সাবরাং ইকো ট্যুরিজম পার্ক

সাবরাংয়ে একটি ইকো ট্যুরিজম পার্ক স্থাপনের জন্য ১২টি কোম্পানির বিনিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। দেশের প্রথম পর্যটন নির্ভর অঞ্চল সাবরাং ইকো ট্যুরিজম পার্ক গড়ে উঠছে। পরিকল্পিত এই আধুনিক পর্যটন পার্কে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে দেশি বিদেশি উদ্যোক্তরা। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বা বেজার কাছে বেশ কিছু বিনিয়োগ প্রস্তাব জমা পড়েছে। এগুলো পর্যালোচনা করে বেজা কর্তৃপক্ষ ১২টি কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে।

কোম্পানিগুলো সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে পাচ তারকা মানের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট এবং এমিউজমেন্ট পার্ক নির্মান করবে। প্রস্তাব অনুযায়ী প্রায় সাড়ে ২৪ কোটি ডলার বা ২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে।

বেজা জানায়, পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য ১ হাজার ৪৭ একর আয়তনের এই জায়গায় অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা রেখে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া মাত্র ১২টি কম্পানি ১১৬ একর জায়গায় বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান শুরু করবে। এখানে ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। নেদারল্যান্ডের একটি কোম্পানি এই হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট নির্মান করবে।

এছাড়া দেশি কোম্পানি যারা বিনিয়োগের অনুমোদন পেয়েছে তারা হলো হোয়াইট অরকিট গেস্ট হাউজ, মুনলাইট ওভারসিজ, বিসিএস মাল্টিপারপাস ওয়েলফেয়ার কো-অপারেশন সোসাইটি, ডাটা সফ্ট বিডি, প্রজেক্ট প্রমো নিট প্লাস, বায়োটিক প্রিন্টিং প্লাস, ইফাদ অটোজ, ইফাদ মোটর, দি কক্স টু ডে, সুইট ড্রিম ম্যানেজমেন্ট, সানসেট বে বিনিয়োগের অনুমোদন পেয়েছে।

বেজা মাটি ভরাটসহ রাস্তা ও কালভার্ট নির্মান এবং এলাকাটির উন্নয়নে অবকাঠামো নির্মান করছে। দো হুয়া কনসালটেন্ট যৌথভাবে মহাপরিকল্পনায় খসড়া প্রনয়ন করেছে। এটি হবে বাংলাদেশের সবচাইতে সুন্দর একটি ইকো পার্ক। পার্কটি টেকনাফ শহর থেকে প্রায় ৮ কি.মি এবং কক্সবাজার বিমান বন্দর থেকে গাড়িতে মাত্র ২ ঘন্টার দূরত্বে এবং ঢাকা থেকে ৪৫০ কি.মি দূরত্ব।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষন করার জন্য এবং প্রাকৃতিক বৈচিত্র মাথায় রেখে এই পার্কটি নির্মান হচ্ছে। এখানে বাধ ও সুইচ গেট নির্মান করা হয়েছে। খুব শীগ্রই মাটি ভরাট করে বিনিয়োগকারীদের জমি হস্তান্তর করা হবে। বেজা প্লট হস্তান্তর করলে নকশা অনুমোদনের জন্য দেওয়া হবে। নকশা অনুমোদনের পর দ্রæত নির্মান কাজ শুরু হবে।

জীব-বৈচিত্র সংরক্ষন করেই দ্বীপটিতেই ইকো ট্যুরিজম পার্ক করা হবে। দেশীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিয়েই সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক নির্মান করা হবে। দ্বীপটির মাত্র ৩০ শতাংশ জায়গায় গড়ে উঠবে পার্ক ও হোটেল। ৩০ একর জায়গায় করা হবে শপিং সেন্টার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, এম পি থিয়েটার ও কনভেনশন হল, এমিউজমেন্ট পার্ক। ২০ একর জায়গায় হবে প্রশাসনিক ভবন, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র। ২৬ একর জায়গায় পয়ঃবর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট, কঠিন বর্জ্য ও ই বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট, পাওয়ার প্ল্যান্ট, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, পানি পরিশোধন ও সংরক্ষনাগার, সোলার প্লান্ট এবং বায়োগ্যাস প্লান্ট করা হবে। ১৩ একর জায়গায় ওয়েলফেয়ার সেন্টার, ৮ একর জায়গায় বাস ডিপো, ট্রান্সপোর্টেশন হাব, হ্যালি প্যাড এবং জেটি স্থাপন করা হবে। ৫৪ একর জায়গায় রাস্তা হাটা পথ এবং বাইসাইকেল লেনের জন্য রাখা হবে। ৫২৮ একর জায়গায় ঝাউগাছ লাগিয়ে দৃষ্টিনন্দন করা হবে।

আগামী ৫ বছরে সাবরাং ইকো ট্যুরিজম পার্কটি নির্মিত হলে দেশি বিদেশি পর্যটকদের সবধরনের চাহিদা পূরন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: