আপনার যদি সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাজানো গোছানো শহরে ঘুরে বেড়ানোর শখ থাকে তবে সিঙ্গাপুর আপনার জন্য আদর্শ জায়গা। যদিও সিঙ্গাপুর ভ্রমণ তুলনামূলক খরুচে, কিন্তু আপনার সময়ের ১০০% সদ্ব্যহার করে একটি আনন্দদায়ক ট্রিপ নিশ্চিত করবে দেশটি- এ ব্যপারে কোন সন্দেহ নেই।
এই ব্লগটিতে আমরা আলোচনা করবো সিঙ্গাপুরের দর্শনীয় স্থান, ভিসা, বিমান টিকেট, হোটেল, খাবার, শপিং, ভ্রমণ খরচ, এবং কিছু জরুরী ভ্রমণ টিপস নিয়ে।
সিঙ্গাপুর যেতে হলে প্রথমত আপনাকে ভিসার জন্য এপ্লাই করতে হবে। ২ ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহীতাগণ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট দেখিয়ে সিঙ্গাপুর ভিসার জন্য এপ্লাই করতে পারবেন। সিঙ্গাপুরের ভিসা সম্পর্কে আরো তথ্যের জন্য এবং আমাদের ভিসা প্রসেসিং সার্ভিস গ্রহণের জন্য কল করুন +৮৮-০৯৬১৭-১১১-৮৮৮ নাম্বার এ বা ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট flightexpert.com এ।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, মালিন্দো এয়ারলাইন্স, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স, এয়ার ইন্ডিয়া, এতিহাদ এয়ারলাইন্স, থাই এয়ারওয়েজ, আর ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতিদিন ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্ট এর উদ্দেশ্যে বিমান ছাড়ছে। আমাদের মাধ্যমে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর বিমান টিকেট বুক করতে কল করতে পারেন বা ভিজিট করতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট flightexpert.com এ। ঢাকা টু সিঙ্গাপুর বিমান ভ্রমণ করতে সময় লাগে প্রায় ৭ ঘন্টা।
অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পর্যটকদের পিক সিজন চলে যদিও সিঙ্গাপুর বছরের যেকোন সময়েই ঘোরার জন্য উপযুক্ত। বাংলাদেশীদের জন্য ফেব্রুয়ারী মাসে সিঙ্গাপুর ঘুরতে যাওয়া ভালো কারণ এই সময় সবকিছুর দাম তুলনামূলক কম থাকে। এই সময় বৃষ্টি ও থাকে না আবার ট্রিপটি সাশ্রয়ী ও হয়।
সিঙ্গাপুরের অন্যতম আকর্ষনীয় ট্যুরিস্ট স্পট গার্ডেনস বাই দ্যা বে। সুবিশাল এই গার্ডেন এলাকাটি ফ্লাওয়ার ডোম, ক্লাউড ফরেস্ট, ফ্লোরাল ফ্যান্টাসি, ওসিবিসি স্কাইওয়ে, গার্ডেন পড, এবং সুপারট্রি অবজারভেটরি নিয়ে গঠিত। আসুন দেখে নেই কী কী করার আছে এই জায়গাটিতে।
ফ্লাওয়ার ডোমে পৃথিবীর প্রায় সব ফুলের দেখা পাবেন। ফ্লাওয়ার ডোমটি গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে ঠাই পেয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্লাস গ্রীনহাউজ হিসেবে।
ক্লাউড ফরেস্টে দেখা পাবেন প্রাকৃতিকভাবে তৈরি সবুজ পাহাড়ের মধ্যে অসাধারণ সুন্দর ঝর্ণার। পাহাড়ের গাছগাছালির বেশিরভাগই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগৃহীত দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ- যার মধ্যে ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ ও আছে।
