বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪২ অপরাহ্ন
Uncategorized

সিঙ্গাপুর যে কারণে ধনী আছে এবং থাকবে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১

ধরা যাক মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেলবাহী জাহাজ পূর্ব এশিয়ার দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় যাবে। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম পথ পাড়ি দিতে সে জাহাজকে মালাক্কা প্রণালি দিয়ে আসতে হবে। এই জাহাজকে পুরো পথ পাড়ি দিতে হলে মাঝপথে থেমে জ্বালানি নিতেই হবে। আর সেই মাঝপথে থামার সবচেয়ে ভালো বন্দরটি হলো সিঙ্গাপুর।

স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ: সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় দলটি হলো পিপলস অ্যাকশন পার্টি। ১৯৫৪ সালে একটি ছাত্রসংগঠন থেকে স্বাধীনতাপন্থী এ দলের জন্ম হয়েছিল।

মহাপরিকল্পনা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জমির সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। এর জন্য ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছিল এবং প্রতি পাঁচ বছর পরপর সেই পরিকল্পনার কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে, তা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পর্ষদে পর্যালোচনা হতো। ধীরে ধীরে সেই মহাপরিকল্পনাকে দীর্ঘ মেয়াদে নেওয়া হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের মেধাবী তরুণদের মধ্যে অনেকেই সরকারি বৃত্তি নিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে যান। বৃত্তিপ্রাপ্তির শর্ত অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে তাঁদের দেশে ফিরে নির্দিষ্ট কয়েক বছর সরকারি চাকরি করতে হয়।

এটি একটি জাতির অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য যে কত জরুরি, তা বোঝাতে দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। সেখানে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আগের সরকারের নীতি থেকে পুরোপুরি সরে নতুন নীতি প্রবর্তন হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন ক্ষমতায় আসার পর দেশটির আগের সরকারের স্থাপিত পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নিষ্ক্রিয় করতে কয়েক বছর লেগেছে। যে শিল্প গড়ে তুলতে কয়েক দশক লেগে গেছে, তা সরকার পরিবর্তনের পর ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। রাজনৈতিক দোলাচলে দেশটিকে এ ধরনের বড় ধাক্কা খেতে হয়েছে।

অবস্থানগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত আরেক বন্দরভিত্তিক দেশ হংকংয়ে মাঝেম রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। শুধু এই অস্থিরতার কারণে তাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা বিঘ্নিত হয়।

সরকারি খাতে দক্ষ জনবল: সিঙ্গাপুরের মেধাবী তরুণদের মধ্যে অনেকেই সরকারি বৃত্তি নিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে যান। বৃত্তিপ্রাপ্তির শর্ত অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে তাঁদের দেশে ফিরে নির্দিষ্ট কয়েক বছর সরকারি চাকরি করতে হয়। এ ছাড়া দক্ষ সরকারি কর্মীদের উচ্চ বেতন দেওয়া হয়। সরকারের আর্থিক সাফল্যের অনুপাত অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের বোনাসও দেওয়া হয়। এত সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও কোনো সরকারি কর্মচারী দুর্নীতি করলে তাঁকে কঠোর সাজা দেওয়া সরকারের পক্ষে নৈতিক দিক থেকে সহজ হয়।

ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ: তুলনামূলকভাবে কম শুল্ক গ্রহণের জন্য সিঙ্গাপুরের সুনাম দুনিয়াজোড়া। এ ছাড়া বহু খাতে তারা ট্যাক্স নেয় না। লভ্যাংশ, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সম্পদ এবং উপহার–উপঢৌকন পাওয়া কোনো কিছুর ওপর সেখানে শুল্ক দিতে হয় না। সোনা-রুপার কেনাবেচায় পর্যন্ত ট্যাক্স আরোপ করা হয় না। এ বাধাহীন লেনদেনের কারণে সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।

এসব বিষয় সিঙ্গাপুরকে ধনী করেছে। যত দিন এসব নীতি আছে, তত দিন দেশটি ধনীই থাকবে বলে ধরে নেওয়া যায়।

এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত l

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com