রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৬ অপরাহ্ন

স্ত্রী পরকীয়া করে সন্তান জন্ম দিলেও, দায়িত্ব নিতে হবে স্বামীকেই: সুপ্রিম কোর্ট

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে জন্ম নেওয়া সন্তানের আইনত বৈধ বাবা কে হবেন? ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি কেরালার একটি একটি কেসে, এই বিষয়ে নিজের পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ যদি বিবাহিত থাকাকালীন সময়ে কোনও স্ত্রী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং সেই পুরুষের থেকে তাঁর সন্তান লাভ হয়, তাহলেও সেই সন্তানের আইনত বৈধ পিতা হবেন স্বামীই।

সুপ্রিম কোর্ট জানায় কোনও সন্তানের জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে অকারণে যাতে কোনও অনুসন্ধান বা প্রশ্ন না ওঠে তাই এই নির্দেশ। কোনও স্বামী যদি সেই সন্তানের দায়িত্ব নিতে বা নিজের পিতৃত্ব অস্বীকার করতে চান, তাহলে স্বামী কে প্রমাণ করতে হবে তাঁর সঙ্গে স্ত্রী-এর কোনও 'কন্টাক্ট' বা যোগাযোগ নেই। এই ক্ষেত্রে 'নো-কন্টাক্ট'-এর সংজ্ঞাও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, সেই পুরুষকে প্রমাণ করতে হবে তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে তাঁর কোনও শারীরিক সম্পর্ক নেই।

সুপ্রিম কোর্ট জানায় কোনও সন্তানের জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে অকারণে যাতে কোনও অনুসন্ধান বা প্রশ্ন না ওঠে তাই এই নির্দেশ। কোনও স্বামী যদি সেই সন্তানের দায়িত্ব নিতে বা নিজের পিতৃত্ব অস্বীকার করতে চান, তাহলে স্বামী কে প্রমাণ করতে হবে তাঁর সঙ্গে স্ত্রী-এর কোনও ‘কন্টাক্ট’ বা যোগাযোগ নেই। এই ক্ষেত্রে ‘নো-কন্টাক্ট’-এর সংজ্ঞাও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, সেই পুরুষকে প্রমাণ করতে হবে তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে তাঁর কোনও শারীরিক সম্পর্ক নেই।

কেন হঠাৎ এই ঐতিহাসিক রায়? ঘটনার সূত্রপাত কেরালায়। ২০০১ সালে জন্ম হয় মিলান জোসেফের। সেই সময় তাঁর মা রাজু কুরিয়ান নামক ব্যাক্তির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। পরে ডিভোর্স হয়ে যায় তাঁদের মধ্যে। ২০০৭ সালে মিলান জোসেফের মা কোচিন পুরসভায় গিয়ে মিলানের পিতার নাম পরিবর্তনের আবেদন জানান। মহিলা আরও জানান যে ইভান রথিনাম আসলে মিলানের জন্মদাতা পিতা (বায়োলজিক্যাল ফাদার)। কিন্তু পুরসভা সাফ জানিয়ে দেয়, আদালতের নির্দেশ ছাড়া পিতার নাম পরিবর্তন সম্ভব নয়।

কেন হঠাৎ এই ঐতিহাসিক রায়? ঘটনার সূত্রপাত কেরালায়। ২০০১ সালে জন্ম হয় মিলান জোসেফের। সেই সময় তাঁর মা রাজু কুরিয়ান নামক ব্যাক্তির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। পরে ডিভোর্স হয়ে যায় তাঁদের মধ্যে। ২০০৭ সালে মিলান জোসেফের মা কোচিন পুরসভায় গিয়ে মিলানের পিতার নাম পরিবর্তনের আবেদন জানান। মহিলা আরও জানান যে ইভান রথিনাম আসলে মিলানের জন্মদাতা পিতা (বায়োলজিক্যাল ফাদার)। কিন্তু পুরসভা সাফ জানিয়ে দেয়, আদালতের নির্দেশ ছাড়া পিতার নাম পরিবর্তন সম্ভব নয়।

এর পরেই ওই মহিলা  ফার্স্ট অ্যাডিশনাল মুন্সিফ কোর্টে একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন। মহিলা আবেদন জানান আদালত যেন রথিনামকে মিলান জোসেফের পিতা বলে ঘোষণা করেন এবং জোসেফকে  নিজের পরিচয় দেন। এমনকি ক্রিমিনাল প্রোসিডিউর কোড ১৯৭৩এর ১২৫ নম্বর ধারা অনুসারে রথিনামের থেকে খোরপোষ দাবি করেন।

এর পরেই ওই মহিলা ফার্স্ট অ্যাডিশনাল মুন্সিফ কোর্টে একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন। মহিলা আবেদন জানান আদালত যেন রথিনামকে মিলান জোসেফের পিতা বলে ঘোষণা করেন এবং জোসেফকে নিজের পরিচয় দেন। এমনকি ক্রিমিনাল প্রোসিডিউর কোড ১৯৭৩এর ১২৫ নম্বর ধারা অনুসারে রথিনামের থেকে খোরপোষ দাবি করেন।

দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে ২০০৯ সালে আদালত রায় দিয়ে জানায়, যেহেতু সন্তানের জন্মের সময় তিনি রাজু কুরিয়ানের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন, সেই কারণে মিলন জোসেফের বৈধ পিতা হলেন কুরিয়ানই। পরবর্তী কালে সাব-জজ কোর্ট এবং ২০১১ সালে কেরালা হাই কোর্ট এই একই রায় বহাল রাখে।

দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে ২০০৯ সালে আদালত রায় দিয়ে জানায়, যেহেতু সন্তানের জন্মের সময় তিনি রাজু কুরিয়ানের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন, সেই কারণে মিলন জোসেফের বৈধ পিতা হলেন কুরিয়ানই। পরবর্তী কালে সাব-জজ কোর্ট এবং ২০১১ সালে কেরালা হাই কোর্ট এই একই রায় বহাল রাখে।

এরপরে ২০১৫ সালে আলাপ্পুঝার ফ্যামিলি কোর্টের সামনে আরও একটি পিটিশন করেন। তিনি জানান, তাঁর স্বামী রাজু কুরিয়ান তাঁকে ইতিমধ্যেই পরিত্যাগ করেছে। যেহেতু ইভান রথিনাম জোসেফের বায়োলজিক্যাল ফাদার, তাই তাঁর এবং তাঁর সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়া উচিত ইভান রথিনামেরই। ফ্যামিলি কোর্ট মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় এই বলে যে, পিতৃত্ব এবং আইনি বৈধতা দুটি পৃথক বিষয়। ২০১৮ সালে কেরালা হাই কোর্ট এই পর্যবেক্ষণ জানায়।

এরপরে ২০১৫ সালে আলাপ্পুঝার ফ্যামিলি কোর্টের সামনে আরও একটি পিটিশন করেন। তিনি জানান, তাঁর স্বামী রাজু কুরিয়ান তাঁকে ইতিমধ্যেই পরিত্যাগ করেছে। যেহেতু ইভান রথিনাম জোসেফের বায়োলজিক্যাল ফাদার, তাই তাঁর এবং তাঁর সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়া উচিত ইভান রথিনামেরই। ফ্যামিলি কোর্ট মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় এই বলে যে, পিতৃত্ব এবং আইনি বৈধতা দুটি পৃথক বিষয়। ২০১৮ সালে কেরালা হাই কোর্ট এই পর্যবেক্ষণ জানায়।