ওসিবিসি স্কাইওয়েটি মাটি থেকে ২২ মিটার ওপরে অবস্থিত। ১২৮ মিটার লম্বা এই ওয়াকওয়ে থেকে আপনি গার্ডেনস বাই দ্যা বে’র ৩৬০ ডিগ্রী প্যানারমিক ভিউ পাবেন।
গার্ডেন এলাকার সর্বশেষ সংযুক্তি গার্ডেন পড। মিনিমালিস্টিক আর্কিটেকচারে তৈরি সুদৃশ্য দোতলা হোটেলটতে সবরকম আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও গেস্টদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
সুপারট্রি বলতে মূলত গার্ডেন এলাকার বিশাল বিশাল গাছ-সদৃশ কিছু স্থাপনাকে বোঝায়। এই স্থাপনাগুলোর একদম ওপরে সুপারট্রি অবজারভেটরি রয়েছে যেখান থেকে সিঙ্গাপুর সিটির সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭.৪৫ ও রাত ৮.৪৫ এ এই সুপারট্রিগুলোতে অপূর্ব মিউজিক অ্যান্ড লাইট শো হয় যা কোনভাবেই মিস করা উচিৎ হবে না। গার্ডেনের মনোরম পরিবেশে ঘাসের ওপর শুয়ে এই শো দেখার মজাই আলাদা।
***ফ্লাওয়ার ডোম ও ক্লাউড ফরেস্ট, ওসিবিসি স্কাইওয়ে, এবং সুপারট্রি অবজারভেটরিতে ঢুকতে আলাদা আলাদা এন্ট্রি ফি দিতে হবে। সন্ধ্যার মিউজিক অ্যান্ড লাইট শোটি দর্শনার্থীদের জন্য ফ্রী।
মেরিনা বে প্রতিনিধিত্ব করে আধুনিক ও জমকালো সিঙ্গাপুরকে। পার্ক, শপিং মল থেকে শুরু করে হোটেল ও বিলাসবহুল আবাসন– সবই রয়েছে মেরিনা বে তে। এটি সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বিলাসবহুল এলাকা। পর্যটকদের জন্য এখানে অনেকরকম আকর্ষণ রয়েছে।
স্টেইনলেস স্টিলে তৈরি হেলিক্স ব্রীজ সিঙ্গাপুরের অন্যতম জনপ্রিয় একটি ব্রীজ। এটি মেরিনা সেন্টারকে মেরিনা সাউথের সাথে সংযুক্ত করেছে। এই ওয়াকওয়ের মধ্য দিয়ে হেটে গেলে মেরিনা বে’র সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
মেরিনা বে তেই অবস্থিত বিশ্বখ্যাত মেরিনা বে স্যান্ডস। সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বিলাসবহুল হোটেল এই মেরিনা বে স্যান্ডস। এই হোটেলে থাকতে হলে আপনাকে গুণতে হবে কমপক্ষে ৩৫,০০০ টাকা। এখানে রয়েছে সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় ইনিফিনিটি পুল আর শপিং মল– যেখানে ইন্টারন্যাশনাল প্রায় সব ব্র্যান্ডগুলোর দোকান আছে। এছাড়াও আছে ইন্টারন্যাশনাল ফুড চেইন, রেস্টুরেন্ট, আর এর ছাদে রয়েছে একটি অসাধারণ ভিউপয়েন্ট যেখান থেকে সিঙ্গাপুরের অনেকাংশ দেখা যায়।
সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত জাদুঘর “আর্টসাইন্স মিউজিয়াম” মেরিনা বে তে অবস্থিত। পদ্মফুলের আকৃতির জাদুঘরটিতে প্রযুক্তি ও শৈল্পিক দক্ষতার অপূর্ব মিশেলে তৈরি নানারকম শিল্পকলা প্রদর্শিত হয়।
