বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন

হাজার বছরের পুরনো শহর ইস্তানবুল

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩

তুর্কির হাজার বছরের পুরনো একটি শহর ইস্তানবুল। শহরটি আগে কন্সটান্টিনোপল নামে পরিচিত ছিল। এছাড়া বাইজান্টিয়াম নামেও ডাকতো অনেকে। এই শহরটির ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে এক অন্যরকম স্নিগ্ধতা। এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও বেশ পরিচিত। প্রতি বছর হাজার হাজার ভ্রমণবিলাসী মানুষ ভিড় জমায় এই শহরটিতে। অন্যান্য শহরের তুলনায় এটি নিজেকে সাজিয়েছে কিছুটা অন্যভাবে। যার কারণে তুর্কির অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে শহরটি।

এটি তুরস্কের বৃহত্তম শহর। ইস্তানবুলের আয়তন প্রায় ৫ দশমিক ৩৪৩ বর্গ কিলোমিটার (২,০৬৩বর্গ মাইল)। এই শহরটির জনসংখ্যা  প্রায় ১২ দশমিক ৮ মিলিয়ন। ১৪৫৩ সালের দিকে শহরটিকে  তৎকালীন উস্‌মানীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শহরটির জেলা ২৭টি। ইস্তানবুল একটি আন্তর্মহাদেশীয় শহর। এর এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা এশিয়ায় বসবাস করে এবং একই সাথে এটা ইউরোপের বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

আনুমানিক ৭ম শতাব্দীতে এক রাজার নেতৃত্বে  শহরের জন্য গ্রিক নাম ঠিক করে। খ্রিস্টপূর্ব ১০০ এর শুরুর দিকে এটি রোমান সাম্রাজ্যের অংশে পরিণত হয় এবং ৩০৬ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী ঘোষনা করে। পরে সেই থেকে শহরটি কনস্ট্যান্টিনোপল হিসাবে পরিচিত ছিল। পরবর্তী সময়ে শহরটি সরকার বিরোধী দাঙ্গায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় এবং আবার পুনর্নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ক্ষমতার রদবদল হয়। কালক্রমে সেই শহর আজকের এই ইস্তানবুল শহরে পরিণত হয়েছে।

শহরটিতে রয়েছে হাজার বছর পুরনো সভ্যতা, সংস্কৃতি, বিশাল স্থাপনা, রাস্তা চারপাশ যেন এক অন্যরকম পরিবেশ তৈরি করে। কেনাকাটার জন্যেও শহরটি বেশ উপযোগী। ব্যক্তি বা পরিবার নিয়ে বসতি স্থাপনের জন্য এই শহর বিশ্বের সবথেকে কম ব্যায়বহুল শহরের একটি।

এবার ইস্তাম্বুল শহরের ভ্রমণ স্থানগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক :

আয়া সোফিয়া :

এই ক্যাথিড্রালটি নির্মিত হয়েছিলো ৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দে। আয়া সোফিয়া বিশ্বে অন্যতম বৃহত্তম স্থাপত্য হিসেবে পরিচিত। একসময় এটি মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হত যা পরে যাদুঘর হিসেবে স্থানান্তর করা হয়েছিল, এরদোয়ান সরকার সম্প্রতি সেটাকে ফের মসজিদে রূপান্তরিত করে।

নীল মসজিদ 

১৬১৬ সালে নীল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। মসজিদটি পাশ্চাত্য ধাঁচে তৈরি করা। এই মসজিদটিতে প্রতি বছর অনেক পর্যটক বেড়াতে আসেন।

গ্রান্ড বাজার :

এটা ইস্তানবুল শহরের একটি বাজার। এখানে স্থানীয়দের তৈরি করা পন্য পাওয়া যায়। স্থানীদের জীবনধারা জানতে অনেকেই ভিড় জমায় এই বাজারে।

বেসিলিকা সিস্টারন :

এই শহরের অন্যতম প্রাচীন জলাশয়। অন্ধকার রোমাঞ্চকর এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে এই স্থানটি পর্যটকদের আকর্ষনের শীর্ষে রয়েছে।

ছোড়া চার্চ :

এটি স্থানীয়  একটি চার্চ। যীশু খ্রীষ্টের জীবনধারা সম্পর্কে জানা যায় এই চার্চ থেকে।

গালাতা টাওয়ার :

১৪ শতকের দিকে নির্মিত হয় এই টাওয়ার। এটি অন্ধকার কুপ হিসেবে পরিচিত। টাওয়ারের ওপর থেকে এক অন্যরকম ইস্তানবুল শহরকে উপলব্ধি  করা যায়।

এছাড়া তোপকপি প্রাসাদ, সুলায়মান মসজিদ, এমিনোনু স্কয়ার, গালতা ব্রিজ, রুস্তম পাশা মসজিদসহ রয়েছে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান।

থাকা এবং খাওয়া :

ইস্তানবুলের যেকোনও জেলায় আবাসন সুবিধা পাওয়া সম্ভব। ইউরোপীয় দিকে থাকার জন্য জনপ্রিয় স্থান হিসেবে পরিচিত  এবং এতে  ভ্রমণকারীদের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের অ্যাপার্টমেন্ট, হোটেল রয়েছে। বেশিরভাগ দামি হোটেলগুলো পশ্চিম শহরতলিতে, বিমানবন্দরের আশেপাশে রয়েছে। চাইলেই খুব সহজে সেখান থেকে সেবা গ্রহণ করা যায়।

ইস্তানবুল শহরটিতে প্রচুর রেস্তোরাঁ  রয়েছে। হামসি, পাতসো, কুমপিরসহ আরও অনেক রেস্তোরাঁ আছে আশেপাশে। এছাড়া  বারেরও দেখা মেলে। রন্ধনশিল্পে শহরটি বরাবরই জনপ্রিয় সকলের কাছে।

যেভাবে যাবেন :

তুরস্ক থেকে বিমানে, ট্রেনে,বাস-মাইক্রোসহ নদীপথেও ইস্তানবুল পৌঁছনো সম্ভব। সাবিহা গোকেন বিমানবন্দর, তুরস্ক নিউ বিমানবন্দর থেকে শহরটির উদ্দেশ্যে বিমান রয়েছে। তুরস্কের সব জায়গা থেকেই বাস সুবিধা  রয়েছে। এছাড়া কারায়ক নদীবন্দর  থেকে নৌকায়ও যাওয়া সম্ভব।

ভ্রমণ টিপস :

১) নিজের ভদ্রতা বজায় রাখুন।

২) পরিবেশ  দূষণ থেকে বিরত থাকুন।

৩) অন্যের সংস্কৃতিকে আঘাত করে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।

সুমাইয়া জান্নাত

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com