপ্রতি বেতন ২৮ থেকে ৪২ ডলার পর্যন্ত, আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে তা ৬০ থেকে ৭০ ডলারেও পৌঁছায়।
ওয়্যারহাউজ বা প্যাকেজিং কাজের ক্ষেত্রেও ২৭ থেকে ৩৮ ডলার পর্যন্ত পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। অন্যদিকে ডেলিভারি ড্রাইভাররা লোকেশন ও সময়ের ওপর নির্ভর করে সপ্তাহে গড়ে ৮০০ থেকে ১২০০ ডলার বা তারও বেশি আয় করতে পারেন।
দরকারি স্কিল ও প্রশিক্ষণ-
কাজ পেতে হলে কিছু দক্ষতা অর্জন জরুরি। যেমন বারিস্তা, কাস্টমার সার্ভিস, আরএসএ (Responsible Service of Alcohol), ফার্স্ট এইড, ম্যানুয়াল হ্যান্ডলিং—এসব সার্টিফিকেট থাকলে চাকরির সুযোগ অনেক বেড়ে যায়। অনেক কোর্সই অনলাইনে সহজে সম্পন্ন করা যায়।
শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ-
অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ পান। নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা এবং ছুটির সময় সীমাহীন কাজ করার অনুমতি রয়েছে। ফলে মাসে গড়ে ৩,০০০ থেকে ৪,৫০০ ডলারের বেশি আয় সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অস্ট্রেলিয়ায় কাজের অভাব নেই, অভাব শুধু উদ্যোগের। কেউ আপনার জন্য চাকরি খুঁজে দেবে না—নিজেকেই প্রস্তুত হতে হবে, সঠিকভাবে সিভি তৈরি করতে হবে, আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে এবং যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতে হবে। যারা মন থেকে চেষ্টা করেন, তাদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার কর্মজীবন এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে সহজ ও সম্ভাবনাময়।
শেষ কথা-
অবশেষে বলা যায়, অস্ট্রেলিয়ায় সাফল্যের চাবিকাঠি হলো কাজ করার মানসিকতা। চেষ্টা থাকলে সুযোগ আসবেই, কিন্তু অতিরিক্ত আরামপ্রিয়তা থাকলে নয়। বাস্তবতা হলো—অস্ট্রেলিয়ায় কাজ আছে, শুধু আপনাকে তা খুঁজে নিতে জানতে হবে।