মেরিনা বে’র তীরে অবস্থিত মারলিওন পার্কে রয়েছে বিখ্যাত মারলিওন ভাস্কর্যটি। ভাস্কর্যটির ওপরের অংশ সিংহ আর নিচের অংশ মাছ আকৃতির। এটি সিঙ্গাপুরের অতীতকে নির্দেশ করে। অতীতে সিঙ্গাপুরের মানুষের প্রধান জীবিকা ছিলো মাছ ধরা। আর সিঙ্গাপুর নামটি এসেছে সংস্কৃত সিঙ্গাপুরা শব্দ থেকে যার অর্থ “সিংহের শহর”।
*** জাদুঘরে ঢুকতে হলে টিকেট কেটে ঢুকতে হবে। বাকি জায়গাগুলোতে এন্ট্রি ফ্রী।
সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্ট এর সৌন্দর্য্যের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। চাঙ্গি এয়ারপোর্টের অনন্য স্থাপত্যশৈলী একে অন্য সব এয়ারপোর্ট থেকে আলাদা করেছে। পুরো এয়ারপোর্টটি তৈরি করতে সিঙ্গাপুর সরকারের খরচ হয়েছে ১.৫ বিলিওন ডলার। এতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু অভ্যন্তরীণ জলপ্রপাত ও তাকে কেন্দ্র করে পাহাড় ও গাছগাছালির সমাবেশে অপূর্ব সুন্দর একটি পার্ক, পার্কের ওপর দিয়ে ছুটে চলা স্কাইট্রেন, বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের দোকান, ফুড চেইন, মুভি থিয়েটার, সানফ্লাওয়ার গার্ডেন, গেম রুম, জিমসহ অনেককিছু। আসুন দেখি কী কী করবেন এখানে গিয়েঃ
চাঙ্গি এয়ারপোর্টের ফরেস্ট ভ্যালী ও রেইন ভরটেক্স জলপ্রপাতটি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে জুয়েল চাঙ্গিতে। অবশ্যই ইমিগ্রেশনের আগে যেতে হবে। ইমিগ্রেশন হয়ে গেলে আপনাকে আর ঢুকতে দেয়া হবে না। অসাধারণ সুন্দর কৃত্রিম এই জলপ্রপাতটি নির্মাণ করতে ১.৩ বিলিওন ডলার খরচ হয়েছে। জলপ্রপাতের লাইট শো দেখতে চাইলে সন্ধ্যা ৭.৩০ থেকে ১১.৩০ এর মধ্যে যেতে হবে। অসাধারণ লাইট ও মিউজিক শোটি মিস করবেন না।
জলপ্রপাত ছাড়াও পর্যটকদের সময় কাটানোর জন্য হেজের গোলকধাঁধা, আয়নার গোলকধাঁধা এবং ক্যানোপি পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। জলপ্রপাত দেখা শেষ করে ঘুরে আসতে পারেন এগুলো থেকেও।
***জুয়েল চাঙ্গিতে এন্ট্রি ফ্রী। ক্যানোপি পার্ক ও গোলকধাধায় ঢুকতে হলে টিকেট কেটে ঢুকতে হবে।
সেন্তোসা দ্বীপ সিঙ্গাপুরের অন্যতম পর্যটক এলাকা। বিনোদনের সব মাধ্যম রয়েছে এখানে। মনোরেলে চেপে চলে আসতে হবে এই দ্বীপে। সেন্তোসা দ্বীপে রয়েছে জাদুঘর, একুয়ারিয়াম, প্রাইভেট রিসোর্ট, বিনোদনমূলক পার্ক যেখানে রয়েছে মজাদার রাইড, আরো রয়েছে সমুদ্রসৈকত ও চারপাশের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য।
সেন্তোসা দ্বীপের ইউনিভার্সাল স্টুডিওস পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষন। এখানে পাবেন বিভিন্ন মুভি থিমের রাইডে চড়ার সুযোগ। আরো আছে অনেক অনেক রেস্টুরেন্ট যেখানে আপনি দুপুরের লাঞ্চ সেরে নিতে পারবেন।
সেন্তোসার সমুদ্রসৈকতগুলো মনুষ্য-নির্মিত কৃত্রিম সৈকত। ৩টি সৈকত আছে সেন্তোসায়। সৈকতের পাড়ে বসে হাওয়া খেতে পারেন আর উপভোগ করতে পারেন এর আশেপাশের পরিবেশ। সাঁতারের জন্য এই সৈকতগুলো খুব একটা উপযোগী নয়।
এছাড়াও সেন্তোসা আইল্যান্ডে রয়েছে বিশ্বখ্যাত মোমের মূর্তির জাদুঘর মাদাম ত্যুসো। টিকেট কেটে ভেতরে ঢুকে দেখে আসতে পারেন বিভন্ন দেশের নামকরা মানুষের মোমের তৈরি মূর্তি।
আরো আছে ৪ডি সিনেমা হল, কেবল কার রাইড, বোট রাইড, বাঞ্জি জাম্পিং, একুয়ারিয়াম আর ওয়াটারপার্ক।
***শুধুমাত্র সেন্তোসা দ্বীপে এন্ট্রি ফ্রী। বাকি সবগুলো জায়গায় টিকেট কেটে ঢুকতে হবে।
সিঙ্গাপুরের কয়েকটি পাড়া বিখ্যাত তাদের সাংস্কৃতিক, জাতিগত বৈচিত্র্য ও মজাদার খাবারের জন্য। যেমনঃ হাজি লেন, আরব স্ট্রিট, চায়না টাউন ও লিটল ইন্ডিয়া। এই পাড়াগুলোর রাস্তাঘাট সবসময় প্রাণবন্ত হয়ে থাকে এলাকার মানুষ ও পর্যটকদের পদচারণায়। রাস্তা দিয়ে হাটলে চোখে পড়ে দুই পাশে সারি সারি খাবারের দোকান, ক্যাফে আর বুটিক শপ। আর কিছু দূর পর পর দেয়ালে দেয়ালে দেখা যায় রঙবেরঙের গ্রাফিত্তি। চোখজুড়ানো ইন্সটাগ্রামেবল জায়গা এগুলো।
এই জায়গাগুলো ছাড়াও সিঙ্গাপুরে ঘুরে বেড়ানোর মতো অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে যেমন সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানা, সিঙ্গাপুর বোটানিক গার্ডেনস, ফোর্ট ক্যানিং পার্ক, হ পার ভিলা, ইত্যাদি। এর মধ্যে বোটানিক গার্ডেনস আর সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
সিঙ্গাপুর অত্যন্ত ব্য্যবহুল একটি জায়গা। এখানে ভালো হোটেলগুলোতে এক রাত থাকার জন্যে আপনাকে অনেক খরচ করতে হবে। তাই সিঙ্গাপুর গেলে লোয়ার মিডল রেঞ্জের হোটেলে থাকাই ভালো। এ ধরণের হোটেল আপনি সব জাগাতেই পাবেন। তবে বাংলাদেশ থেকে পর্যটকরা সিঙ্গাপুর গিয়ে সাধারনত লিটল ইন্ডিয়ার আশেপাশের মিডল বা লোয়ার মিডল রেঞ্জের হোটেলগুলায় থাকতে পছন্দ করেন। লিটল ইন্ডিয়ায় প্রচুর বাঙালি রয়েছে। এখানের অধিকাংশ দোকানে বাঙালিদের দেখা পাওয়া যায়। আর এর আশেপাশেই রয়েছে সাশ্রয়ী কিছু শপিং মল যেখান থেকে কেনাকাটা করতেও সুবিধা কারণ হোটেল থেকে একদম হাঁটা দুরত্বে পড়ে শপিং মলগুলো।
লিটল ইন্ডিয়ার মিড রেঞ্জের একটি হোটেলের এক রাতের ভাড়া পড়বে ৪,০০০-৫,০০০ টাকার মধ্যে।
এছাড়াও এখানে সিঙ্গাপুরের মিডল রেঞ্জের হোটেলের নাম দেয়া হলোঃ
সিঙ্গাপুর ঘুরতে গিয়ে অবশ্যই ওদের লোকাল ফুড ট্রাই করে দেখবেন। সিঙ্গাপুরের লোকাল ফুড খেতে বেশ মজা আর দামেও কম। লোকাল ফুডের জন্য ম্যাক্সওয়েল ফুড সেন্টারে যেতে পারেন। ওখানকার চিকেন রাইসের স্বাদ নিতে ভুলবেন না। এছাড়াও সিঙ্গাপুরের অলিতে-গলিতে স্ট্রিট ফুড পাওয়া যায়। হাজি লেন, আরব স্ট্রিট আর লিটল ইন্ডিয়া তে পাবেন দেশ বিদেশের জিভে জল আনা খাবার।
সিঙ্গাপুরের লোকালদের কাছে হকার বা স্ট্রিট ফুডগুলো খুব জনপ্রিয়। এগুলোতে পাবেন চাওমিন, চাইনিজ নুডলস স্যুপ, রামেন, পোরিজ, হক্কিয়েন নুডলস, সীফুড বিবিকিউ, ইত্যাদি নানারকম খাবার। আর যদি নতুন কিছু ট্রাই না করে ইন্টারন্যাশনাল ফুড চেইনগুলোয় সাশ্রয়ী খাবার খেতে চান তাহলে ম্যাকডোনাল্ডস, কেএফসি তো আছেই!
আমাদের সিঙ্গাপুর ভ্রমণ গাইড অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে যদি আমরা সিঙ্গাপুরের শপিং এক্সপিরিয়েন্স নিয়ে কথা না বলি। সিঙ্গাপুরে বাজেট শপিং মল যেমন আছে তেমনি আছে লাক্সারিয়াস মল ও যেখানে শুধু ব্র্যান্ড এর জিনিস পাওয়া যায়।
সেরকমই একটি জায়গা মেরিনা বে স্যান্ডস এর শপিং মলটি। এখানে রয়েছে বিশ্বের সেরা সব ব্র্যান্ড এর রিটেইল শপ। দাম আকাশচুম্বী। তাই কেনাকাটা না করে বরং ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই মলটি ঘুরে দেখতে পারেন। পর্যটকদের বিনোদন দেয়ার জন্য অনেক কিছু আছে এই মল এ।
বাজেট শপিং মলগুলো প্রধানত লিটল ইন্ডিয়া ও এর আশেপাশের এলাকায় অবস্থিত। এর মধ্যে অরচার্ড রোডের লাকি প্লাজা উল্লেখযোগ্য। চকোলেট ও স্যুভেনির সবচেয়ে কম দামে এখানকার “ফায়ার সেল শপ” নামের দোকানে পাবেন। এখানে জামাকাপড়ের দাম ও অনেক কম। এছাড়াও আছে মোস্তফা মার্ট। মোস্তফা মার্টেও সবকিছুর দাম রিজনেবলের মধ্যে।
এছাড়া আছে চায়নাটাউনের প্যাগোডা স্ট্রিট। এখানেও স্বল্প মূল্যে দরকারি সবকিছু পাবেন। বুগিস স্ট্রিট মার্কেট এর রাস্তার একপাশে দেখবেন খাবারের দোকান আরেক পাশে জামাকাপড়ের। খেতে খেতে দোকানগুলোতে ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন।
সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে এই প্রশ্নের উত্তর আমরা নিচে দেয়ার চেষ্টা করেছিঃ
রিটার্ন প্লেন টিকেট – ৪০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা (জনপ্রতি)
রুম ভাড়া – ৫,০০০ টাকা (এক রাত)
সিম কার্ড ক্রয় – ১,০০০ টাকা
সিঙ্গাপুর ট্যুরিস্ট পাস ক্রয় – ২০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার
খাবার – ৫০০ টাকা (প্রতি বেলা)
টিকেট – সব মিলিয়ে ৪,০০০ টাকার মতো (জনপ্রতি)
এসকেলেটরে চড়লে ডান দিকে দাঁড়াবেন না। ডান দিক বরাদ্দ থাকে যাদের তাড়া আছে তাদের জন্য। তাড়া না থাকলে বাম দিকে দাঁড়ান।
পাবলিক ট্রান্সপোর্টের (বাস বা এম আর টি) রিজার্ভড সীটে বসবেন না।
এম আর টি তে ঢোকা ও বের হওয়ার সময় কার্ড (সিঙ্গাপুর ট্যুরিস্ট পাস) ট্যাপ করতে ভুলবেন না। অন্যথায় ৫০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার ফাইন গুণতে হবে।
এম আর টি বা বাসে চড়ে কিছু খাবেন না বা পান করবেন না। অন্যথায় ৫০০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার ফাইন গুণতে হবে।
পাবলিক প্লেসে চুইঙ্গাম চাবানো ও ধুমপান করা সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ। অন্যহায় ১০০০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার ফাইন গুণতে হবে।
পাবলিক প্রপার্টি অযাচিতভাবে নষ্ট বা ভাংচুর করলে ২,০০০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার ফাইন গুণতে হবে।
যত্রতত্র ময়লা ফেলা নিষেধ। সিঙ্গাপুর খুবই পরিচ্ছন্ন দেশ। যেখানে সেখানে ময়লা ফেললে ১,০০০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার ফাইন গুণতে হবে।
কবুতর, পাখি, বানর, কুকুর, বিড়ালকে খাবার দিবেন না। অন্যথায় ৫০০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার ফাইন গুণতে হবে।
আশা করি এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা আপনার সিঙ্গাপুর ভ্রমণ সংক্রান্ত সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। ঢাকা টু সিঙ্গাপুর বিমান ভাড়া সম্পর্কে জানতে বা ফ্লাইট বুকিং অথবা ভিসা সংক্রান্ত যেকোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কল করতে পারেন +৮৮ ০৯৬১৭ ১১১ ৮৮৮ নাম্বারে বা ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট flighexpert.com. অথবা, আমাদের ইমেইল করে পারেন [email protected] এ।