শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২২ অপরাহ্ন
Uncategorized

৪০ মিনিটেই ঢাকা-গাজীপুর, বাস মিলবে দেড় মিনিট পরপর

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২২ অক্টোবর, ২০২১

আরামদায়ক, ব্যয় সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব, আধুনিক, টেকসই এবং নিরাপদ নগর পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে গাজীপুর-টঙ্গী-উত্তরা-বিমানবন্দর করিডোরে ২০ কিলোমিটার বিআরটি (বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট) লাইন নির্মাণের কাজ। এই রুটে চলাচলের জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে কেনা হবে ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাস। এসব গাড়ি কখনো মাটি ঘেঁষে আবারও কখনো এলিভেটেড সড়কে চলাচল করবে। এ র‌্যাপিড ট্রানজিট চালু হলে দুর্ভোগের ঢাকা-গাজীপুর সড়ক মাত্র ৪০ মিনিটেই পাড়ি দেওয়া যাবে। আর এ রুটে বাস মিলবে দেড় থেকে তিন মিনিট পরপর।

২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালের জুন মাসে শেষ হবে হবে। চার হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা (এএফডি) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) অর্থায়ন করছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) কাজ
এ প্রকল্পের আওতায় তুরাগ নদীর ওপর ১০ লেনবিশিষ্ট টঙ্গী ব্রিজ এবং ছয়টি এলিভেটেড স্টেশনসহ সাড়ে ৪.৫ কিলোমিটার এলিভেটেড সেকশন নির্মাণ করছে বিবিএ। এছাড়া বিআরটি লেন, মিক্সড ট্রাফিক লেন, এনএমটি লেন, ফুটপাত এবং ড্রেনেজসহ সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ করিডোরের পেভমেন্ট উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ কাজও চালাচ্ছে তারা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে দাবি বিবিএর।

এলজিইডির কাজসমূহ
প্রকল্পে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে গাজীপুরে বিটিসিএল-এর জমিতে বিআরটি ডিপো, ১০টি কিচেন মার্কেট ও বিআরটি করিডোরের উভয়পাশে ১৪১টি অ্যাকসেস রোডের উন্নয়নকাজ চলছে। কাজগুলো প্রায় শতভাগ সম্পন্ন। এছাড়া উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত প্রস্তাবিত করিডোর বরাবর এক হাজার জ্বালানি সাশ্রয়ী সড়ক বাতি স্থাপন কাজে।

বিআরটির কোম্পানি কম্পোনেন্টসমূহ
প্রকল্পের আওতায় ৫০টি আধুনিক আর্টিকুলেটেড বাস কেনা হবে। বিআরটি পরিচালনার জন্য আইটিএস সরঞ্জামাদি ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের ট্রাফিক সিগনাল সিস্টেম এবং সরঞ্জামাদিও কিনবে বিআরটি। এছাড়া রুটে বাস অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনা এবং বাস অপারেটর নির্বাচনের দায়িত্বও থাকবে বিআরটিএর ওপর।

সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে যে, টঙ্গী-গাজীপুর সড়কে যে দুর্ঘটনা ঘটে, তার শিকার ৫০ শতাংশই পথচারী। এই রুটে বেসরকারি অপারেটরদের আড়াই হাজারের বেশি বাস ও মিনিবাস চলাচল করে। তবে অধিকাংশ বাসই ব্যবহার অনুপযোগী ও ভগ্নদশাগ্রস্থ।

বাংলাদেশে এখনো কোনো আধুনিক ও দ্রুতগামী গণ পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি, তাই এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সমন্বিত চলাচল ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এটি সার্বিক সমাধান ও দিক-নির্দেশনা দিতে সক্ষম হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এয়ারপোর্ট এলাকায় সড়কের মাঝখানে পড়ে আছে বক্স স্প্যান। এছাড়া টঙ্গী এলাকায় ১০ লেন সেতু নির্মাণ হচ্ছে। সেতুর পিলার নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি ওপরে বসছে আই গার্ডার। ঢাকা-গাজীপুর রুটে চলাচলের জন্য সেতু এলাকায় দুটি সার্ভিস লেন করে দেওয়া হয়েছে। টঙ্গী সেতুসহ চেরাগ আলী পর্যন্ত ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার এলিভেটেড সড়কের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সেখানে ১০ লেন আধুনিক ব্রিজ হচ্ছে। ব্রিজে ওঠার জন্য চলন্ত সিঁড়ি নির্মাণের অবকাঠামো কাজও চলমান। এলিভেটেড অংশে পিলার নির্মাণকাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এর পাশাপাশি বসেছে আই গার্ডার। যেখানে এলিভেটেড নেই সেখানে পৃথকভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে উন্নত মানের সড়ক। ডেডিকেটেড বাস লেনের পাশাপাশি রাস্তার মাঝখানের দুটি লেনও ব্যবহৃত হবে। সেই কাজও চলমান। এছাড়া পথচারীদের সহজে চলাচলের জন্য রাস্তার দুপাশে ফুটপাত তৈরির কাজও চলছে দ্রুতগতিতে।

এ মেগা প্রকল্পের পরিচালক এ এস এম ইলিয়াস শাহ জাগো নিউজকে বলেন, দ্রুতগতিতে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। প্রকল্প শেষ করার জন্য যে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে সেই সময়েই তা সমাপ্ত হবে। রুট নির্মাণের পাশাপাশি আমরা আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে ৫০টি আধুনিক বাস কিনবো। প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হওয়ার পরে বাসগুলো সড়কে উঠবে বলে আশা করছি।

প্রকল্প প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) মো. জাকির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেন নগরবাসী প্রকল্পের সুবিধা দ্রুত সময়ে ভোগ করতে পারেন। প্রকল্পের কাজ বিশেষভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। এই বিষয়ে একজন অতিরিক্ত সচিবকে বিশেষ দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকায় জনদুর্ভোগ প্রসঙ্গে মো. জাকির হোসেন বলেন, আগের থেকে দুর্ভোগ অনেক কমে গেছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com