তাসনিমুল হাসান প্রান্ত। ২৬ বছর বয়সের এ তরুণ ২০১৯ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন যশোরের মনিরামপুরে। ছয় বছর আগে অনলাইনে মাত্র ১৭ ডলার আয় দিয়ে শুরু করেন ক্যারিয়ার। এখন তিনি মাসে আয় করেন ৩ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ লাখ টাকার বেশি।
কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বিশ্বের অন্যতম প্রিমিয়ার কোম্পানি উইনিং মুভ ইভেন্টস এবং ইনটুফিউচারের ইন্টারন্যাশনাল লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ পেয়েছেন তিনি। মনিরামপুর পৌরসভার মোহনপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ ও আফরোজা খাতুন দম্পতির ছেলে তাসনিমুল হাসান প্রান্ত। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী।
প্রান্ত পড়াশোনার পাশাপাশি শুরু করেছিলেন ফ্রিলান্সিং। বর্তমানে নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন ‘প্রান্ত আইটি ইনিষ্টিটিউট’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন ১৫ জন তরুণ-তরুণীর। এছাড়া সেখানে দেওয়া হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর আন্তর্জাতিক মানের ফ্রিলান্সিং প্রশিক্ষণ।
প্রান্ত জানান, ২০১৮ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। ২০১৯ সালে কৌতুহলবসত অনলাইনে টাকা উপার্জনের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে শুরু করেন। বন্ধু শামিম রেজার হাত ধরেই ফ্রিল্যাসিং পেশায় পদচারণা। জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নেন, তথ্যপ্রযুক্তির কোনও একটি বিষয়ে কাজ শিখে দক্ষ হবেন। এরপর ফ্রিল্যান্সিং করবেন। ধীরে ধীরে কাজ শুরু করেন।
অবশ্য শুরুতে অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না। অনেক বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর কঠোর পরিশ্রম করে এখন বেশ সফলতা এসেছে। এ পর্যন্ত ৮০টি দেশের দেড় হাজারের অধিক বায়ারের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। সর্বোচ্চ উপার্জন ছিল ১৪ লাখ টাকা।
ফ্রিল্যান্সার প্রান্ত বলেন, ২০১৯ সালে অনলাইনে কাজ করে প্রথমে ১৭ ডলার উপার্জর করি। বর্তমানে প্রতিমাসে ৩ হাজারের বেশি ডলার উপার্জন করছি। পড়াশোনা শেষে অন্যদের মতো চাকরির পেছনে না ছুটে নিজের নামে একটি আইটি ইনিষ্টিটিউট গড়ে তুলেছি। সেখানে তরুণ-তরুণীদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানে ১৫ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।
কর্মহীন বেকার তরুণদের উদ্দেশ্যে প্রান্ত বলেন, চাকরি পাওয়া যতটা কঠিন, তার থেকে অনলাইনে উপার্জন করা সহজ। হাজার হাজার কাজ পাওয়া যায় অনলাইনে। প্রয়োজন শুধুমাত্র সঠিক গাইডলাইন। ইংরেজীতে পারদর্শী হতে পারলে বাইরের দেশের বায়ারদের সঙ্গে কথা বলে সহজেই কাজ বাগিয়ে নেওয়া সম্ভব। কাজ করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয়ের সুযোগ রয়েছে। ধৈর্য সহকারে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব।