শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৪ অপরাহ্ন

সোনাদিয়া দ্বীপ

  • আপডেট সময় শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩

প্রকৃতির এক স্বর্গ রাজ্য, আর ক্যাম্পিং এর জন্য অন্যতম জনপ্রিয় স্থান সোনাদিয়া দ্বীপ। যতোদূর চোখ যায় ততদূর মনে হয়  পানি আর আকাশের এক মিলনমেলা। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিমি উত্তর-পশ্চিমে এবং মহেশখালি দ্বীপের দক্ষিনে সোনাদিয়া দ্বীপটি অবস্থিত। আয়তন প্রায় ৯ বর্গ কিমি। একটি খাল দ্বারা এটি মহেশখালি দ্বীপ থেকে বিছিন্ন হয়ে গেছে। তিন দিকে সমুদ্র সৈকত, সাগর লতায় ঢাকা বালিয়াড়ি, কেয়া- নিশিন্দার ঝোপ, ছোট-বড় খাল বিশিষ্ট প্যারাবন এবং বিচিত্র প্রজাতির জলাচর পাখি দ্বীপটিকে করেছে অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত।

ম্যানগ্রোভ ও উপকূলীয় বনের সমন্বয়ে গঠিত সুন্দর এই দ্বীপটি সাগরের গাঢ় নীল জল, লাল কাঁকড়া, কেয়া বন, সামুদ্রিক পাখি সবমিলিয়ে এক ধরনের রোমাঞ্চিত পরিবেশ সমন্বয়ে সৃষ্টি। এ দ্বীপের পানি কাচস্বরূপ স্বচ্ছ ও টলটলে, যা দেখে সকল ক্লান্তি-অবসাদ এক নিমিষেই ভুলে যাবেন আপনি। সমুদ্র থেকে সৃষ্টি হয়ে ভিতরের দিকে গিয়ে নদীটি কয়েকটি শাখা প্রশাখায় ছড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে। দুপাশে রয়েছে সবুজ বনে ঘেরা রয়েছে কেওড়া, হারগোজা, উড়িঘাস এবং কালো ও সাদা বৃক্ষ। এই দ্বীপে অজস্র লাল কাঁকড়ার ছড়াছড়ি। আর কচ্ছপ এসে ডিম পাড়ে সাগর কিনারায়। আছে গাঙচিলের ভেসে বেড়ানো। এক পাশে জুড়ে আছে কেয়া বনের সারি। এ যেন কল্পনার শক্তিকেও হার মানিয়ে দেয়। বিভিন্ন অতিথি পাখি ও জলচর পাখির একটি অভয়ারণ্য হলো সোনাদিয়া দ্বীপ। এ দ্বীপকে যাযাবর পাখিদের ভূ-স্বর্গ বলা যায়। এখানে আসা পাখিদের মধ্যে রয়েছে পেট্রেল স্নাইপ, শ্যাঙ্ক, তিতির এবং নানা জাতের হাঁস।

চাঁদনী রাতে এই সোনাদিয়ার সৈকতে একটা রাত ক্যাম্পিং আর বার বি কিউ পার্টি করে দেখতে পারেন, দুনিয়াটা কত সুন্দর! মূলত জীবনের খানিকটা ক্লান্তি অবসাদ দূর করতেই মানুষ এখানে প্রকৃতির সাথে মিশে ক্যাম্পিং করতে আসে। ঘুরাঘুরি ও ক্যাম্পিং করার জন্য সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সম্পূর্ণ নিরাপদ। এই দ্বীপের যে বিষয়টি পর্যটকদের মনে সারাজীবন স্থান করতে সক্ষম সেটি হলো এখানকার চা। অত্যন্ত সাধারণ মানের হলেও এখানকার চায়ের স্বাদ কখনো ভুলবার নয়।

কিভাবে যাবেন?

কক্সবাজার কস্তূরী ঘাট থেকে স্পিড বোট বা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে তারপর যেতে হবে মহেশখালী। মহেশখালী গোরকঘাটা থেকে ঘটিভাঙা পর্যন্ত পথটুকু যেতে হবে বেবিট্যাক্সিতে করে। মহেশখালী গোরকঘাটা থেকে ঘটিভাঙার দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। সেখান থেকে আবার ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে সোনাদিয়া দ্বীপে যেতে হয়। ঘটিভাঙা নেমে খেয়ানৌকায় সোনাদিয়া চ্যানেল পার হলেই সোনাদিয়া। ভাটার সময় খালে খুব বেশি পানি থাকেনা। সোনাদিয়া যাওয়ার দুটো উপায় আছে।

হেঁটে যাওয়া অথবা জোয়ার এলে নৌকা। প্রতিদিন জোয়ারের সময় পশ্চিম সোনাদিয়া থেকে ঘটিভাঙা পর্যন্ত মাত্র একবার একটি ট্রলার ছেড়ে আসে। এই ট্রলারটিই কিছুক্ষণের মধ্যে যাত্রীদের তুলে নিয়ে আবার ফিরতি যাত্রা করে। উল্লেখ্য কক্সবাজার থেকেও সরাসরি স্পীডবোট রিজার্ভ করে সোনাদিয়া দ্বীপে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেজন্য নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা গুণতে হয়। যারা ভ্রমণকে অ্যাডভেঞ্চারময় করতে ভালোবাসেন তারা কিছু বাড়তি খরচ করে কক্সবাজার থেকে সরাসরি স্পীড বোটে করে সোনাদিয়া দ্বীপে যেতে পারেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com