আন্তর্জাতিক এনজিও সেভ দ্য চিলড্রেন ও গবেষণা সংস্থা স্যামুয়েল হল সেন্টার সম্প্রতি জরিপে এ ফল পেয়েছে৷ জরিপের অধীন নারীদের প্রতি তিনজনের একজন বলেছেন, ইটালি বা স্পেন অভিমুখে যাত্রা শুরুর পর কোন না কোনভাবে নির্যাতন, নিপীড়ন ও সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন বা হতে দেখেছেন৷ গত ৩১ মে প্রকাশিত জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয়৷
২০২২ সালে করা এই জরিপে অংশ নেয়া নারীদের বয়স নয় থেকে ২৪ বছরের মধ্যে৷ তাদের বেশিরভাগই সাব-সাহারান আফ্রিকার৷ তারা লিবিয়া, টিউনিশিয়া ও মরক্কোর পথে যাচ্ছিলেন৷ মূল গন্তব্য ছিল ইটালি বা স্পেন৷
প্রতি পাঁচ নারীর একজন নিজের বাড়িতে সহিংসতার শিকার হওয়ার কারণে পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন৷ এদের সাত জনের একজন বাল্যবিবাহ এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান৷
নিপীড়ন ও সহিংসতার গল্প
২০ বছর বয়সি রাইনাতু স্পেনে থাকেন৷ তিনি সেভ দ্য চিলড্রেনের কাছে অভিযোগ করেছেন, তার বাবা তাকে প্রতিনিয়ত মারধর করতেন এবং তার চেয়ে অনেক বেশি বয়সি এক ব্যক্তির কাছে বিয়ে দেবার চেষ্টা করেন৷ সেই ব্যক্তির আগেই তিনজন স্ত্রী আছেন৷
‘‘আমরা বোনেরাও ঘর থেকে পালিয়ে যায়৷ তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে জানি না৷ আর আবার বাবা সেই খবর পেয়ে আমার পা পুড়িয়ে দেন, যেন আমি ঘর থেকে বের হতে না পারি,’’ বলেন তিনি৷
১৪ বছর বয়সি ম্যারি ক্যামেরুন থেকে ইউরোপ এসেছেন৷ তিনি মরক্কো ও আলজেরিয়ায় বিভিন্ন ঘরে আটক থাকার কথা জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘লোকজন আসত এবং আমাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যেত৷ আমাদের খাবার বা পানি দেয়া হতো না৷ তারা নারী ও এমনকি শিশুদের ধর্ষণ করত৷ তারা আমাকেও ধর্ষণ করতে চেয়েছিল৷ কিন্তু আমার মা আমাকে বাঁচান৷’’
সহযোগিতা ও তথ্য সরবরাহ
এ বিষয়ে সেভ দ্য চিলড্রেনের মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডিসপ্লেসমেন্ট ইনিশিয়েটিভ ডিরেক্টর টরি ক্লার্কসন বলেন, ‘‘অভিবাসনপ্রত্যাশী কিশোরীদের বিশেষ সহযোগিতা দরকার৷’’
নারী হবার কারণে তাদের যেসব ঝুঁকি বা বাধার মুখে পড়তে হয়, তিনি সেগুলোর কথা বলেন৷
ক্লাকর্কসন বলেন, তাদের নিজেদের ঘর থেকেই যেন অভিবাসনের বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য পায়, যেন তারা সেভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ তিনি আরো বলেন, ট্রানজিটের জায়গাগুলোতে তাদের জরুরি ও সামাজিক সেবা দেবার ব্যবস্থা রাখতে হবে৷