শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

অরুনিমা ইকো রিসোর্ট

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১

উইকএন্ডে কিংবা কোন সুযোগে যারা বেড়াতে ভালবাসেন, তারা টুক করে বেরিয়ে পড়তে চান। কিন্তু যাবেন কোথায়? প্রথমেই মাথায় আসে কক্সবাজার বা সুন্দরবন। কিন্তু কত আর যাওযা চলে এই দুটি স্পটে? আর ভরসা বিদেশ, মধ্যবিত্তের জন্য থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া বা সিঙ্গাপুর, কখনো বা ভুটান আর মালদ্বীপ। ঘরের কাছে একটা ধানের শীষে শিশির বিন্দুর হদিস নেই আমাদের তালিকায়। তালিকায় নেই তাই অরুনিমা রিসোর্টের নামও।

নামটা আমি অনেক শুনছিলাম পর্যটন খাতের বন্ধুদের মুখে। সবাই বলেছিল এটি এক নিভৃত নিসর্গ। নিজে যখন গেলাম, তখন মনে হয়েছে, না এরা কিছুটা কমই বলেছে। নগরের আওয়াজ নেই, কিন্তু পাখির কাকলি আছে। যারা পাখি দেখতে ভালবাসেন, তারা ডিসেম্বরে গেলে দেখবেন, পাখির কারণে গাছের কোন পাতা দৃশ্যমান নেই, অজস্র পাখি মুহুর্তে মুহুর্তে আকাশের চিত্র বদলে দিচ্ছে। প্রকৃতিকে যারা ভালবাসেন, তাদের রুটম্যাপে নড়াইলের এই অরুনিমার নাম কবে উঠবে কে জানে? তবে আমার উঠেছে।

কোলাহল, ব্যস্ততায় বিরক্ত হয়ে কিছুটা সময় দূরে, নিভৃতে প্রকৃতির কাছাকাছি কাটাতে কার না ইচ্ছে হয়! এমন জায়গায় যেতে পারলে শরীরের ক্লান্তি জুড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মনও চাঙ্গা হয়ে ওঠে। যেতে চাইলেই যাওয়া হয়না। খরচ, সময় আর বিদেশ হলে ভিসা জটিলতা, সবই মাথায় রাখতে হয়। যাদের আমার মতো পকেটের অবস্থা, তাদের জন্য পাখি আর সবুজ দেখার উপায় অরুনিমা।

এমনই একটি জায়গা নড়াইলের অরুনিমা। শান্ত প্রকৃতির মাঝে একাকিত্বের স্বাদ নিতে, বা পরিবারের সাথে কিছুটা নতুন করে সময় কাটাতে জল, প্রকৃতি, পাখি, কৃষির সাথে মাঝে দু’-এক দিন কাটিয়ে নিতে গোপালগঞ্জ থেকে সামান্য দূরে এই রিসোর্টটির জুড়ি মেলা ভার। হাতে দিন দুয়েক সময় নিয়ে এলে প্রকৃতির সান্নিধ্য নিতে চাইলে শীতে বেড়ানোর প্রস্তুতি নিতে পারেন এখনই।

অরুনিমা রিসোর্টটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৯ সালের ১৪ মে। ৫০ একর জমি নিয়ে এর অবস্থান। ছোট বড় মোট ১৯টি পুকুর আছে এখানে। একটি বড় লেক আছে। এর মাঝে একটি কৃত্তিম দ্বীপ আছে। দ্বীপের মধ্যে রয়েছে রেস্টুরেন্ট, কটেজ ও কনফারেন্স রুম। খবিরউদ্দিন আহমেদ শুধুমাত্র পর্যটনের প্রতি ভালবাসা থেকে নিজের পৈতৃক ভিটায় এই রিসোর্টটি গড়েছেন।

রাত্রিযাপনের জন্য এখানে আছে এস এম সুলতান হল, রয়েল কজেটসহ বেশ কিছু ভাসমান কটেজ। আর সময় কাটানের জন্য আছে গলফ, টেনিস, টেবিল টেনিস, দাবা, লুডু, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেট বল খেলার ব্যবস্থা। আছে কয়েক প্রকারের নৌকা, ঘোড়ার গাড়ীও।
মাছ ধরা যাদের শখ, তারা রিসোর্টের ভেতরে পুকুর ও লেকের পানিতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর মাছ পাবেন। বসে যেতে পারেন বড়শি দিয়ে।

প্রথম যখন পানিতে ভাসমান কটেজগুলো দেখলাম, মনে হচ্ছিল আমি যেন প্রাকৃতিক ভেনিস দেখছি। পুকুর, লেকের পাড়ে নানা গাছ। বাঁধা আছে ছোট্ট ডিঙি নৌকা। সকালের নাস্তা সেরে লেকে নৌকা নিয়ে বেড়িয়ে দুপুরে ফিরে আসা অব্দি কত পাখি দেখা যায়, আর জলের বিশালতা কিভাবে উপভোগ করা, তা আসলে শুধু যে গিয়েছে সে-ই ভাবতে পারে। যারা যাননি, তাদের বলছি মুগ্ধতার চূড়ান্ত অধিকারটুকু সহজেই কেড়ে নেবে অরুনিমা। আমি বেশ টের পাই – ঋণী হয়ে পড়ছি আমার ছোট্ট ছুটির সময় কাটানো অরুনিমার কাছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com