শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৪ অপরাহ্ন
Uncategorized

অনলাইন কোর্স

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১

ঘরে বসে থাকা দিনগুলোতে তরুণদের সময় কাটানোর অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে অনলাইন কোর্স বা প্রশিক্ষণ। এসব কোর্স অফার করছে বিশ্বের নামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রযুক্তির শীর্ষে থাকা প্রতিষ্ঠান। এসব কোর্সে পড়াশোনার জন্য যেমন খরচ লাগে না, তেমনি লাগে না তেমন একাডেমিক যোগ্যতাও! বলা যায় একেবারে বিনামূল্যে ঘরে বসে যে কেউ পেতে পারেন এসব পাঠক্রম। তবে এই সংক্রান্ত সার্টিফিকেট পেতে খরচ করতে হয় সামান্য অর্থ। আসুন জেনে নেই কোথায়, কিভাবে এবং কেন করবেন এসব কোর্স।

স্বাভাবিক কার্যক্রম বদলে দিয়েছে করোনা। তবে মানবসভ্যতার ইতিহাস বলে, এমন বিপর্যয় একসঙ্গে কাটিয়ে ওঠার সক্ষমতা আছে পৃথিবীর মানুষের। সামাজিক দূরত্ব, সহমর্মিতা আর স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ প্রয়োগ আমাদের নিরাপদ রাখতেই পারে। বাংলাদেশে টানা ৬৬ দিনের লকডাউনের পর সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু করলেও করোনার বিস্তার বেড়েই চলেছে।

তাই একেবারে গুরুত্বপূর্ণ কাজের বাইরের সময়টা বাসাতেই কাটানো অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। লকডাউন কিংবা বাড়িতে থাকা সময়টাকে নতুন কিছু শেখার কাজে লাগানোর মধ্য দিয়ে যেমন আমাদের আত্মবিকাশ এবং আত্মোন্নয়ন সম্ভব তেমনি মানসিক অস্থিরতা আর আতঙ্ক থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কী শিখবেন? কেন শিখবেন?

করোনা-পরবর্তী সময়ে কেমন হবে অর্থনীতি তথা চাকরির বাজার, কী ধরনের নতুন স্কিল, দক্ষতার গুরুত্ব বাড়বে তা এখনই বলা কঠিন। তবে এ কথা নিশ্চিত যে, অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বিশ্ব। এর ফলে চাকরি বাজারে ভিন্ন পরিবেশ, একসঙ্গে অনেক দায়িত্ব সামলাতে অভ্যস্ত, ইতিবাচক ভাবনার কর্মীদেরই টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশি।

বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যয় সংকুলানের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যয় সংকুলান করার পাশাপাশি পুরোনো কর্মীদেরই দক্ষতা আর বেতন যাচাই করে দেখবে। তাই, পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন বিলাসিতা বা সময়ের অপচয় নয় বরং বুদ্ধিমানের কাজ।

অনলাইন কোর্সে পড়াশোনার জন্য যেমন খরচ লাগে না, তেমনি লাগে না তেমন একাডেমিক যোগ্যতাও। বলা যায়, একেবারে বিনামূল্যে বাড়িতে বসে যে কেউ পেতে পারেন এসব পাঠক্রম। এর মাঝে থাকে লেকচার, বিভিন্ন রিডিং ম্যাটেরিয়াল, অ্যাসাইনমেন্ট। তবে এ-সংক্রান্ত সার্টিফিকেট পেতে খরচ করতে হয় সামান্য অর্থ।

কোথায় শিখবেন?

