আগামী দুই বছরের মধ্যে অভিবাসী গ্রহণ অর্ধেকে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। দেশের ‘ভঙ্গুর’ অভিবাসন ব্যবস্থাকে ঠিক করতে নেওয়া হচ্ছে এ পদক্ষেপ।
২০২৫ সালের জুন নাগাদ বার্ষিক অভিবাসী গ্রহণের সীমা আড়াই লাখে নামিয়ে আনতে চায় অস্ট্রেলিয়া। করোনাভাইরাস মহামারীর আগে বছরে প্রায় এই পরিমাণ মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী হিসেবে যেত।
কিন্তু ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত রেকর্ড ৫ লাখ ১০ হাজার মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী হিসেবে প্রবেশ করেছে। এতে দেশের আবাসন ও অবকাঠামো খাতে চাপ বেড়ে যাওয়ায় সরকার অভিবাসী কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও’নিল বলেছেন, তার সরকার ‘এ সংখ্যা আবারও নিয়ন্ত্রণে আনবে’ এবং বার্ষিক অভিবাসী নেওয়ার সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনবে।
সরকারের নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও কম দক্ষ অভিবাসী কর্মীদের জন্য ভিসানীতি কঠোর করা হবে।
নতুন নীতির আওতায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষার পরীক্ষায় উচ্চতর ‘রেটিং’ পেতে হবে। একজন শিক্ষার্থীর দ্বিতীয় ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে আরও যাচাই-বাছাই করা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও’নিল জানান, ২০২২-২৩ সালে তার দেশে মোট বিদেশি অভিবাসন বেড়ে যাওয়ার পেছনে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভূমিকাই বেশি।
কোভিড মহামারীর কারণে দুই বছর ধরে সীমান্ত কড়াকড়ি এবং বিদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মী নেওয়া বন্ধ থাকায় বিভিন্ন খাতে যে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল, তা পূরণে গতবছর অস্ট্রেলিয়া বার্ষিক অভিবাসী নেওয়ার সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। আর তাতেই হঠাৎ করে অভিবাসীর সংখ্যা বিপুল বেড়ে গিয়ে ঘটে বিপত্তি।
অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও’নিল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আগের সরকারের আমলে অভিবাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দেশের ১০ বছর মেয়াদি নতুন অভিবাসন কৌশল বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি একথা বলেন। অভিবাসন ব্যবস্থায় বড়ধরনের সংস্কার দরকার বলে উল্লেখ করেন ও’নিল।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেছিলেন, দেশে অভিবাসীর সংখ্যা একটি টেকসই পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
তবে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী প্রবেশ বাড়লেও এখনও দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। দক্ষ শ্রমিক টানার পথও সহজ করার চেষ্টা নিচ্ছে দেশটি। খুবই দক্ষ শ্রমিকদের জন্য চটজলদি ভিসা হয়, এমন নতুন একটি বিশেষ ভিসা ব্যবস্থা চালু করবে সরকার।