৫১০০ ফুট উপরে পাহাড় আর সবুজের সাম্রাজ্য

চারদিক একেবারে শান্ত। যেদিকে চোখ যায়, কুয়াশা ঘেরা সবুজের রাজ্য। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫১০০ ফুট উপরে ভারতের উত্তরের পেদংয়ের এই নির্জনতা উপভোগ করতেই ভিড় জমান পর্যটকরা। পর্যটন মানচিত্রে নবাগত পেদংয়ের আছে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। এখান থেকেই রেনক, কুপুপ, জেলেপ লা ও নাথু লা গিরিপথ হয়ে পৌঁছানো যায় তিব্বতে। যা ইতিহাসে প্রসিদ্ধ ‘সিল্ক রুট’ নামে। এই পথ বেয়ে যুগে যুগে পণ্য নিয়ে প্রাচীন ভারতের বাণিজ্যকেন্দ্রে পৌঁছাত ভিনদেশি বণিকের দল।

যেভাবে যাবেন:

দার্জিলিং থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে পেদং। শিলিগুড়ি থেকে এই পাহাড়ি গ্রামের দূরত্ব ৮৫ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি বা দার্জিলিং থেকে গাড়ি ভাড়া করে যাওয়া যায়। যাওয়ার সেরা সময় অক্টোবর থেকে মার্চ।

যা দেখবেন:

সবুজের এই শান্ত সাম্রাজ্যে ঘুম ভাঙবে পাহাড়ি পাখিদের সুরে।
কাঞ্চনজঙ্ঘার পাশ থেকে মন ভোলানো রূপে প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলবে সূর্য্যিমামা।
পেডংয়ের অন্যতম আকর্ষণ ডামসাংডুগি দূর্গ। ভুটিয়া ও লেপচা সংঘর্ষের জীবন্ত দলিল।
পাশেই রয়েছে তিনচুলের অপার সৌন্দর্য। সুগভীর গিরিখাত, সুবিশাল সুবজ উপত্যকা।

কোথায় থাকবেন:

প্রকৃতির মাঝে থাকতে গেলে বিলাসের আশা একটু ছাড়তে হবে। পেডংয়ের হোটেলগুলো মাঝারি মানের। তবে ন্যূনতম সেবা সবার কাছে থেকেই পাবেন।

মেলা-পার্বণ:

সিকিম ও দার্জিলিং পাহাড়ে বৌদ্ধ গোম্ফায় বছরে প্রধানত দুটি নৃত্যোৎসব হয়। তিব্বতি দিনপিঞ্জকার দ্বাদশ মাসে, অর্থাৎ ইংরেজি ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ অনুষ্ঠিত হয় মহাকালের উদ্দেশ্যে লামা নৃত্য। আর এই পঞ্জিকার দ্বিতীয় মাসে দেখা যায় বিখ্যাত ছাম নাচ যা মহাগুরু পদ্মসম্ভবের প্রতি শ্রদ্ধাবশত অনুষ্ঠিত হয়।

পেদংয়ে প্রতি বছর বসে ড্যামস্যাং মেলা। রাজা গেবো আচিয়কের জন্মতিথি পালন করতে এই মেলা শুরু হয়।

দীপাবলিতে এই অঞ্চলে পালিত হয় দেউসি-ভাইলো উৎসব। প্রথম দুই দিন মেয়েরা ও পরের দুই দিন ছেলের দল সুর করে পাচালি রীতির আলেখ্যে রামায়ণের গান শোনায় বাড়ি বাড়ি। বদলে তারা পায় গৃহেস্থর দানসামগ্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: