হুমায়ূন আহমেদের পাঠকমাত্রই জানেন, তিনি কতটা রসিক ছিলেন। আজ তাঁর মৃত্যুদিবস। আজ তাঁকে আমরা স্মরণ করছি তাঁরই কিছু রস-রসিকতার মাধ্যমে…
এক মা ছেলের নামের জন্য হুমায়ূন আহমেদের কাছে এসেছেন।
: স্যার, আমার ছেলের একটা নাম রেখে দিন। নামের প্রথম অক্ষর হবে ‘আ’। কারণ, আমার নামের প্রথম অক্ষর ‘আ’। শেষ অক্ষর হবে ‘ল’। কারণ, ছেলের বাবার নামের প্রথম অক্ষর ‘ল’। নামের অর্থ যদি নদী, আকাশ বা মেঘ হয়, তাহলে খুব ভালো হয়। তারচেয়েও বড় কথা, নামটা হতে হবে আনকমন।
হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘ছেলের নাম রাখো আড়িয়াল খাঁ।’
: আড়িয়াল খাঁ!
: হ্যাঁ, তোমার সব দাবি এই নামে পূরণ হয়েছে। এই নাম শুরু হয়েছে ‘আ’ দিয়ে। শেষ হয়েছে ‘ল’ দিয়ে। নদীর নামে নাম। তা ছাড়া আনকমন তো বটেই।
তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা
হুমায়ূন আহমেদ জগতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা বাল্যবন্ধু উনুর কাছ থেকে পেয়েছেন। উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। যেমন: আকাশে উড়োজাহাজ দেখলেই দৌড়ে গাছের নিচে বা ঘরের ভেতর ঢুকে পড়া উচিত। নইলে উড়োজাহাজের যাত্রীদের প্রস্রাব-পায়খানা মাথার ওপর এসে পড়ার যথেষ্ট আশঙ্কা থাকে। কারণ, ট্রেনের বাথরুমের মতো প্লেনের বাথরুমেরও নিচে ফুটো।
এরপর থেকেই উড়োজাহাজের শব্দ পেলেই হুমায়ূন আহমেদ বন্ধুদের নিয়ে দৌড়ে গাছের নিচে আশ্রয় নিতেন। একদিন তাদের ওভাবে দৌড়াতে দেখে এক পথচারী জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হয়েছে?’
: আকাশ থেকে গু পড়ছে।
কী সর্বনাশ! আসমানের গু! শুনে পথচারী নিজেও দৌড়াতে শুরু করলেন।
সার্টিফিকেট
একদিন এক যুবক হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে এল। যুবকের হাতের লেখা অবিকল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো। হুমায়ূন আহমেদ যুবককে দিয়ে নিজের জন্য রবীন্দ্রনাথের একটা সার্টিফিকেট লিখিয়ে নিলেন। সেখানে লেখা—
শ্রীমান হুমায়ূন আহমেদ,
তোমার কিছু রচনা পাঠ করিয়া বিমলানন্দ পাইয়াছি।
তোমার কিছু শব্দের বানান বিষয়ে আমার কথা আছে।
সাক্ষাতে বলিব।
ইতি
শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সূত্র: হুমায়ূন আহমেদের লেখা আমার ছেলেবেলা, বসন্ত বিলাপ, কিছু শৈশব, রঙ পেন্সিল, বলপয়েন্ট, ফাউনটেনপেন, কাঠপেন্সিল বই এবং ‘অন্যদিন: হুমায়ূন আহমেদ স্মরণ সংখ্যা’