মামলা পৌঁছোয় সুপ্রিম কোর্ট অবধি। 'ভারতীয় প্রমাণ আইন, ১৮৭২'-এর ১১২ নম্বর ধারা অনুসারে সুপ্রিম কোর্ট জানায় বৈধ বিবাহ বন্ধনে থাকাকালীন জন্ম নেওয়া সন্তানের বৈধ পিতাও হবেন স্বামীই। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টই জানায়, "এমনকি যদি ডিএনএ প্রমাণ অন্য কিছু নির্দেশ করে তাহলেও পিতৃত্বের পরিচয় দেওয়ার সময় সামাজিক বৈধতাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যদি কোনও পুরুষ বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে 'নন-অ্যাক্সেস' প্রমাণ করতে পারে তবেই শিশুর পিতৃত্ব অস্বীকার করতে পারবেন।"

মামলা পৌঁছোয় সুপ্রিম কোর্ট অবধি। ‘ভারতীয় প্রমাণ আইন, ১৮৭২’-এর ১১২ নম্বর ধারা অনুসারে সুপ্রিম কোর্ট জানায় বৈধ বিবাহ বন্ধনে থাকাকালীন জন্ম নেওয়া সন্তানের বৈধ পিতাও হবেন স্বামীই। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টই জানায়, “এমনকি যদি ডিএনএ প্রমাণ অন্য কিছু নির্দেশ করে তাহলেও পিতৃত্বের পরিচয় দেওয়ার সময় সামাজিক বৈধতাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যদি কোনও পুরুষ বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ‘নন-অ্যাক্সেস’ প্রমাণ করতে পারে তবেই শিশুর পিতৃত্ব অস্বীকার করতে পারবেন।”

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং উজ্জ্বল ভূঁইয়ার বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, "একজন সন্তানের জন্মদাতা পিতা থাকতেই পারে, তবে আইন স্বামীকেই বৈধ পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই বিষয়ে আদালত রায় দিয়ে দিয়েছে, পরবর্তীতে এই নিয়ে মামলা কেবল অবিরাম আলোচনার দিকেই বিষয়টিকে টেনে নিয়ে যায়।"

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং উজ্জ্বল ভূঁইয়ার বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, “একজন সন্তানের জন্মদাতা পিতা থাকতেই পারে, তবে আইন স্বামীকেই বৈধ পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই বিষয়ে আদালত রায় দিয়ে দিয়েছে, পরবর্তীতে এই নিয়ে মামলা কেবল অবিরাম আলোচনার দিকেই বিষয়টিকে টেনে নিয়ে যায়।”

সুপ্রিম কোর্ট তাঁর চূড়ান্ত রায়ে এই বিষয়ক চারটি পর্যবেক্ষণ পেশ করে।  ১) বৈধতা পিতৃত্ব নির্ধারণ করে যদি না 'নন-অ্যাক্সেস'-এর  স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।  ২) শুধুমাত্র ডিএনএ প্রমাণই বৈধতার আইনি নিয়মকে অগ্রাহ্য করতে পারে না।  ৩) ২০১১ সালের রায় চূড়ান্ত, এই বিষয়ে আর কোনও আপিল হবে না।   ৪) ইভান রথিনামের কাছে মহিলার রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানানো মূল্যহীন কারণ জোসেফ মিলানের বৈধ পিতা হলেন রাজু কুরিয়ান।

সুপ্রিম কোর্ট তাঁর চূড়ান্ত রায়ে এই বিষয়ক চারটি পর্যবেক্ষণ পেশ করে। ১) বৈধতা পিতৃত্ব নির্ধারণ করে যদি না ‘নন-অ্যাক্সেস’-এর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। ২) শুধুমাত্র ডিএনএ প্রমাণই বৈধতার আইনি নিয়মকে অগ্রাহ্য করতে পারে না। ৩) ২০১১ সালের রায় চূড়ান্ত, এই বিষয়ে আর কোনও আপিল হবে না। ৪) ইভান রথিনামের কাছে মহিলার রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানানো মূল্যহীন কারণ জোসেফ মিলানের বৈধ পিতা হলেন রাজু কুরিয়ান।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com