রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫১ পূর্বাহ্ন

অপরূপ রাজশাহীর টি-বাঁধ

  • আপডেট সময় রবিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৪

বিভাগীয় শহর রাজশাহী। ছোট্ট এ শহরের জনজীবন এখন অনেকাংশেই পদ্মাকে ঘিরে। বছরের প্রতিটি ঋতুতেই এ নদী ঘিরে রয়েছে মানুষের আনাগোনা। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে নদী যতটা না শুকিয়ে যায় তার চেয়ে যেন বর্ষা এলে বৃষ্টির জলে আরও বেশি পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। নদীর এই পরিপূর্ণতা ভ্রমণবিলাসী মানুষকে সব সময়ই কাছে টানে। নদীর জলধারা ও নির্মল বায়ু শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার পছন্দের জায়গা। বিভিন্ন উৎসবে সবাই এখানে প্রাণ জুড়াতে আসেন।

রাজশাহী শহরজুড়ে পদ্মা নদী ঘিরে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি বাঁধ। তেমনই একটি বাঁধ হচ্ছে টি-বাঁধ। মূলত ইংরেজি অক্ষর T-এর আকৃতি অনুসারে তৈরি হয় এটি। বিভাগীয় শহর রাজশাহীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্রের স্থান দখল করেছে জায়গাটি। সকালে সূর্যোদয়ের সময় পাখির কলকাকলি ও দখিনা হাওয়া যে কারও মনকে চাঙা করে তুলবে। গোধূলী লগ্নে রক্তিম সূর্য নদীর জলকে দেয় এক নতুন রূপ। স্থানীয় ও দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এটি বহুল পরিচিত এবং বেশ জনপ্রিয়ও বটে। বাঁধটি গড়ে ওঠার পর থেকেই এর প্রকৃতি ও সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করেছে। টি-বাঁধ সম্পর্কে  আরও কিছু খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

এখানে যা দেখতে পাবেন

পদ্মার শান্ত, স্নিগ্ধ ও শীতল হাওয়া নিমিষেই পর্যটকদের এক মনোমুগ্ধকর অনুভূতি উপহার দেয়। নদীর ওপারে রয়েছে একটি ছোট্ট গ্রাম। মাঝে কয়েকটি চর, যেখানে নৌকায় করে ঘুরতে যান অনেকেই। বাঁধের উপর দাঁড়িয়ে থাকা বটবৃক্ষ ও শিমুল গাছের ছায়ায় কার না মন জুড়ায়। গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে না করতেই মাঝিদের হাঁকডাকে পর্যটকদের নিজের নৌকায় ভেড়ানোর প্রতিযোগিতা সবাইকে এক ধরনের দ্বিধায় ফেলে দেয়।

নদীর পাড় ধরে রয়েছে সারি সারি গাছ। সেগুলোর পাতা ও ডালপালা অনবরত বিলিয়ে দিচ্ছে নির্মল ছায়া। ফলে এখানকার প্রকৃতি ও পরিবেশ পর্যটকদের মন কাড়ে। টি-বাঁধের এমন সৌন্দর্য সবারই নয়ন ও মন জুড়িয়ে দেবে। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর হয় এ বাঁধটি। কেউ পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও সঙ্গী নিয়ে ঘুরতে আসেন এখানে। আর কখনও উপভোগ করেন পদ্মার ভয়াল রূপ, আবার কখনও পদ্মার শান্ত, স্নিগ্ধ ও মমতাময়ী রূপ।

যেভাবে যাবেন

সড়ক, রেল ও আকাশপথে রাজশাহীতে পৌঁছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বা রিকশায় করে খুব কম সময়ে পদ্মা নদীর টি-বাঁধে আসা যায়। ঢাকা থেকে প্রতি আধা ঘণ্টা পর পর রাজশাহীর উদ্দেশে বাস ছেড়ে আসে। দেশ, গ্রামীণ, হানিফ ট্রাভেলস ও শ্যামলী করে আসতে পারেন। নন-এসি বাস  আসতে পারেন। বাসভেদে এসি বাসের ভাড়া  ভিন্ন হতে পারে।

এ ছাড়া রেলপথে আসতে চাইলে ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সিল্কসিটি, পদ্মা, ধুমকেতু ও বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে আসে। বনলতায় শোভন চেয়ারে  করে  আসতে পারেন।এ ছাড়া কেউ চাইলে বিমানযোগে রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে এসে নামতে পারেন। সেখান থেকে অটোতে করে রাজশাহী শহরে আসা যাবে।

রাজশাহীর টি-বাঁধ। ছবি : রেফায়েত এশা

থাকবেন যেখানে

রাজশাহীতে রাত্রিযাপন করতে হোটেলভেদে ২০০ থেকে চার হাজার টাকায় বিভিন্ন মানের রুম পাওয়া যাবে। রাজশাহীর বিভিন্ন হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজশাহী পর্যটন মোটেল, সাহেব বাজারে হোটেল মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল, বিন্দুরমোড় রেল গেইটে হোটেল ডালাস ইন্টারন্যাশনাল, গণকপাড়ায় হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল, মালোপাড়ায় হোটেল সুকর্ণা ইন্টারন্যাশনাল, সাহেব বাজারে হামিদিয়া গ্রান্ড হোটেল, শিরোইলে হকস্ ইন, লক্ষ্মীপুর মোড়ে হোটেল গ্যালাক্সি ও সাহেব বাজারে হোটেল নিউ টাউন ইন্টারন্যাশনাল।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com