প্রয়াগরাজে গঙ্গার জল স্নান করার উপযুক্ত নয়। সম্প্রতি জাতীয় পরিবেশ আদালতে এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনস্থ ওই পর্ষদের রিপোর্ট পাওয়ার পর উত্তরপ্রদেশ সরকারের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে তলব করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। বুধবার উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকদের ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দিয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ওই রিপোর্ট আশঙ্কা করা হয়েছে, কুম্ভমেলার সময়ে নদীর জলে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ‘ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদন অনুসারে, কেন্দ্রের রিপোর্টে বলা হয়েছে, জানুয়ারির ১২-১৩ তারিখে নদীর জল পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিম্যান্ড (বিওডি)-এর নিরিখে ওই জল স্নানের জন্য উপযুক্ত নয়। বিভিন্ন সময়ে নদীর জল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার মাত্রার দিক থেকেও তা স্নানের উপযুক্ত নয়। রিপোর্টে আশঙ্কা করা হয়েছে, কুম্ভমেলার সময়ে বিশেষ করে ‘শাহি স্নান’-এর দিনগুলিতে পুণ্যার্থীদের ভিড়ের কারণে জলে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
বস্তুত, নিকাশি বর্জ্যের থেকে জল দূষিত হচ্ছে কি না, তা বোঝা যায় জলে ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি থেকে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ নির্ধারিত অনুমিত সীমা বলছে, প্রতি ১০০ মিলিলিটার জলে সর্বাধিক ২৫০০ ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া থাকলে তা খুব বেশি ক্ষতিকর নয়। তবে প্রয়াগরাজের জলে কী পরিমাণ ফিকাল কলিফর্ম পাওয়া গিয়েছে, তা প্রকাশ্যে আসেনি।
জাতীয় পরিবেশ আদালতে বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বাধীন এজলাস ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে। বিচারপতি শ্রীবাস্তব অতীতে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। নদীতে দূষণের মাত্রা কমাতে উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কী কী পদক্ষেপ করছে, তা জানতে চায় পরিবেশ আদালত। বুধবার ভার্চুয়াল হাজিরা দিয়ে এ বিষয়ে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনকে এর আগেও একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল পরিবেশ আদালত। তবে সে রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কেবল জলের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টই আদালতে জমা করেছে। রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ফের নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত।