আমি সমুদ্র ভীষণ ভালোবাসি। সেই নোনাপানির হাওয়া পছন্দ করা মানুষ এসে পড়েছি কানাডার রকি পর্বতমালার পায়ের কাছের শহর ক্যালগেরিতে। বেড়াতে বের হলেই দেখা যায় পাহাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। হয়তো গাড়ির মিউজিক সিস্টেমে অঞ্জন দত্ত গাইছেন, খাদের ধারের রেলিংটা। আমি কখনো দার্জিলিং যাইনি, কিন্তু কল্পনায় আমি ব্যানফের পাহাড়গুলোকেই দার্জিলিং ভেবে নিই।
ফ্লোরিডার সমুদ্র সৈকতে যখন চোখ বন্ধ করে দাঁড়ালাম আর পায়ের নিচ থেকে পানি এসে সরসর করে বালু সরিয়ে নিয়ে গেল, আমার মনে হল আমি বঙ্গোপসাগরের সৈকতে দাঁড়িয়ে আছি। কলাতলী বিচের ধারে। ওখানে বড় পাথর থাকলে হয়তো ইনানি সমুদ্র সৈকত মনে হতো। সমুদ্র বরাবরই আমাকে টানে। সাগরের বিশালতার সামনে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে স্মৃতিকাতরতা আঁকড়ে ধরে মন।
ভোররাতে ভালুকের গর্জন আর মাঝরাতে তাঁবুর পাশ দিয়ে শেয়ালের দৌড়ে যাওয়ার শব্দ এখনো কানে বাজে। ভ্রমণের অভিজ্ঞতাগুলো লেখালেখিকে ঋদ্ধ করে। ভ্রমণে গেলে আরেকটা ব্যাপার চমৎকার কার। এখনো পাহাড়ের অনেক জায়গায় নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। একেবারে ফোন–ইন্টারনেট ছাড়া দিন যাপন। হয়তো শিশির পড়ার টুপটাপ শব্দ ভোররাতে শুনি। ঠিক সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে আরও অনেক প্রশান্তি নিয়ে ফেরত আসি।
প্রকৃতি আমাদের উদারতা শেখায়। কত অচেনা মানুষের দেখা মেলে এসব ভ্রমণে। প্রতিটি ভ্রমণ শেষে কিছু স্মৃতি যে সঙ্গে করে নিয়ে আসি, তেমন কিন্তু নয়। আমার মনে হয়, আমরা নিজেদের একটি অংশ সেখানে ছেড়ে আসি। আর সে কারণেই ওই সব জায়গা আমাদের বারবার করে টানে।