কোর্সেরা

২০১২ সালে স্থাপিত অনলাইন লার্নিংয়ের জন্য শীর্ষস্থানীয় প্ল্যাটফর্ম এটি। যেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং, হিউম্যানিটিজ, মেডিসিন, বায়োলজি, সোশ্যাল সায়েন্স, ম্যাথমেটিক্স, বিজনেস, কম্প্পিউটার সায়েন্স, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডেটা সায়েন্সসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে কোর্স করার সুযোগ রয়েছে। অনলাইন কোর্সের বিশেষায়িত এই ওয়েবসাইটটিতে বর্তমানে প্রায় চার হাজারের বেশি কোর্স করানো হচ্ছে।

করোনাকালীন এই সময়ে ১১৫টিরও বেশি ফ্রি কোর্স অফার করছে কোর্সেরা। এর মধ্যে ব্যবসা, প্রযুক্তি, কলা, ভাষাশিক্ষা, প্রোগ্রামিং থেকে শুরুর করে বিজ্ঞান আর তথ্যপ্রযুক্তির নবতম সব শাখাতে বিভিন্ন বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় যেমন- ইয়েল, ডিউক, স্টানফোর্ড, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অনলাইন সার্টিফিকেট কোর্সের মাধ্যমে নতুন কিছু শেখা বা পুরোনো জ্ঞানকে ঝালাই করার সুযোগ থাকছে।

কোর্সেরায় ঢুঁ মারতে চাইলে www.coursera.org -এই লিংকে চোখ বুলাতে পারেন।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়

বিভিন্ন বিষয়ের ৬৪টি পাঠক্রম অনলাইনে পড়ার সুযোগ দিচ্ছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে রয়েছে আইটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, বিজনেস, ডেটা সায়েন্স, হেলথ অ্যান্ড মেডিসিন এবং হিউম্যানিটিজ, কম্পিউটার সায়েন্স, সোশ্যাল সায়েন্স সংক্রান্ত বিবিধ বিষয়। পাঠক্রমগুলোর দৈর্ঘ্য ৪ থেকে ১৫ সপ্তাহের।

এসব কোর্সের রূপরেখা নির্ণয় করেছেন হার্ভার্ডের সেরা শিক্ষকরাই। তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক পাঠক্রমগুলোতে টুডি এবং থ্রিডি গেম ডেভেলপমেন্ট থেকে বিভিন্ন ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপের প্রযুক্তি শেখার বন্দোবস্ত রয়েছে। রয়েছে সিএস৫০ বিষয়ে বিবিধ পাঠক্রম। বিজনেস বিভাগে ইমার্জিং ইকনমিকস, কন্ট্র্যাক্ট ল এবং অ্যাকাউন্টিং ও ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট বিষয়ে তিনটি প্রাথমিক কোর্সও রয়েছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এবং মেশিন লার্নিংয়ের এই যুগে ১৪টি অনলাইন পাঠক্রম হাজির করেছে হার্ভার্ড ডেটা সায়েন্স বিভাগে।

পৃথিবীর বিভিন্ন সভ্যতা ও ধর্মের ওপরে রয়েছে অসংখ্য কোর্স। শাস্ত্র-ভিত্তিক হিন্দু ধর্ম, খ্রিষ্টধর্মের রূপরেখা, এমনকি শিখ ধর্মের ওপর রয়েছে পাঠক্রম। এতেই শেষ নয়, বিজ্ঞান ও যুক্তির চেনা জগৎ পেরিয়ে কেউ যদি হাঁটতে চান গুপ্তবিদ্যার জগতে, তার জন্য রয়েছে দৈববাণী, ভবিষ্যদ্বৈচন ও গূঢ় সংকেতের ইতিবৃত্ত সংক্রান্ত পাঠক্রমও। এমনকি প্রাচীন মিসর, পিরামিড ও হায়ারোগ্লিফিক লিপি সংক্রান্ত পাঠক্রমও মিলছে বিনা পয়সায়।

কোর্স করতে পারেন https://online-learning.harvard.edu/catalog/free -এই লিংক ধরে।

স্কিলশেয়ার

গ্রাফিক্স ডিজাইন, ক্রিয়েটিভ রাইটিং, ফটোগ্রাফি ও ইলাস্টেটরসহ বেশকিছু বিষয়ে জানতে ওয়েবসাইটটিতে কোর্স করা যায়। এখানকার লেকচারগুলো বেশ ইন্টারঅ্যাক্টিভ। অর্থাৎ, সবই এখানে শেখা যায় হাতে কলমে। বিশেষজ্ঞরা নির্দিষ্ট একটি বিষয়ের আদ্যোপান্ত নিয়ে কথা বলেন। নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত একটি প্রজেক্ট নিজে করে দেখাতে পারলেই শেষ হয় কোর্স।

