হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান

কক্সবাজার জেলা পাহাড়, সমুদ্র, বন, উপত্যকা ইত্যাদি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের জন্য অন্যান্য জেলা থেকে ভিন্ন। কক্সবাজারের অন্যতম আকর্ষণ হিমছড়ি। এখানেই অবস্থিত হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান। এটি বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যানগুলোর অন্যতম। পর্যটন শহর কক্সবাজার থেকে এর দূরত্ব মাত্র ১২ কিলোমিটার।

১৯৮০ সালে ১৭২৯ হেক্টর (১৭.২৯ বর্গ কিলোমিটার) জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয় উদ্যানটি। হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গবেষণা ও শিক্ষণ, পর্যটন ও বিনোদন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ। বর্তমানে হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।

হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের অন্যতম আকর্ষণ প্রবাহমান জলপ্রপাত। এই উদ্যানে অনেকগুলো জলপ্রপাত রয়েছে। তার মধ্যে হিমছড়ি জলপ্রপাতটি সবচেয়ে বিখ্যাত।

বহু আগে প্রাণীবৈচিত্র্যে ভরপুর এ বনাঞ্চলে এশিয়ান হাতির অবাধ বিচরণ থাকলেও এখন সে সংখ্যা কমে এসেছে। এখনো এশিয়ান হাতির যে কয়েকটি আবাসস্থল রয়েছে তার মধ্যে হিমছড়ি একটি। এ বনে ৫৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ২৮৬ প্রজাতির পাখি, ৫৬ প্রজাতির সরীসৃপ ও ১৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী পাওয়া যায়। এশিয়ান হাতি ছাড়াও এ বনে লালমুখ বানর, মায়া হরিণ, বন্যশুকর, উল্লুকও দেখতে পাওয়া যায়।

পাখিপ্রেমীদের জন্য হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান একটি আদর্শ স্থান। এখানে ২৮৬ প্রজাতির পাখির মধ্যে ময়না, ফিঙ্গে ও তাল বাতাসি উল্লেখযোগ্য।

এই জাতীয় উদ্যানটি চিরসবুজ ও প্রায়-চিরসবুজ ক্রান্তীয় বৃক্ষের বনাঞ্চল। বনের ১১৭ প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে ৫৮ প্রজাতির বৃক্ষ, ১৫ প্রজাতির গুল্ম, ৪ প্রজাতির তৃণ, ১৯ প্রজাতির লতা এবং ২১ প্রজাতির ভেষজ।

যেভাবে যাবেন:

কক্সবাজার শহর থেকে যেকোনো যানবাহনযোগে সড়ক পথে হিমছড়ি যাওয়া যায়। কক্সবাজারের কলাতলী স্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশা অথবা চান্দেরগাড়িতে করে ১৫ মিনিটে হিমছড়ি পৌঁছানো সম্ভব।

ইনানী এবং হিমছড়ি এক ভ্রমণেই ঘুরে আসা সম্ভব। এতে সময় আর খরচ উভয়ই বেঁচে যাবে। সকালে গিয়ে বিকেলের মধ্যে ঘুরে আসা যাবে দুই জায়গা থেকেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: