সোমবার (৫ মে) অনিয়মিত অভিবাসীদের বহিষ্কারে অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে পর্তুগিজ সরকার৷ চলতি সপ্তাহের মধ্যেই পর্তুগাল ছেড়ে যেতে প্রথম দফায় সাড়ে চার হাজার অনিয়মিত অভিবাসীকে নোটিশ দেয়া হচ্ছে৷ দেশটিতে বসবাসের অনুমতি পেতে ব্যর্থ হওয়া অন্তত ১৮ হাজার অভিবাসীকে পর্যায়ক্রমে বহিষ্কার করা হবে বলেও জানিয়েছে সরকার৷
সরকারি সূত্র অনুসারে, অভিবাসীরা মূলত ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালের নাগরিক৷ এসব অভিবাসীদের বহিষ্কার বাধ্যতামূলক হওয়ার আগে ২০ দিন সময় দেওয়া হবে৷ এই সময়ের মধ্যে তারা আপিলের সুযোগ পাবেন৷
যারা সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন তাদের আদালতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে এবং অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনে নির্ধারিত আটককেন্দ্রে রাখা হতে পারে৷ পর্তুগালে আটককেন্দ্রগুলো সিআইটি নামে পরিচিত৷
জনহিতকর পদক্ষেপ বলছেন বিরোধীরা
বর্তমানে পর্তুগালের পোর্তোর কাছে শুধু একটি কার্যকর প্রত্যাবাসন কেন্দ্র রয়েছে৷ ন্যাশনাল রিকভারি অ্যান্ড রিজিলিয়্যান্স প্ল্যান তহবিলের মাধ্যমে সেখানে আরো দুটি কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে৷ তবে ২০২৬ সালের আগে এগুলো ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব হবে না৷
এদিকে, সরকার ঘোষিত পদক্ষেপটি একটি বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো দি সোসা বলেছেন অভিবাসীদের ছাড়া পর্তুগিজ অর্থনীতি ভেঙে পড়বে৷
সরকারবিরোধী বামপন্থিরা ১৮ মে নির্ধারিত সাধারণ নির্বাচনের আগে সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে জনহিতকর উল্লেখ করে প্রকাশ্যে নিন্দা ও অভিযোগ করেছেন৷
বিরোধী সমাজতান্ত্রিক নেতা পেদ্রো নুনো সান্তোস বলেছেন, পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রো ‘‘নির্বাচনি প্রচারে অভিবাসনকে ব্যবহার করছেন, যাতে সরকারের ব্যর্থতাগুলো যাতে চাপা পড়ে যায়৷’’
আট বছরে বিদেশির সংখ্যা চারগুণ বেড়েছে
অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে ভিন্ন কথা৷ তাদের দাবি, বিদেশিদের বসবাসের অনুমতি সংক্রান্ত পরিষেবা সার্ভিস ফর ফরেইনার্স অ্যান্ড বর্ডার্স (এসইএফ) বন্ধ করে দিয়েছে সরকার৷ পরিবর্তে নতুন করে এজেন্সি ফর ইন্টিগ্রেশন, মাইগ্রেশন অ্যান্ড অ্যাসাইলাম (এইআইএমএ) চালু করা হয়েছে৷ কিন্তু এই দুইয়ের মধ্যবর্তী সময়ে পর্তুগিজ কর্তৃপক্ষের দেরির কারণে অনেক বিদেশি নাগরিক দেশটিতে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন৷
২০২৩ সালে পর্তুগালে অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে গেলে জটিল এই পদক্ষেপটি নিয়েছিল সরকার৷ পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশটিতে বিদেশির সংখ্যা চারগুণ বেড়েছে৷
সরকারি তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে সর্বাধিক সংখ্যক অভিবাসীকে বহিষ্কারের আদেশ জারি করা হয়েছিল৷ ওই সময় চার হাজার আটশো জনকে পর্তুগাল ছেড়ে যেতে বলা হয়েছিল৷ আর চলতি সপ্তাহে সাড়ে চার হাজার বিদেশিকে দেশ ছাড়ার নোটিশ দেয়া হচ্ছে৷