স্কিলশেয়ার প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১০ সালে। বর্তমানে এতে ২৭ হাজার প্রিমিয়াম ক্লাস ও ২ হাজার ফ্রি ক্লাস অফার করছে তারা। প্রিমিয়াম ক্লাস করতে চাইলে প্রতি মাসে সাবস্ট্ক্রিপশন ফি হিসেবে দিতে হবে প্রায় ১০ ডলার।

www.skillshare.com-এই লিংক ধরে ঘুরে আসতে পারেন সাইটিতে। চাইলে ফ্রি কোর্সও করতে পারেন।

ইউএন সিসি-লার্ন

জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায় ইউএন ক্লাইমেট চেঞ্জ-ইলার্ন নামে জাতিসংঘের এই ওয়েবসাইটে। সাইটির প্রতিটি কোর্সই ফ্রিতে করতে পারবেন।

সাইটটির ঠিকানা- unccelearn.org/course।

খান একাডেমি

২০০৬ সালে এই অনলাইন লার্নিং অ্যাপটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটি সম্পূর্ণ নন-প্রফিট এডুকেশনাল অর্গানাইজেশন। আপনি খুব সহজে বিভিন্ন বিষয়ে কোর্স করতে পারবেন এখানে। সহজবোধ্য ছোট ছোট ভিডিও আপনাকে অনেক কঠিন জিনিসকেও সহজে আয়ত্তে আনতে সাহায্য করবে।

খান একাডেমি ওয়েব লিংক- www.khanacademy.org।

১০ মিনিট স্কুল

গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ইংরেজি এবং সাহিত্যের ওপর একাডেমিক ক্লাস নেওয়া, পাশাপাশি সরাসরি সম্প্রচারমূলক লাইভ ক্লাস, বিভিন্ন অনুশীলনমূলক কুইজ, মডেল টেস্ট ও শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম এটি। ফেসবুকের লাইভ ফিচার ব্যবহার করে ২০১৬ সালের জুন থেকে প্ল্যাটফর্মটি লাইভ ক্লাসের আয়োজন করে আসছে।

পেজটিতে লাইক করে এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী লাইভ ক্লাসগুলো থেকে শিক্ষাগ্রহণ করছেন। সোম ও বুধবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৮টায় লাইভ ক্লাসগুলো পরিচালিত হচ্ছে। ফেসবুক লাইভ ক্লাসের ফলোয়ার ছাড়াও ইউটিউবে ৪০ হাজার সাবস্ট্ক্রাইবার রয়েছেন, যারা তাদের নিজেদের সুবিধামতো শিক্ষাগ্রহণ করছেন। ফেসবুকভিত্তিক লাইভ ক্লাসের প্রতিটিতে গড়ে ৫ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

ওয়েব ঠিকানা- 10minuteschool.com।

মুক্তপাঠ

অনলাইনে বিনামূল্যে এই ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন যে কেউ। আর সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষে পাওয়া যায় সনদও। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন বা এটুআই প্রোগ্রামে এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হচ্ছে।

মুক্তপাঠের ঠিকানা-  muktopaath.gov.bd/course-details/243|

এ ছাড়া বিভিন্ন দূতাবাস এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান অফার করছে রাজ্যের কোর্স। আপনি প্রয়োজনীয় কোর্সটি করে নিতে পারেন ঘরে বসেই। এসব কোর্স আপনাকে আত্মবিশ্বাসী এবং নতুন করে পথ চলতে সাহস জোগাবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

Like Us On Facebook

Facebook Pagelike Widget
© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com